উচ্চ রক্তচাপে কতদিন ওষুধ খাবেন

  • আপডেট: ০৬:৪৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০১৯
  • ৪১

notunerkotha deskঃ

অনেকেই প্রেসারের ওষুধ শুরু করতে দ্বিধা করেন এই ভেবে যে, ওষুধ শুরু করলে তো বন্ধ করা যাবে না। তাই যত দেরিতে শুরু করা যায় তত ভালো। এটি একটি বদ্ধমূল ভুল ধারণা। মূল কথা হলো প্রেসার সীমার মধ্যে রাখতে হবে, নইলে ভাইটাল অরগ্যানগুলো নষ্ট হবে। তাই জীবনাচরণ পরিবর্তন (lifestyle modification) করার পরেও যদি প্রেসার সীমার মধ্যে না আসে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওষুধ শুরু করতে হবে এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য তা চালিয়ে যেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় বিশেষ সতর্কতা : প্রজননক্ষম মহিলাদের ক্ষেত্রে উচ্চরক্তচাপের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যাদের গর্ভধারণের আগেই হাই প্রেসার ধরা পড়ে তাদের বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সব ধরনের ওষুধ গর্ভধারণে ইচ্ছুক মহিলাদের দেওয়া যাবে না। কারণ কিছু কিছু ওষুধ গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি করতে পারে। তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করে সন্তানধারণ করতে হবে। গর্ভে সন্তান এলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চেকআপ করিয়ে সঠিক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। তবে প্রেসার সব সময় ১৩০/৮০-এর নিচে রাখতে হবে। একবার ওষুধ শুরু করলে মাসে মাসে চেকআপ করিয়ে ডোজ সমন্বয় করতে হবে। মনে রাখা দরকার যে, উচ্চরক্তচাপের সঙ্গে একলামসিয়া, প্রি-একলামসিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

এছাড়া আমাদের দেশে উচ্চ মাতৃমৃত্যু এবং নবজাতক মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হলো একলামসিয়া/প্রিএকলামসিয়া।

ওষুধ বন্ধ করবেন কখন : সাধারণভাবে প্রেসারের ওষুধ অনির্দিষ্টকালের জন্য খেয়ে যেতে হবে। তবে কোনো কোনো সময় সাময়িকভাবে ওষুধ বন্ধ রাখতে হতে পারে। যেমন হঠাৎ বমি পাতলা পায়খানা শুরু হলে এমনিতেই প্রেসার কমে যায়। জ্বর হলেও প্রেসার কমে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে প্রেসার পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। চিকিৎসক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওষুধ সাময়িক বন্ধ রেখে বা মাত্রা কমিয়ে দিতে পারেন এবং যত দ্রুত সম্ভব তা আবার শুরু করার নির্দেশ দেবেন।

ফলোআপ কখন করবেন : ওষুধ শুরু করার প্রথমদিকে একটু ঘনঘন ফলোআপ দরকার হবে। ওষুধ কার্যকর হচ্ছে কিনা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা এগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। একবার সবকিছু ঠিকঠাক মতো চললে তিন মাস ছয় মাস পরপর ফলোআপ করতে হবে। ফলোআপের সময় রক্তের creatinine, electrolytes, sugar, cholesterols ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিলে ভালো। বছরে একবার ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম করে নিতে হবে। এসব পরীক্ষায় কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে চিকিৎসক তা ঠিকঠাক করে দিবেন। তাই উচ্চরক্তচাপ নিয়ে সতর্ক হতে হবে।

লেখক:  সিনিয়র কনসালটেন্ট, কার্ডিওলজিস্ট ও সিসিইউ ইন-চার্জ, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

দেশে HMPV ভাইরাসে আক্রান্ত নারীর মৃত্যু, বাড়ছে আতঙ্ক

উচ্চ রক্তচাপে কতদিন ওষুধ খাবেন

আপডেট: ০৬:৪৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০১৯

notunerkotha deskঃ

অনেকেই প্রেসারের ওষুধ শুরু করতে দ্বিধা করেন এই ভেবে যে, ওষুধ শুরু করলে তো বন্ধ করা যাবে না। তাই যত দেরিতে শুরু করা যায় তত ভালো। এটি একটি বদ্ধমূল ভুল ধারণা। মূল কথা হলো প্রেসার সীমার মধ্যে রাখতে হবে, নইলে ভাইটাল অরগ্যানগুলো নষ্ট হবে। তাই জীবনাচরণ পরিবর্তন (lifestyle modification) করার পরেও যদি প্রেসার সীমার মধ্যে না আসে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওষুধ শুরু করতে হবে এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য তা চালিয়ে যেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় বিশেষ সতর্কতা : প্রজননক্ষম মহিলাদের ক্ষেত্রে উচ্চরক্তচাপের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যাদের গর্ভধারণের আগেই হাই প্রেসার ধরা পড়ে তাদের বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সব ধরনের ওষুধ গর্ভধারণে ইচ্ছুক মহিলাদের দেওয়া যাবে না। কারণ কিছু কিছু ওষুধ গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি করতে পারে। তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করে সন্তানধারণ করতে হবে। গর্ভে সন্তান এলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চেকআপ করিয়ে সঠিক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। তবে প্রেসার সব সময় ১৩০/৮০-এর নিচে রাখতে হবে। একবার ওষুধ শুরু করলে মাসে মাসে চেকআপ করিয়ে ডোজ সমন্বয় করতে হবে। মনে রাখা দরকার যে, উচ্চরক্তচাপের সঙ্গে একলামসিয়া, প্রি-একলামসিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

এছাড়া আমাদের দেশে উচ্চ মাতৃমৃত্যু এবং নবজাতক মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হলো একলামসিয়া/প্রিএকলামসিয়া।

ওষুধ বন্ধ করবেন কখন : সাধারণভাবে প্রেসারের ওষুধ অনির্দিষ্টকালের জন্য খেয়ে যেতে হবে। তবে কোনো কোনো সময় সাময়িকভাবে ওষুধ বন্ধ রাখতে হতে পারে। যেমন হঠাৎ বমি পাতলা পায়খানা শুরু হলে এমনিতেই প্রেসার কমে যায়। জ্বর হলেও প্রেসার কমে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে প্রেসার পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। চিকিৎসক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওষুধ সাময়িক বন্ধ রেখে বা মাত্রা কমিয়ে দিতে পারেন এবং যত দ্রুত সম্ভব তা আবার শুরু করার নির্দেশ দেবেন।

ফলোআপ কখন করবেন : ওষুধ শুরু করার প্রথমদিকে একটু ঘনঘন ফলোআপ দরকার হবে। ওষুধ কার্যকর হচ্ছে কিনা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা এগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। একবার সবকিছু ঠিকঠাক মতো চললে তিন মাস ছয় মাস পরপর ফলোআপ করতে হবে। ফলোআপের সময় রক্তের creatinine, electrolytes, sugar, cholesterols ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিলে ভালো। বছরে একবার ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম করে নিতে হবে। এসব পরীক্ষায় কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে চিকিৎসক তা ঠিকঠাক করে দিবেন। তাই উচ্চরক্তচাপ নিয়ে সতর্ক হতে হবে।

লেখক:  সিনিয়র কনসালটেন্ট, কার্ডিওলজিস্ট ও সিসিইউ ইন-চার্জ, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।