নিজ স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে বিয়ে করলেন প্রধান শিক্ষক

  • আপডেট: ০৯:২৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ২৭৮

ফাইল ফটো

নওগাঁর মান্দায় ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে করে ভাইরাল প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসীকে নিয়ে মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়া আজ মঙ্গলবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

এর আগে গত রোববার বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে দুজন দু’ধরনের বক্তব্য দেন। ইউএনও অভিযোগ পেয়েই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে জানালেও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হলে আজ মঙ্গলবার তড়িঘড়ি করে তিন সদস্যের কমিটি করেন ইউএনও। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- চক-কামদেব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও স্থানীয় অভিভাবক সদস্য রিপন। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন নিজ প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ে করেন। জন্মসনদ অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীর বয়স ১৬ বছর ৬ মাস। গত ২৬ মার্চ তাকে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন প্রধান শিক্ষক। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন করে প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ বিচার দাবি করেন। তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও দেন। এরপর ১৩ দিন পেড়িয়ে গেলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন বলেন, আকরাম হোসেনের প্রথম স্ত্রী স্কুল শিক্ষক। দ্বিতীয় স্ত্রীও তার ছাত্রী ছিলেন। অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে বিয়ে করেন। এরপর আবারও ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। এবারও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সরওয়ার স্বপন বলেন, ঘটনাটি নিয়ে শিক্ষক সমাজ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি। বিদ্যালয়ে গিয়েও তার দেখা পাওয়া যায়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখ বলেন, আজ চিঠি পেয়েছি। যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

ইউএনও শাহ আলম মিয়া বলেন, তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি নিয়ে অসত্য তথ্য দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

সর্বাধিক পঠিত

চাঁদপুরে বৈশাখী মেলার উদ্বোধন

নিজ স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে বিয়ে করলেন প্রধান শিক্ষক

আপডেট: ০৯:২৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

নওগাঁর মান্দায় ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে করে ভাইরাল প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসীকে নিয়ে মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়া আজ মঙ্গলবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

এর আগে গত রোববার বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে দুজন দু’ধরনের বক্তব্য দেন। ইউএনও অভিযোগ পেয়েই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে জানালেও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হলে আজ মঙ্গলবার তড়িঘড়ি করে তিন সদস্যের কমিটি করেন ইউএনও। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- চক-কামদেব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও স্থানীয় অভিভাবক সদস্য রিপন। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন নিজ প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ে করেন। জন্মসনদ অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীর বয়স ১৬ বছর ৬ মাস। গত ২৬ মার্চ তাকে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন প্রধান শিক্ষক। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন করে প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ বিচার দাবি করেন। তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও দেন। এরপর ১৩ দিন পেড়িয়ে গেলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন বলেন, আকরাম হোসেনের প্রথম স্ত্রী স্কুল শিক্ষক। দ্বিতীয় স্ত্রীও তার ছাত্রী ছিলেন। অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে বিয়ে করেন। এরপর আবারও ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। এবারও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সরওয়ার স্বপন বলেন, ঘটনাটি নিয়ে শিক্ষক সমাজ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি। বিদ্যালয়ে গিয়েও তার দেখা পাওয়া যায়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখ বলেন, আজ চিঠি পেয়েছি। যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

ইউএনও শাহ আলম মিয়া বলেন, তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি নিয়ে অসত্য তথ্য দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।