ফরিদগঞ্জে পরকীয়া আর অসামাজিক কার্যকলাপে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ

  • আপডেট: ০৯:০৭:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০১৯
  • ২৮

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:

ধর্মীয় অনুশাসন না মানায় ফরিদগঞ্জে আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে পরকীয়া। আর সেই ঘটনার জের ধরে দিন দিন বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা। এ হার দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পারিবারিক সম্পর্কে টানাপোড়ান সৃষ্টি হচ্ছে। পিতা-মাতা থাকতেও এতিম হচ্ছে বিচ্ছেদ হওয়া পরিবারের সন্তানরা। অযত্নে আর অবহেলায় বেড়ে উঠছে তারা। বিচ্ছেদ হওয়া পিতা-মাতার সন্তানের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।

প্রবাসী অদ্যুষিত এই উপজেলায় বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মোবাইলে পরকীয়া প্রেম, যৌতুক, প্রেমের বিয়ে ও বাল্য বিবাহ এর জন্য অন্যতম কারন।

বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে জরিমানার বিধান থাকলেও শাস্তির বিধান না থাকাতে অনেকে সামান্য কারণেই স্ত্রীকে তালাক দিতে কার্পণ্যবোধ করছে না। এছাড়া স্ত্রীদের যে কোনো সময় স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে যাওয়ার অবারিত সুযোগ থাকায় স্ত্রীরা পরকীয়া প্রেমের টানে যেকোনো সময় বিনা বাঁধায় স্বামী-সংসার ছেড়ে চলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে আইনে মেয়েদেরকে বিশেষ সুযোগ দেওয়ায় স্বামীর সংসার ত্যাগ করতে বিন্দু মাত্র দ্বিধাবোধ করছেনা বলে মনে করেন সুশিল সমাজ। তাছাড়া ধর্মীয় অনুশাসন না মানার কারণে তালাকের পরিমাণ ব্যাপকহারে বেড়ে যাচ্ছে বলে অভিমত সচেতন মহলের।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বিবাহ রেজিস্ট্রার এমরান হোসাইন নতুনেরকথাকে বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। গত বছরের চেয়ে এ বছর বিবাহ বিচ্ছেদের হার তুলনামূলক বেশি। বর্তমানে প্রতিবছরেই উপজেলায় প্রায় ৮ শতাধিক তালাক হয়।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহফুজুল হক নতুনেরকথাকে বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ রোধে জেল জরিমানার বিধান রেখে সরকারকে আইন তৈরি করতে হবে। অনেকে সামান্য বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছে। বর্তমানে তালাক জটিলতা আদালতে নিষ্পতি হয় কাবিননামার দুই-তৃতীয়াংশ টাকা পরিশোধের মাধ্যমে। তাই আইনের পরিবর্তনের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে তালাক প্রদানকারীর বিরুদ্ধে জেল ও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হলে বিবাহ বিচ্ছেদ রোধে সহায়ক হবে। এ ছাড়া মানুষের নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা জরুরি।

এই বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব নতুনেরকথাকে বলেন, বর্তমানে সমাজিক অবক্ষয়ের কারনে এই সকল ঘটনা ঘটছে এবং সকল সুশিল সমাজের সচেতনতা জরুরী।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আফরোজ নতুনেরকথাকে বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের প্রধান কারণ হিসেবে স্বামী প্রবাসে থাকায় স্ত্রীরা ফেইজবুক, ইমু, হোয়াটস্ আ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারসহ যোগাযোগ মাধ্যম গুলো। তিনি আরো বলেন, এক্ষেত্রে শুধু স্ত্রী নয়, স্বামীরাও দায়ী। বিবাহ বিচ্ছেদ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সচেতন মহলসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এটি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার প্রতিটি মসজিদের ইমামদের চিঠি প্রেরণ করা হচ্ছে। যেনো তালাকের প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিয়ে ইমামরা প্রতিটি খুৎবায় বয়ান করেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে না-রিজভী

