নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
হাজীগঞ্জ-কচুয়া দুই উপজেলার মধ্যেবর্তী বোয়াল জুড়ি খালের উপর নিজ অর্থায়নে স্টেলের ব্রিজ নির্মাণ করে প্রশাংসায় ভাসছেন প্রবাসী দুলাল মোল্লা। রবিবার সকালে রঘুনাথপুর বাজারের দক্ষিন পাশে শিক্ষার্থী ও শতশত লোকজনের উপস্থিতিতে জমকালো আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে ব্রিজ উদ্বোধন করেন দুলাল মোল্লা।
সরজমিনে গেলে জানাযায়, হাজীগঞ্জ-কচুয়া দুই উপজেলার মধ্যবর্তী বোয়াল জুড়ি খালের উপর বহু বছরের পুরনো সেতুটি দীর্ঘদিন জরাজীর্ণতার মধ্যদিয়ে ঝুঁকিনিয়ে মানুষ এই ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করতো। গত ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে সেতুটির মাঝখানের অংশ হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ে যাওয়ায় দুই পাড়ের মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্রিজের পূর্বে পাশে রয়েছে কচুয়ার অংশে রঘুনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,রঘুনাথপুর বাজার,ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যান কেন্দ্র,সরকারি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ওই প্রতিষ্ঠান গুলোতে যাওয়ার জন্য প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা ঘুড়ে ব্রিজ পেরিয়ে যেতে হতো হাজীগঞ্জের উপজেলাবাসী। বরইগাঁও ও রঘুনাথপুর মানুষের হাজীগঞ্জ উপজেলা যাওয়ার সহজ রাস্তা ছিলো এ ব্রিজটি। বরইগাঁও গ্রামের কৃতি সন্তান ওমান প্রবাস থেকে দেশে এসে এই ব্রিজটি ভাংগা দেখে চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় এবং মানুষের কষ্ট লাঘব দেখে দুলাল মোল্লা নিজ উদ্যোগে ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে স্টিলের নতুন একটি ব্রিজ নির্মান করেন। এই ব্রিজ দিয়ে দুই উপজেলার হাজীগঞ্জ-কচুয়া ২০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন প্রতিনিয়ত।
হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁর পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতাসংগ্রাম পর জেলা পরিষদের অর্থায়নে এখানে একটি উঁ”ু ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ব্রিজটি জরাজীর্ণ হওয়ায় হঠাৎ মাঝখানে ভেঙ্গে পরায় দুই উপজেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। প্রবাসী দুলাল মোল্লা ব্রিজ নির্মাণ করে প্রমাণ করলেন সবার উপর মানুষ সত্য তার উপর নাই। তাঁর এই মহানুভবতা এ অঞ্চলের মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, ব্রিজটি দেওয়ায় ২টি উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছে। দুলাল মোল্লাকে আমরা (এলাকাবাসী) আজীবন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে মনে রাখবো।
রঘুনাথপুর শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, আমার বাড়ী ব্রিজের পশ্চিম পাশে তারাপাল্লা গ্রাম এই ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে প্রায় ২কিলোমিটার হেটে অনেক কষ্ট করে স্কুলে যেতে হতো। ব্রিজটি নির্মাণ করায় ২ মিনিটে স্কুলে যেতে পারছি। প্রবাসী দুলাল ভাইকে আমরা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞ জানাই।
ব্রিজ নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রবাসী দুলাল মোল্লা বলেন, এখানে অনেক পুরনো একটি উঁচু ব্রিজ ছিলো। ছোটবেলায় আমার বাবার সাথে যখন রঘুনাথপুর বাজারে আসতাম,তখন দেখতাম দুই উপজেলার হাজার মানুষ এই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতো। গত বছরের শেষ দিকে ব্রিজটি জরাজীর্ণ থাকার কারনে হঠাৎ ভেঙ্গে খালে পরে যায়। দুই উপজেলা মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ দেখতে পাই দেশে এসে। তাই নিজ উদ্যোগে দুই উপজেলার মানুষের কষ্ট লাগবে এবং বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কষ্ট দেখে আমি নিজ অর্থায়নে ব্রিজটি নির্মাণের উদ্যোগ নেই। আজ আমি ব্রিজটি উদ্বোধন করতে পেরে মানুষের কষ্ট লাঘবে কিছুটা হলেও উপকৃত করতে পেরে আল্লাহ তায়ালার উপর শুকরিয়া আদায় করছি।