আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী ও দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রভাবশালী নেতা অরুণ জেটলি মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৬।
শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যার কারণে তাকে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স (এআইআইএমএস) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।-খবর এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টুডের
এক বিবৃতিতে হাসপাতালটি জানায়, আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সাবেক অর্থমন্ত্রী শ্রী অরুণ জেটলি ২৪ আগস্ট ১২ টা ৭ মিনিটে মারা গেছেন। গত ৯ আগস্ট তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
গত দুই বছর ধরে অরুণ জেটলির স্বাস্থ্য ভালো যাচ্ছিল না। ২০১৮ সালে তার কিডনি প্রতিস্থাপনে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এরপরেই তিনি নীরব হয়ে যান।
সে সময় শারীরিক অসুস্থতার জেরে জেটলির অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন পীযূষ গোয়েল। কেন্দ্রীয় বাজেটও পেশ করতে পারেননি জেটলি।
তার পরিবর্তে বাজেট পেশ করেন পীযূষ গোয়েল। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি জেটলি। মন্ত্রীত্ব থেকেও অব্যাহতি নেন তিনি।
ডায়াবেটিসের কারণে হওয়া অতিরিক্ত ওজন কমাতে বছর চারেক আগে ২০১৪ সালে তার ব্যারিয়্যাট্রিক অস্ত্রোপচার হয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় আসার প্রথম মেয়াদে তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হন।
কয়েকদিন আগে জানা যায়, দেশটির সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। গত মঙ্গলবার হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিল, অরুণ জেটলিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
অসুস্থতার কারণে মোদীর বিগত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও এবারের সরকারে থাকেননি। সম্প্রতি তিনিও মারা গেছেন।
অরুণ জেটলি পেশাগত জীবনে একজন আইনজীবী ছিলেন। তার বাবা মহারাজ কিষাণ জেটলিও ছিলেন একজন আইনজীবী।
ইন্দিরা গান্ধী সরকারের আমলে জরুরি অবস্থার সময় তাকে জেল খাটতে হয়েছে। তখন তিনি ছাত্রনেতা ছিলেন।
জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ভারতীয় জনসংঘের একজন সদস্য হিসেবে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর দলটিতে বড় পদে আসীন হন তিনি। জনসংঘই পরবর্তী সময়ে বিজেপিতে রূপ নেয়।
১৯৯১ সাল থেকে তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে ছিলেন। ১৯৯৯ সালে বাজপাইর সরকারে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান অরুণ জেটলি। পরে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তার উপর চেপেছিল।
২০০৯ থেকে ২০১৯ সালে বিজেপি বিরোধী দলে ছিল। তখন অরুণ জেটলি রাজ্য সভায় বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেন।
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর তাকে দেখতে গিয়েছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
অরুণ জেটলির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৮ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে। হিসাব বিজ্ঞানে পড়াশোনার পর দিল্লি ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেন অরুণ জেটলি।
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা ছিলেন তিনি। দিল্লি ইউনিভার্সির ছাত্র সংসদের সভাপতিও ছিলেন।
অরুণ জেটলি বিয়ে করেন কাশ্মীরের সাবেক অর্থমন্ত্রী গিরিধারী লাল ডোগরার মেয়ে সঙ্গীতাকে। তাদের দুই ছেলে-মেয়েও আইনজীবী।