• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
সর্বশেষ আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ: শামীম ও জয়ের কৃতিত্বে চাঁদপুরবাসি গর্বিত

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ॥
শামীম ও জয়ের কৃতিত্বে গর্বিত চাঁদপুরবাসি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে অংশ নেয়া শামীম পাটোয়ারী ও মাহমুদুল হাসান জয়ের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। শামীমের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়ায় ও মাহমুদুলের বাড়ি একই উপজেলার রামপুর এলাকায়।

প্রথমবারেরমত বিশ্বকাপ জয়ে চাঁদপুর থেকে অংশ নেয়া শামীম ও মাহমুদুলের জন্য পুরো চাঁদপুর জুড়ে আনন্দের বন্যা বইছে। তাদের বাবা-মা, ভাই ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, ক্লেমন চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমির কোচ ও শিক্ষানবিশ ক্রিকেটারবৃন্দ এবং চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার লোকজন খুশিতে আত্মহারা। এখন অপেক্ষায় আছে কখন এই কৃতি ক্রিকেটার চাঁদপুর আসবেন। তাদের এই জয়ে চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জে পৃথক সংবর্ধনাসহ নানা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

ক্লেমন চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমির কোচ শামীম ফারুকী তাঁর এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ১৪জনের দলে আমার দু’ছাত্র শামীম পাটোয়ারী ও মাহমুদুল হাসান জয় অংশ নেয়ায় আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি। আমি আশাবাদী আগামীতে তারা জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন এবং চাঁদপুর তথা দেশের ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তবে তিনি বলেন, শামীম পাটোয়ারী ছিলেন অসাধারণ মেধাবী (ন্যাচারাল টেলেন্ট ) খেলোয়াড়। এবং মাহমুদুল হাসান জয় ছিলেন দারুন পরিশ্রমি খেলোয়াড়। তারা আমার কাছে স্কুলে পড়াকালীন সময় আসার পর দু বছর প্রশিক্ষণ নেন। পরে তারা বিকেএসপিতে সুযোগ পান।

চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, এই বিজয় ক্লেমন চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমির কোচ শামীম ফারুকীর কৃতিত্ব। তবে আমি একজন জাতীয় ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে গর্বিত। কারণ এই ভাষার মাসে মুজিব শতবর্ষ শামীম ও জয় আমাদের চাঁদপুরের সুনাম ছড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটা ইতিহাস তৈরী করেছেন। এ জন্য আমি চাঁদপুরবাসীর তথা জেলা ক্রীড়াঙ্গনের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ ও ধন্যবাদ জানাই।

মাহমুদুল হাসান জয়ের বাবা ও মা

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া আ. রহমান পাটোয়ারী বাড়ি ছেলে শামীম পাটোয়ারী। তার বাবা আব্দুল হামিদ পাটোয়ারী এক সময় ঠিকাদারী করতেন। এখন বয়সের কারণে বাড়িতেই থাকেন বেশির ভাগ। গত রোববার রাতে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলায় ছেলে অংশ নেয়ায় পুরো খেলাটি দেখেন। তিনি খুশিতে কান্নায় বলেন, আমি আজ খুবই খুশি । কারণ ছেলেকে স্কুল পাঠাতাম। কিন্তু সে স্কুলে না গিয়ে শুধু খেলাধূলা নিয়ে এদিক সেদিক চলে যেত। আজ বুঝতে পারলাম সে গিয়ে ভালই করেছে । আমাদের সম্মান বাড়িয়ে দিয়েছে।

শামীমের মা রিনা বেগম বলেন, আমি ছেলের খেলা দেখে শুধু দোয়া করেছি। সে এবং তার দল যেন জয়লাভ করতে পারে। শামীমের ছোট চাচা সিঙ্গাপুর প্রবাসী আবুল হোসেন বলেন, তার খেলার জন্য আমি অনেক শাসন করেছি। কিন্তু লেখাপড়া রেখে খেলতে মাঠে বিভিন্ন গ্রামেগঞ্জে গিয়ে ক্রিকেট নিয়ে পড়ে থাকতো। তখন সে মাত্র ৯ম শ্রেণিতে পড়তো। তাকে আমরা চাঁদপুরের ক্লেমেন ক্রিকেট একাডেমিতে দিয়ে দিই।

ধানুয়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামীম গাজী বলেন, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ অংশ নেয়ায় শামীম পাটোয়ারী পড়া লেখার চেয়ে আমাদের স্কুলে সব ধরনের খেলায় অংশ নিয়ে থাকতো। আমরাও তাকে খেলাধুলায় সব সময় আগ্রহ দেখিয়েছি। আর এখন সে দেশের ও আমাদের মর্যাদা রেখেছে। পরিবারের চার ভাই বোনের মধ্যে শামীম সবার ছোট।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার রামপুর বাজার সংলগ্ন মাহমুদুল হাসান জয়ের বাড়ি। তার বাবা আব্দুল বারেক চাঁদপুর পূবালী ব্যাংক নতুন বাজার শাখার সিনিয়র অফিসার । তার তিন ছেলের মধ্যে মাহমুদুল দ্বিতীয়।

শামীম পাটোয়ারী’র বাবা ও মা।

তিনি বলেন, মাহমুদুল রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ট শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় খেলাধুলায় খুব বেশি আগ্রহ দেখতাম। প্রতিটি খেলায় প্রথম পুরস্কার নিয়ে আসতো। যখন দেখলাম ক্রিকেটের খুব ভাল করছে তখন তাকে চাঁদপুর ক্লেমেন ক্রিকেট একাডেমিতে এনে ভর্তি করে দেই। তখন তাকে আর তার মাকে শহরে একটি বাসা ভাড়া করে রাখি। টানা দু বছর সেখানে কোচ শামীম ফারুকী স্যারের কাছে প্রশিক্ষণ শেষে তার এক চাচা সেনাবাহিনীর অফিসার তাকে বিকেএসপিতে নিয়ে ভর্তি করায়। আজকে সে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে অংশ নিয়ে সবার মান রক্ষা করেছে। আমরা এজন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আগামীতে সে যেন আরও ভাল করতে পারে এই দোয়া কামনা করছি।

মাহমুদুলের মা হাসিনা বেগম বলেন, আমি সবার কাছে অনুরোধ করবো আমার ছেলে যেন জাতীয় দলে যেতে পারে। আরও ভাল করতে পারে এ জন্য সবাই দোয়া করবেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমন বলেন, ফরিদগঞ্জ তথা চাঁদপুরের সুনাম বয়ে এনেছেন আমার ফরিদগঞ্জের শামীম ও মাহমুদুল। তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা রইল। আমরা তাদের নিয়ে আনন্দ আয়োজন ব্যবস্থা করছি।

চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, আমরা চাঁদপুরের কৃতি দুই ক্রিকেটারের আসার অপেক্ষায় আছি। তারা আসলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • খেলাধুলা এর আরও খবর
error: Content is protected !!