চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ইমন হোসেনকে (২৫) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে নিহতের বাবা মো. হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় মামলাটি (নং- ১৪) দায়ের করেন। এতে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৯ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
এ দিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক পুলিশি হেফাজতে থাকা ২ জনের মধ্যে রাজারগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক কে.এম ফয়েজ বাবুকে মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি ও গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
হত্যাকাণ্ডের শিকার ইমন হোসেন পেশায় বার্নিশ (ফার্নিচারের রং) মিস্ত্রি। পাশাপাশি সে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। সে উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের লোধপাড়া গ্রামের কবিরাজ বাড়ির মো. হারুনুর রশিদের ছেলে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) সন্ধ্যায় নিজ ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।
আসামিরা হলেন, জিলানী বেপারী (২০), তারেক আজিজ (৩০), রাসেল খাঁন (২৭), আব্দুল্লাহ (২৮), রমজান বেপারী (২২), ফরহাদ (২২), রাকিব (২৫), জাবেদ বেপারী (২৮), শাহাদাত বেপারী (২৬), পারভেজ মোশারফ কালু (২৫), জাহিদ (২২), পলাশ (২৬), শিপন চন্দ্র রায় (২৬), রাজু দাশ (২৫), সিয়াম (১৮), কাবির (১৮), নাছির (১৮) ও রায়হান (১৯) সহ অজ্ঞানামা ৯/১০ জন আসামি রয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) বিকালে রাজারগাঁও ইউনিয়নে একটি ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলে তবারক বিতরণ নিয়ে জিলানী ও সৈকত নামের দুই যুবকের তর্ক-বির্তকের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৩ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) বিকালে দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নে সাতবাড়ি ভাঙ্গা গ্রামে আবারও তাদের দুই জনের তর্ক-বিতর্ক ও মারামারির ঘটনা ঘটলে জিলানী স্থানীয় একটি দোকানে আশ্রয় নেয়।
ওই সময়ে জিলানী একটি দোকানে আশ্রয় নিলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ইমন হোসেন তাকে বাহির না করার জন্য দোকানীকে বলেন এবং বাহির হলে সৈকত তাকে (জিলানী) মারধর করবে বলে চলে যায়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় রাজারাগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তারেক আজিজ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মামলার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা বাকিলা ইউনিয়নের জনতা বাজারে এসে ইমনের উপর অতর্কিত হামলা করে।
হামলায় গুরুতর আহত ইমনের ডাক-চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা হত্যার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) পঞ্চজ কুমার দে ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মামলা ও আসামির বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, কে.এম ফয়েজ বাবুকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।