• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২০ আগস্ট, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ২০ আগস্ট, ২০১৯

দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন দুপরের খাবার

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

অনলাইন ডেস্ক:

দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পের অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে এক বেলা খাবার দেয়া হবে।

খাবার হিসেবে বিস্কুট, রান্না করা খাবার বা ডিম, কলা দেয়া হবে। এই ব্যবস্থা রেখে ‘জাতীয় স্কুল মিলনীতি-২০১৯’র খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

এছাড়া ‘চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন এবং প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সংক্রান্ত দুটি নীতিমালার খসড়া অনুমোদনসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

শফিউল আলম বলেন, মিড ডে মিল অনেক জায়গায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু হয়েছে। এগুলোকে কিভাবে সমন্বিতভাবে সারা দেশে ছড়ানো যায় সেজন্য এই নীতিমালা। নীতিমালায় চর, হাওর এলাকা প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।

বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার সহকারী উপপরিচালক ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার সম্পৃক্ত থাকবেন।

এছাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে পার্বত্য জেলা পরিষদ ও স্থানীয় প্রশাসন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত থাকবেন। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি সেল বা ইউনিট কাজ করবে। প্রয়োজনবোধে মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি পৃথক জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল মিল উপদেষ্টা কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে সরকার মনোনীত উপযুক্ত ব্যক্তিরা থাকবেন। এই কমিটি কর্মপরিধি, কার্যকারিতা, অর্থায়ন ও মূল্যায়নে কাজ করবে।

সরকার মনোনীত বিশিষ্ট ব্যক্তির সভাপতিত্বে এই কমিটির সদস্যদের নির্দিষ্ট মেয়াদে নিয়োগ দেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্কুল মিল কর্মসূচির প্রধান নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রতিদিন স্কুল মিলের খাদ্য বৈচিত্র্য বৃদ্ধি ও খাবারের স্বাদে বৈচিত্র্য আনতে পুষ্টিচাল, ডাল, পুষ্টি তেল এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মৌসুমি তাজা সবজি এবং সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ডিম দিয়ে করা হবে।

যাতে শিশুদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তি চাহিদার ৩০ শতাংশ ক্যালরি এবং অপরিহার্য অনুপুষ্টিকণা, পর্যাপ্ত প্রোটিন এবং চর্বির চাহিদা স্কুল মিল থেকে আসে। যা প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৩-১২ বছরের ছেলে ও মেয়ে শিশুদের জন্য প্রযোজ্য হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে তিন উপজেলার স্কুলে রান্না করা খাবার এবং ১০৪টি উপজেলায় বিস্কুট খাওয়ানো হচ্ছে। ১০৪টির মধ্যে ৯৩টি উপজেলায় সরকার ও ১১টি উপজেলায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি অর্থায়ন করছে।

তিনি বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা দেখেছি রান্না করে খাবার দিলে ১১ শতাংশ উপস্থিতির হার বাড়ে। শুধু বিস্কুট দিলে উপস্থিতির হার বাড়ে ৬ শতাংশ। কর্মসূচির আওতাধীন এলাকায় ঝরে পড়ার হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে এবং শারীরিক অবস্থারও অনুকূল পরিস্থিতি দেখতে পেয়েছি। রান্না করা খাবার এলাকায় ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং বিস্কুট দেয়া এলাকায় রক্তস্বল্পতা কমেছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এই বিবেচনায় জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি অনুমোদিত হয়েছে মন্ত্রিসভায়।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, একই বিস্কুট বাচ্চারা খেতে চায় না। খাবারের বৈচিত্র্য বিবেচনায় আমরা বিস্কুট, কলা ও ডিম রাখার চেষ্টা করছি। বৃহস্পতিবার অর্ধদিবসে শুধু বিস্কুট রাখব। শুধু বিস্কুট দিলে প্রতিদিন প্রতি শিক্ষার্থীর ৯ টাকা হারে বছরে দুই হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। পাঁচ দিন রান্না করা খাবার ও একদিন বিস্কুট দিলে খরচ হবে পাঁচ হাজার ৫৬০ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

বিস্কুট এবং ডিম, কলা ও রুটি দিলে ২৫ টাকা হারে খরচ হবে সাত হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। আমরা সব মডেলে চালাব, যেখানে যেটা প্রযোজ্য হবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে চাঁদপুরে : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির জেলা চাঁদপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৯’র খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে। চ্যান্সেলর থাকবেন রাষ্ট্রপতি, সিন্ডিকেটের গঠন সম্পর্কে বলা আছে- ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার থাকবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন চেয়ারম্যান মনোনীত একজন প্রতিনিধি, সরকার মনোনীত যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, সরকার মনোনীত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে একজন প্রতিনিধি ও চ্যান্সেলর মনোনীত তিনজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ থাকবেন। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল যেভাবে হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়েও সেভাবে হবে।

যত্রতত্র প্রতিবন্ধী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয় : যত্রতত্র, মানহীন ও অননুমোদিতভাবে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে না দেয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে নীতিমালার খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, ‘নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) সম্পর্কিত সমন্বিত/বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯’ এবং ‘নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) ছাড়া প্রতিবন্ধী সম্পর্কিত সমন্বিত/বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯’র খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এখানে দুটি নীতিমালা, প্রচলিত যে নীতিমালাগুলো রয়েছে- শিক্ষানীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য নীতির সঙ্গে সমন্বয় করে এ নীতিমালাটি করা হয়েছে।’ প্রতিবন্ধীদের জন্য কি আলাদা স্কুল করা হবে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘মূল ধারার সঙ্গে সমন্বয় করে করার জন্য বলা হয়েছে।

অন্যান্য দেশে যেভাবে হয় যেমন- নরমাল স্কুলে যদি প্রতিবন্ধীরা পড়ে তাহলে তাদের ডেভেলপমেন্টটা ভালো হয়। তবে একান্তই যেগুলো কেয়ারের প্রয়োজন সেটার জন্য আলাদাভাবে সময় দেয়া লাগে। মানে বিদেশে যেটা করে থাকে। বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র, মানহীন ও অননুমোদিতভাবে বিশেষ বিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার একটি অনুশাসন দিয়ে বলেছিল, আপনারা এ জাতীয় স্কুল করবেন না। কিন্তু না মানার পরিপ্রেক্ষিতেই এ নীতিমালাটা করা হল।’

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • জাতীয় এর আরও খবর
error: Content is protected !!