ক্রীড়া ডেস্ক:
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে নিয়মিত মূল একাদশে খেলছেন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার মেহেদী হাসান রানা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিপিএল-এর ৩৩ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেহেদী হাসান রানা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খেলেছেন ৭টি ম্যাচ। আর এ ৭টি ম্যাচ খেলেই এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বর্োচ্চ উইকেটের শিকার তার দখলেই। তিনি ৪ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে খুলনার সাথে ৩ উইকেট পেয়ে ১৭টি উইকেট শিকার করেন। তার বোলিং তোপের মুখে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারছেন না। তাকে নিয়ে বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা ভালো একজন বোলার হিসেবে স্বপ্ন দেখছেন নতুন করে। ২২ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার বিপিএলের সকল দলের খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, ক্রীড়ামোদী দর্শক, খেলার ধারাভাষ্যকারসহ সকলের মন জয় করে নিয়েছেন। তার ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয় চাঁদপুর ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমির মাধ্যমে। একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ক্রিকেট কোচ শামিম ফারুকীর মাধ্যমে তিনি ক্রিকেটের যাত্রা শুরু করেন।
চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল হকের ছেলে রানা। তাঁর বাবা সেনাবাহনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকতা। দু’ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বর্তমানে তারা ঢাকার উত্তরায় বসবাস করেন। চাঁদপুর স্টেডিয়ামে তিনি এক সময় কচুয়ার হয়ে ফুটবলও খেলেছেন। আর স্কুল-ক্রিকেট সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন। শনিবারের ম্যাচেও তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন।
বাংলাদেশ বিপিএলে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন দেশের অনেক খ্যাতিমান তারকা ক্রিকেটাররা খেলছেন। শুরুতে মেহেদীকে তেমন কোনো দল নেয়নি। তবে তার লক্ষ্য ছিলো যদি ভালো দল পায় তাহলে তিনি ভালো কিছু করবেন। শেষে তাকে দলে ভিড়ায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এ ক্ষেত্রে মাহমুহউল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েসের অবদান ছিলো বেশি। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি মেহেদীকে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দলটিও তার ওপর আস্থা রেখেছিলো। তাদের এই আস্থার প্রতিদানও দিয়ে যাচ্ছেন রানা। চলমান বিপিএলে শনিবার পর্যন্ত সেরা বোলারের আসন অলঙ্কৃত করে রেখেছেন তিনি। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে এ পর্যন্ত তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন তিনবার।
একসময় তার সাথের চাঁদপুরের ক্রিকেটার ফজলে রাব্বির সাথে শনিবার রাতে মুঠোফোনে মেহেদীর বোলিংয়ের পরিসংখ্যান জানতে চাওয়া হয় চাঁদপুর কণ্ঠের পক্ষ থেকে। রাব্বি জানান, মেহেদী এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ৭টি ম্যাচ খেলেছেন। ৭টি ম্যাচে বোল করেছেন ২৭ ওভার। আর বোলিংয়ে ৪টি মেডেনসহ ১৮০ রানের বিনিময়ে রানা দখল করে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। বিপিএলে মেহেদীর পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কার্টার বোলার মোস্তাফিজুর রহমান। অবশ্য মেহেদী হাসান রানার একজন ভালো বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান। আর ১২টি উইকেট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বোলার শহিদুল।
মেহেদী হাসান রানার সম্পর্কে তাঁর প্রিয় কোচ চাঁদপুরের শামিম ফারুকী বলেন, মেহেদীর এমন পারফরমেন্সে আমি খুব খুশি। ওর সাথে আমার নিয়মিত কথা হয়। খেলার আগে এবং খেলার পর ও আমাকে কল দেয়। আমি ওকে একটা কথাই বলি যে, এখন খেলা চলছে সকল কিছু বাদ দিয়ে খেলার প্রতি মনোযোগী হওয়ার জন্যে। আর মাঠে বোলিং করতে নামলে লক্ষ্য রাখতে যে প্রতিটি বলেই তাকে ভালো মতো করতে হবে। রান চেক দিয়ে দলের জয়সহ উইকেটও নিতে হবে। তবে আমি বিশ্বাস করি ও যেভাবে বিপিএলে বোলিং করে যাচ্ছে, আশাকরি টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলতে দেখবো। এজন্য আমি রানার জন্যে সকলের দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করি।