• ঢাকা
  • সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ২৫ আগস্ট, ২০১৯

চাঁদপুরে পূর্ব সাপদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]
পুলিশের হাতে আটক শীর্ষ ডাকাত সর্দার, সাজাপ্রপ্ত আসামী ডাকাত সর্দার শিপন

শাহানা আকতার:
চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ৮৩নং পূর্ব সাপদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফিরোজা খানম জাহানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় সভাপতিসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে ১৩টি মাসিক সভার রেজুলেশন তৈরী করার অভিযোগ করেছেন সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম মিয়াজী।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট তিনি লিখিত এই অভিযোগ দাখিল করেন।

অভিযোগে উল্লেখ কর হয়, ২০১৮ সালের ১০ জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত ১৩টি মাসিক সভা না করে প্রধান শিক্ষিকা নিজেই সভাপতিসহ কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে মাসিক রেজুলেশন তৈরী করেন।

এছাড়াও তিনি চলতি বছরের শুরুতে বিদ্যালয়ের নতুন বই বিতরণকালীন সময় ছাড়া অন্য কোন আনুষ্ঠানিকতায় কমিটির কোন সদস্যকে আমন্ত্রন জানাননি।

কমিটির সহ-সভাপতি মনির শেখ বলেন, আমি বছরের প্রথম দিন বই বিতরণ ছাড়া আর কোন সভায় যাইনি। আমাদেরকে সভা কিংবা বিদ্যালয়ের কোন কাজেই ডাকা হয়নি।

আরেক সদস্য ও বালিয়া মহিলা ইউপি সদস্য নুর জাহান বেগম বলেন, আমাদের রাজনৈতিক কোন অনুষ্ঠান হলে ওই বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়। কোন সভার রেজুলেশন খাতায় আমি আজ পর্যন্ত স্বাক্ষর করিনি। আমার স্বাক্ষর কে দিয়েছে আমি বলতে পারব না।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আহসান তালুকদার বলেন, আমার কাছ থেকে প্রধান শিক্ষিকা কোন সভার বইতে স্বাক্ষর নেননি। তিনি আমাদেরকে কোন কাজে ডাকলে কোন সময় না করিনি। আমরা স্বাক্ষর না দেয়া সত্ত্বেও কিভাবে তিনি আমাদের স্বাক্ষর জাল করলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এই বিষয়ে জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। আমাদের সভাপতি এই বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি বলেন, তিনি দীর্ঘদিন এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে থাকলেও বিদ্যালয়ের ফলাফল খুবই খারাপ। এইসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,অন্য বিদ্যালয়ে কারচুপি ও ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে ভালো ফলাফল করে বলে অভিযোগ করেন। বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে আসেন না। আবার কোন কোন সময় ছুটির সময়ে পূর্বে চলে যান। কমিটির লোকজন জিজ্ঞাসা করলে বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসে কাজ ছিলো সেই জন্য আসতে দেরি হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম মিয়াজী বলেন, আমি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধান শিক্ষিকা ফিরোজা খানম জাহান যখন যে কাজের কথা বলেছেন আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি সে কাজটি আন্তরিকভাবে করার জন্য। তিনি প্রতিমাসে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন উত্তোলনের জন্য স্বাক্ষর নিলেও রেজুলেশন বইতে স্বাক্ষর নেননি এবং প্রতিমাসে সভাও আহবান করেননি। তিনি এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১৫ বছর প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ সভার বইতে স্বাক্ষর করতে এসে আমি দেখি আমারসহ কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে তিনি ১৩টি রেজুলেশন তৈরী করেছেন।

তিনি আরো বলেন, সকল সরকারি বিদ্যালয় সরকারি নির্দেশনা মানলেও তিনি চলতি বছর জাতীয় শোক দিবস এবং বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন ও শোক দিবস উদযাপন সম্পর্কে আমাদেরকে কোন কিছুই জানাননি। এসব বিষয়গুলো যথাযথভাবে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফিরোজা খানম জাহানের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সভাপতিকে না পাওয়ার কারণে আমি স্বাক্ষর জাল করে রেজুলেশন তৈরী করেছি। সভার জন্য আমি উনাকে ফোনে বলেছি। কিন্তু উনি ব্যস্ত থাকেন বলে সভা করতে পারিনি। বিদ্যালয় পরিদর্শনে সভার কার্যক্রম না থাকলে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে, সেই জন্য আমি স্বাক্ষর জাল করে রেজুলেশন তৈরী করেছি। সভাপতি সভা আহবান করলে আসেন না, এই বিষয়ে আমি কয়েকবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে জানিয়েছি।

চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাজমা বেগম বলেন, ৮৩নং পূর্ব সাপদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফিরোজা খানম জাহান কমিটির সভাপতিসহ সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে রেজুলেশন তৈরী করেছেন এমন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম মিয়াজী। অভিযোগের আলোকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়াগেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষিকা ফিরোজা খানম জাহান আমাকে মৌখিক বলেছেন বিদ্যালয় সভাপতি তাকে পরিচালনা কাজ করতে জালাতন করেন। কিন্তু মাসিক সভায় হাজির হন না এমন কোন কথা প্রধান শিক্ষিকা বলেননি।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • চাঁদপুর সদর এর আরও খবর
error: Content is protected !!