আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নাগরিকত্ব সংশোধনী অবশেষ পিঁছু হটছে মোদী সরকার। গণআন্দালনের মুখে শেষ পর্যন্ত কি তাহলে চাপে পড়ে নতি স্বীকার করল মোদি সরকার? ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে উত্তাল সে দেশ। রাজধানী দিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় জ্বলছে প্রতিবাদের আগুন। এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হলো, নাগরিকত্ব প্রমাণে বাবা কিংবা মায়ের কোনো পরিচয়পত্র লাগবে না। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে স্থানীয়দের বক্তব্যকেও প্রমাণ হিসেবে ধরা হবে। এছাড়া আধার কার্ডকেও মান্যতা দেওয়া হবে।
শুক্রবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে টুইট করে এই খবর জানানো হয়েছে। টুইটে লেখা হয়েছে, নাগরিকত্ব প্রমাণে ১৯৭১ সালের আগের কোনো নথি দেখাতে হবে না। কাউকেই তার বাবা-মা বা তাদের পূর্বপুরুষের পরিচয়পত্র বা জন্মের শংসাপত্র দিতে হবে না। নিজের পরিচয়পত্রই এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট। এমনকি আধার কার্ডকেও নাগরিকত্ব প্রমাণের তথ্য তালিকায় মান্যতা দেওয়া হয়েছে।
নিরক্ষরদের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের কোনো লিখিত নথি দিতে হবে না। এক্ষেত্রে, যদি তাদের কাছে নির্দিষ্ট নথি না থাকে, তাহলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য নেওয়া হবে। যদি তারা ওই নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারেন, তবে তাদের কথাকে নাগরিকত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এও জানানো হয়েছে, জন্মের তারিখ, স্থান বা এই দুইয়ের কোনো নথি থাকলেই তা দিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করা যাবে। এই সংক্রান্ত কোনো নথি থাকলে ভারতীয় কোনো নাগরিককে অযাচিতভাবে হয়রানি করা হবে না বা অসুবিধায় ফেলা হবে না।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদের পথ দেখিয়েছিল আসাম। বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। এরপর প্রতিবাদ শুরু হয় দিল্লিতে। ক্যা-র প্রতিবাদে সরব হয় ছাত্রসমাজ। দিল্লির জামিয়া মিলিয়াসহ সে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।
শিক্ষার্থী ও আমজনতাকে ঠেকাতে পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের সাহায্য নেয়। প্রতিবাদ করে বেঙ্গালুরুতে আটক হন রামচন্দ্র গুহ। আগুনে ঘি আরো পড়ে। বিদ্বজ্জনেরাও শামিল হন আন্দোলনে। ক্রমে তা ভয়াবহ আকার নেয়। উত্তরপ্রদেশে এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন নয়জন। এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এই ঘোষণা কি তবে চাপের মুখে নতিস্বীকার?