• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ছাত্রদলের কাউন্সিল বন্ধে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

অনলাইন ডেস্ক:

নির্বাচনের একদিন আগে আদালতের নির্দেশে ছাত্রদলের কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা আমান উল্লাহ আমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকার চতুর্থ সহকারী জজ আদালতের বিচারক নুসরাত জাহান সাথী এ আদেশ দেন।

একই সঙ্গে ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জবাব দেয়ার জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন আদালত। বিএনপির মহাসচিবসহ ১০ নেতাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক আমান উল্লাহর আইনজীবী মোহাম্মদ সাত্তার মোল্লা জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী ছাত্র সংগঠনগুলো রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ নেই।

২০১৭ সালে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে বিএনপি জানিয়েছিল- ছাত্রদল তাদের অঙ্গসংগঠন নয়, সহযোগী সংগঠন। ছাত্রদল সহযোগী সংগঠন হওয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের এখানে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপের আইনগত সুযোগ নেই।

এটি আদালতকে বলা হয়েছে। আদালত শুনানি শেষে শনিবার অনুষ্ঠেয় ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন।

সাত্তার মোল্লা আরও জানান, কাউন্সিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে, তা জানতে চেয়েছেন আদালত। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপির ১০ নেতাকে জবাব দিতে বলেছেন আদালত।

তিনি দাবি করেন, ছাত্রদল সহযোগী সংগঠন হওয়ায় ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেয়া, ১২ নেতাকে বহিষ্কার কিংবা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করার আইনগত সুযোগ নেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির।

জানতে চাইলে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার যুগান্তরকে বলেন, ছাত্রদলের কাউন্সিলের ওপর আদালতের দেয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি আমরা জেনেছি। বিএনপির মহাসচিবসহ কয়েকজনের জবাব চাওয়া হয়েছে।

আদালতে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে আমরা জবাব দেব। তিনি বলেন, ছাত্রদল বিএনপির সহযোগী সংগঠন। বিএনপির চেয়ারপারসন ছাত্রদলের সাংগঠনিক প্রধান। আইন অনুযায়ী ছাত্রদলের কাউন্সিল হতে যাচ্ছিল।

আমান উল্লাহর আইনজীবী যা দাবি করছেন, তা সঠিক নয়। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমান এ মামলা করেছেন। এদিকে আবেদনকারী আমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ছাত্রদলের কাউন্সিলে অস্থায়ী স্থগিতাদেশের খবরে বিএনপিসহ দলের সবস্তরের নেতাকর্মীর মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। কার ইন্ধনে এ স্থগিতাদেশ চাওয়া হলো, সেটাই এখন আলোচনার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এ নিয়ে বিএনপি থেকে দু’ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। একটি গ্রুপ মনে করছে- এর পেছনে সরকারের হাত রয়েছে। কোনো সংস্থা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমানকে দিয়ে এ কাজ করানো হয়েছে।

আবার আরেক গ্রুপ মনে করছে, কাউন্সিলকে ঘিরে গড়ে ওঠা কোনো সিন্ডিকেটের প্রার্থী জয়ী হতে পারবে না নিশ্চিত হয়ে আমানকে দিয়ে এ কাজ করিয়েছে।

স্থগিতাদেশের পর বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি বৈঠকে বসেন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যোগ দেন।

বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। পরে রাত ১১টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ছাত্রদলের কাউন্সিল স্থগিতাদেশ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

কারণ আমান কাউন্সিলে প্রার্থী ছিলেন না এবং আবেদনও করেননি। আবার তিনি কাউন্সিলরও নন। সুতরাং কোনো বিচার বিশ্লেষণ ও যুক্তিতর্ক ছাড়াই স্থগিতের আদেশ দেয়া গভীর চক্রান্তমূলক। সরকারের কারসাজিতে এমন আদেশ দেয়া হয়েছে।

কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে কাউন্সিলরদের মধ্যে যে উৎসাহ ও স্বতঃস্ফূর্ততার স্ফুরণ সৃষ্টি হয়েছিল, সেটিকে বানচাল করার জন্য এ আদেশ সরকারের মাস্টার প্ল্যানের অংশ। তিনি বলেন, মধ্যরাতের নির্বাচনের সরকার কোনো প্রতিষ্ঠানেরই গণতান্ত্রিক চর্চাকে সহ্য করতে পারছে না।

সুষ্ঠু, সুন্দর ও গণতান্ত্রিক পন্থায় ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচন নস্যাৎ করতে সরকারের নির্দেশে এ আদেশ। এটি আওয়ামী সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির আরেকটি অধ্যায় হয়ে থাকবে।

এবার রাখঢাক করে নয়, বরং প্রকাশ্যেই আওয়ামী সরকার আদালতকে দিয়ে তাদের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির চরিত্রটি আবারও উন্মোচিত করল। তারা যে গণতন্ত্রের শত্রু সেটি এ ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হল।

সরকার আদালতকে দিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিল বন্ধ করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান প্রমুখ।

এদিকে ছাত্রদলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কি জানতে চাইলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, এ বিষয়ে আজ শুক্রবার অনুষ্ঠেয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • জাতীয় এর আরও খবর
error: Content is protected !!