ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল হক হত্যা মামলার রায় ঘোষণার আগে আসামিদের আদালতে নেয়া হয়। ছবি: সংগৃহিত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জগৎ বাজারের ব্যবসায়ী ও নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক হত্যায় ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও আট জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রোববার দুপুরে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছর করে জেল খাটতে হবে বলে বলা হয়।
রায় ঘোষণার আগে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মামলাটিতে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আটক থাকা ১৬ আসামিকে মহানগর আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার ২১ আসামির মধ্যে এখনও পাঁচজন পলাতক।
মহানগর হাজতখানার পরিদর্শক আব্দুল হাকিম রায় উপলক্ষে অর্ধশতাধিক পুলিশ মোতায়েন করার কথা জানান।
এ সময় আসামিদের অনেক স্বজন এসে আদালতের সামনে ভিড় করেন।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া জানান, অভিযোগপত্রে নাম থাকা ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জন আদালতে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা মামলাটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেন তিনি।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া উত্তর পৌরতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে জহিরুল হক নিজ গ্রাম পয়াগে ফিরছিলেন। পথে আসামি বসু মিয়া, হাবিবুর রহমান, শহিবুর রহমান ওরফে শুক্কি, কবির মিয়া, সাচ্চু মিয়া, মোখলেছ মিয়া, রুহান ওরফে বোরহান, শিথীল আহমেদ ওরফে ফাহিম আহমেদ, রহমত উল্লাহ ফারিয়াজসহ অন্য আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থান করছিলেন। জহিরুল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলযোগে আসামিরা তার সিএনজি ব্যারিকেড দিয়ে আটকান। এসময় সিএনজিতে থাকা জহিরুলকে তারা আক্রমণ করে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করেন। আসামিরা সিএনজিচালক গোলাপ মিয়াকেও আঘাত করেন।
ঘটনার সময় অন্যদিক থেকে আসা আরেকটি সিএনজিরচালককে গোলাপ মিয়া বিষয়টি জানালে তিনি মোটরসাইকেল দুটি ধাওয়া করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উত্তর পৌরতলা সিএনজি স্ট্যান্ডে থাকা লোকজনের সহায়তায় মোটরসাইকেল দুটিসহ আসামি শিথীল ও ফারিয়াজকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।
জহিরুল হক ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই কবির হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২১ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ১৬ আসামি কারাগারে এবং বাকি পাঁচ আসামি পলাতক।