চাঁদপুর পিবিএস-১ এর পরিচালক পদের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ!

  • আপডেট: ০২:০৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২০
  • ১৯

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ৫নং এলাকার পরিচালক পদের নির্বাচনে, অনিয়মের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থী (ছাতা প্রতীক) মো. শফিকুল আলম। তিনি নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশন প্রধান আমিনুর রহমান এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এর চেয়ারম্যান বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ৪ ও ৫নং এলাকার (কচুয়া উপজেলা) পরিচালক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখিত ৫নং এলাকার নির্বাচনে ২জন প্রার্থী অংশ গ্রহণ করেন। এই নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম খোকার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন, প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থী (ছাতা প্রতীক) মো. শফিকুল আলম।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, নির্বাচনী বিধিমালার ৪ এর ‘চ’ ধারা অনুযায়ী কোন রাজনৈতিক দল/সংস্থার পদে নিয়োজিত আছেন, এমন ব্যক্তি ‘পরিচালক’ পদপ্রার্থী অযোগ্য হিসাবে বিবেচিত হইবেন। তৌহিদুল ইসলাম খোকা কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। অথচ তিনি পরিচালক পদে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন।
উল্লেখিত অভিযোগের প্রমান হিসাবে কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির তালিকা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া তৌহিদুল ইসলাম খোকার বিজয়ের খবর জেলা থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সংবাদে তার পদ হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ব্যবহার করা হয়েছে।
বিধিমালা ১৩ ধারা অনুযায়ী চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তি, ভোট কেন্দ্রে স্বয়ং উপস্থিত থেকে ভোট দিবেন। অথচ মোছা. নাছিমা বেগম নামের একজন মৃত মহিলার ভোট দিয়েছেন এবং একই বিদ্যুৎ বিলের কপি দিয়ে, একজন ভোটার চারটি ভোট দিয়েছেন। যার প্রমান হিসেবে দুটি বিদ্যুৎ বিলের কপি তিনি সংবাদকর্মীদের কাছে দিয়েছেন। যা (বিদ্যুৎ বিলের কপি) নির্বাচন কমিশনের সিলকৃত।
বিধিমালা ১৭ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধান, ব্যালট গণনা, ও পরিচালনা এবং বার্ষিক সদস্য সভার দিনে গ্রাহক সদস্যদের উপস্থিতিতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার কথা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্বাচনে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কচুয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. জাহাঙ্গীর আলম বিজয়ী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। যার প্রমান হিসাবে তিনি জোনাল অফিসের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) ওই দিনের রেকর্ড দেখার কথা অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এ ছাড়াও তৌহিদুল ইসলামের পক্ষ হয়ে জোনাল অফিসের সেবাকর্মী শিপন আক্তার ছাতা প্রতীকের প্রার্থীকে মো. শফিকুল আলমকে টাকার বিনিময়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের কথা বলেন। যার প্রমাণ হিসাবে মোবাইল কল রেকর্ড রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন।
অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ভোটের দিন তৌহিদুল ইসলাম খোকার তার লোকজনকে দিয়ে, প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থী মো. শফিকুল আলমসহ তার এজেন্ট ও সমর্থকদের মারধর করেছেন। এবং তার সমর্থিত ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসতে বাধা প্রদান করা হয়েছে।
নির্বাচনের অনুষ্ঠানের পূর্বেও তাকে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে। যার ফলে তিনি নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও নির্বাচন কমিশনারকে দিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন।
এক বছর আগে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন উল্লেখ করে তৌহিদুল ইসলাম খোকা বলেন, বর্তমানে আমি দলীয় কোন পদ-পদবীতে নেই। মারধর ও হুমকি-ধমকির বিষয়টি সম্পূন্ন ভিত্তিহীন বলে তিনি জানান।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- ১ এর কচুয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. জাহাঙ্গীর আলম ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার ব্যবহৃত অফিসের মোবাইল নম্বরে কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি মোবাইল ফোনটি রিসিভ করেন নি।
অপর দিকে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশন প্রধান আমিনুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরেও কয়েকবার ফোন দিলে, তিনিও ফোনটি রিসিভ করেন নি।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- ১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. কেফায়েত উল্যাহ্ বলেন, বিজিত প্রার্থী মো. শফিকুল আলমের অভিযোগ স¤পন্ন অনভিপ্রভেত এবং ভিত্তিহীন। তিনি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। তাছাড়া নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকসহ প্রার্থী এবং তাদের লোকজনের উপস্থিতিতে ভোটাধিকার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রার্থীর রাজনৈতিক বা কোন সংস্থার পদ-পদবীতে নেই। তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর রিপোর্টের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সুতরাং স্বচ্ছ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার (মো. শফিকুল আলম) অভিযোগের সত্যতা নেই।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যেভাবে হ ত্যা করা হয় তরুণ আইনজীবী সাইফলকে

চাঁদপুর পিবিএস-১ এর পরিচালক পদের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ!

