আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
কাশ্মীরি জনগণের জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার বিশ্ব মানবতা দিবস উপলক্ষে টুইটারে দেয়া এক বার্তায় এ আহ্বান জানান তিনি।
জম্মু-কাশ্মীরে পুরোপুরিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে মন্তব্য করে এদিন আবারও ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
টুইটারে তিনি লেখেন, আজ বিশ্ব মানবতা দিবস। জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার সম্পূর্ণ লঙ্ঘিত হয়েছে। আসুন কাশ্মীরের মানবাধিকার ও শান্তির জন্য আমরা প্রার্থনা করি।
কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন ও বিশেষ মর্যাদা বাতিলে শুরু থেকেই কেন্দ্রের সমালোচনা করছেন পশ্চিমবঙ্গের এ মুখ্যমন্ত্রী। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের যে সিদ্ধান্ত বিজেপি সরকার নিয়েছে তা না মানারও ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৩৭০ ধারা বিলুপ্তির আইনটি গণতান্ত্রিকভাবে হয়নি দাবি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারত। আমি এ পদ্ধতির সঙ্গে একমত নই। আমাদের দল কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এই বিলকে সমর্থন করতে পারি না।
গত ৫ আগস্ট নরেন্দ্র মোদির সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা (ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ) বাতিল করে দিয়েছে। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি অঞ্চল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হয়েছে।
কাশ্মীরী সংগঠনগুলো বলেছে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের অর্থ হলো সেখানকার অধিবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। আইনটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপত্যাটিকে কয়েক দিন আগে থেকেই কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে।
সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের কারণে স্বায়ত্বশাসন হারায় কাশ্মীরিরা। স্থানীয় বাসিন্দা নন এমন নাগরিকদের সম্পত্তি কেনা ও বিয়ে করার সুযোগ করে দিয়েছে ভারত। এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে কাশ্মীরি জনগণ। তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। অবরোধও চলছে।
এদিকে ওই দিনটি থেকে কাশ্মীরের টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে রেখেছে দিল্লি এবং লোকজনের অবাধ চলাচল ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। দুইজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহসহ কয়েকশ কাশ্মীরি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর বিশ্বের সবচেয়ে সামরিকীকৃত এলাকায় পরিণত হয়েছে। সেনাবাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী ও পুলিশ সদস্য মিলিয়ে সেখানে ৭ লক্ষাধিক নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।