ফরিদগঞ্জে পরকীয়া আর অসামাজিক কার্যকলাপে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ

আপডেট: ০৯:০৭:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০১৯

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:

ধর্মীয় অনুশাসন না মানায় ফরিদগঞ্জে আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে পরকীয়া। আর সেই ঘটনার জের ধরে দিন দিন বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা। এ হার দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পারিবারিক সম্পর্কে টানাপোড়ান সৃষ্টি হচ্ছে। পিতা-মাতা থাকতেও এতিম হচ্ছে বিচ্ছেদ হওয়া পরিবারের সন্তানরা। অযত্নে আর অবহেলায় বেড়ে উঠছে তারা। বিচ্ছেদ হওয়া পিতা-মাতার সন্তানের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।

প্রবাসী অদ্যুষিত এই উপজেলায় বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মোবাইলে পরকীয়া প্রেম, যৌতুক, প্রেমের বিয়ে ও বাল্য বিবাহ এর জন্য অন্যতম কারন।

বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে জরিমানার বিধান থাকলেও শাস্তির বিধান না থাকাতে অনেকে সামান্য কারণেই স্ত্রীকে তালাক দিতে কার্পণ্যবোধ করছে না। এছাড়া স্ত্রীদের যে কোনো সময় স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে যাওয়ার অবারিত সুযোগ থাকায় স্ত্রীরা পরকীয়া প্রেমের টানে যেকোনো সময় বিনা বাঁধায় স্বামী-সংসার ছেড়ে চলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে আইনে মেয়েদেরকে বিশেষ সুযোগ দেওয়ায় স্বামীর সংসার ত্যাগ করতে বিন্দু মাত্র দ্বিধাবোধ করছেনা বলে মনে করেন সুশিল সমাজ। তাছাড়া ধর্মীয় অনুশাসন না মানার কারণে তালাকের পরিমাণ ব্যাপকহারে বেড়ে যাচ্ছে বলে অভিমত সচেতন মহলের।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বিবাহ রেজিস্ট্রার এমরান হোসাইন নতুনেরকথাকে বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। গত বছরের চেয়ে এ বছর বিবাহ বিচ্ছেদের হার তুলনামূলক বেশি। বর্তমানে প্রতিবছরেই উপজেলায় প্রায় ৮ শতাধিক তালাক হয়।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহফুজুল হক নতুনেরকথাকে বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ রোধে জেল জরিমানার বিধান রেখে সরকারকে আইন তৈরি করতে হবে। অনেকে সামান্য বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছে। বর্তমানে তালাক জটিলতা আদালতে নিষ্পতি হয় কাবিননামার দুই-তৃতীয়াংশ টাকা পরিশোধের মাধ্যমে। তাই আইনের পরিবর্তনের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে তালাক প্রদানকারীর বিরুদ্ধে জেল ও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হলে বিবাহ বিচ্ছেদ রোধে সহায়ক হবে। এ ছাড়া মানুষের নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা জরুরি।

এই বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব নতুনেরকথাকে বলেন, বর্তমানে সমাজিক অবক্ষয়ের কারনে এই সকল ঘটনা ঘটছে এবং সকল সুশিল সমাজের সচেতনতা জরুরী।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আফরোজ নতুনেরকথাকে বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের প্রধান কারণ হিসেবে স্বামী প্রবাসে থাকায় স্ত্রীরা ফেইজবুক, ইমু, হোয়াটস্ আ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারসহ যোগাযোগ মাধ্যম গুলো। তিনি আরো বলেন, এক্ষেত্রে শুধু স্ত্রী নয়, স্বামীরাও দায়ী। বিবাহ বিচ্ছেদ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সচেতন মহলসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এটি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার প্রতিটি মসজিদের ইমামদের চিঠি প্রেরণ করা হচ্ছে। যেনো তালাকের প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিয়ে ইমামরা প্রতিটি খুৎবায় বয়ান করেন।