আপডেট: ০২:০৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২০

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ৫নং এলাকার পরিচালক পদের নির্বাচনে, অনিয়মের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থী (ছাতা প্রতীক) মো. শফিকুল আলম। তিনি নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশন প্রধান আমিনুর রহমান এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এর চেয়ারম্যান বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ৪ ও ৫নং এলাকার (কচুয়া উপজেলা) পরিচালক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখিত ৫নং এলাকার নির্বাচনে ২জন প্রার্থী অংশ গ্রহণ করেন। এই নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম খোকার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন, প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থী (ছাতা প্রতীক) মো. শফিকুল আলম।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, নির্বাচনী বিধিমালার ৪ এর ‘চ’ ধারা অনুযায়ী কোন রাজনৈতিক দল/সংস্থার পদে নিয়োজিত আছেন, এমন ব্যক্তি ‘পরিচালক’ পদপ্রার্থী অযোগ্য হিসাবে বিবেচিত হইবেন। তৌহিদুল ইসলাম খোকা কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। অথচ তিনি পরিচালক পদে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন।
উল্লেখিত অভিযোগের প্রমান হিসাবে কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির তালিকা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া তৌহিদুল ইসলাম খোকার বিজয়ের খবর জেলা থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সংবাদে তার পদ হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ব্যবহার করা হয়েছে।
বিধিমালা ১৩ ধারা অনুযায়ী চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তি, ভোট কেন্দ্রে স্বয়ং উপস্থিত থেকে ভোট দিবেন। অথচ মোছা. নাছিমা বেগম নামের একজন মৃত মহিলার ভোট দিয়েছেন এবং একই বিদ্যুৎ বিলের কপি দিয়ে, একজন ভোটার চারটি ভোট দিয়েছেন। যার প্রমান হিসেবে দুটি বিদ্যুৎ বিলের কপি তিনি সংবাদকর্মীদের কাছে দিয়েছেন। যা (বিদ্যুৎ বিলের কপি) নির্বাচন কমিশনের সিলকৃত।
বিধিমালা ১৭ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধান, ব্যালট গণনা, ও পরিচালনা এবং বার্ষিক সদস্য সভার দিনে গ্রাহক সদস্যদের উপস্থিতিতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার কথা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্বাচনে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কচুয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. জাহাঙ্গীর আলম বিজয়ী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। যার প্রমান হিসাবে তিনি জোনাল অফিসের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) ওই দিনের রেকর্ড দেখার কথা অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এ ছাড়াও তৌহিদুল ইসলামের পক্ষ হয়ে জোনাল অফিসের সেবাকর্মী শিপন আক্তার ছাতা প্রতীকের প্রার্থীকে মো. শফিকুল আলমকে টাকার বিনিময়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের কথা বলেন। যার প্রমাণ হিসাবে মোবাইল কল রেকর্ড রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন।
অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ভোটের দিন তৌহিদুল ইসলাম খোকার তার লোকজনকে দিয়ে, প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থী মো. শফিকুল আলমসহ তার এজেন্ট ও সমর্থকদের মারধর করেছেন। এবং তার সমর্থিত ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসতে বাধা প্রদান করা হয়েছে।
নির্বাচনের অনুষ্ঠানের পূর্বেও তাকে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে। যার ফলে তিনি নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও নির্বাচন কমিশনারকে দিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন।
এক বছর আগে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন উল্লেখ করে তৌহিদুল ইসলাম খোকা বলেন, বর্তমানে আমি দলীয় কোন পদ-পদবীতে নেই। মারধর ও হুমকি-ধমকির বিষয়টি সম্পূন্ন ভিত্তিহীন বলে তিনি জানান।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- ১ এর কচুয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. জাহাঙ্গীর আলম ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার ব্যবহৃত অফিসের মোবাইল নম্বরে কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি মোবাইল ফোনটি রিসিভ করেন নি।
অপর দিকে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশন প্রধান আমিনুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরেও কয়েকবার ফোন দিলে, তিনিও ফোনটি রিসিভ করেন নি।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- ১ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. কেফায়েত উল্যাহ্ বলেন, বিজিত প্রার্থী মো. শফিকুল আলমের অভিযোগ স¤পন্ন অনভিপ্রভেত এবং ভিত্তিহীন। তিনি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। তাছাড়া নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকসহ প্রার্থী এবং তাদের লোকজনের উপস্থিতিতে ভোটাধিকার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রার্থীর রাজনৈতিক বা কোন সংস্থার পদ-পদবীতে নেই। তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর রিপোর্টের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সুতরাং স্বচ্ছ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার (মো. শফিকুল আলম) অভিযোগের সত্যতা নেই।