আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরাইলের ‘অপমানজনক ও নিপীড়ক’ শর্ত মেনে পশ্চিম তীর সফরে যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের মুসলিম নারী সদস্য রাশিদা তালিব। খবর হুরিয়াত ডেইলির।
ইসরায়েল রাশিদা তালিবসহ দুই মুসলিম কংগ্রেসম্যানের সেদেশে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর এক টুইটে এ কথা জানান তিনি।
মিশিগান থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য রাশিদা তালিব বলেন, আমাকে অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করে নিষেধাজ্ঞা জারির পর আমাকে নিবৃত্ত করতে সেটি তুলে নিয়েছে ইসরাইল। যে শর্তে আমাকে পশ্চিম তীর যেতে বলা হচ্ছে সেটি অপমানজনক, এটি আমাদের বিশ্বাসের পরিপন্থী। আমি আজীবন বর্ণবাদ, নিপীড়ন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছি। সে কারণে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, দাদিকে নিয়ে পশ্চিম তীর সফরে যাব না।
ইসরাইল শুক্রবার রাশিদা তালিব ও ইলহান ওমরের ওপর পশ্চিম তীর সফরের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে। মানবিক দিক বিবেনায় তেলআবিব এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানিয়েছে।
এর আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের এই দুই মুসলিম নারী সদস্যের ইসরাইল সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তাদের বয়কটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরাইল এই সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী রোববার তাদের তেলআবিব সফরে যাওয়ার কথা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ইলহান ও রাশিদাই প্রথম দুই মুসলিম নারী, যারা কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ইসরাইলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে ইলহান ওমর ও রাশিদা তালিবের তেলআবিব সফরে নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসরাইলের আইন অনুযায়ী, যেসব ব্যক্তি ইসরাইলকে বর্জনের আহ্বান জানান, তাদের ওই দেশে সফর করতে দেয়া হয় না।’
সোমালিয়ার বংশোদ্ভূত ইলহান ওমর এবং ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত রাশিদা তালিব ট্রাম্পের বেশ কিছু নীতির প্রকাশ্য সমালোচক। তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসীবিরোধী এবং মুসলিমবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলেন। ইলহান ওমর মিনেসোটা অঙ্গরাজ্য ও রাশিদা তালিব মিশিগান অঙ্গরাজ্য থেকে কংগ্রেস সদস্য নির্বাচিত হন।
গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটারে এক বার্তা দিয়ে ইসরাইলকে উসকে দেন। তিনি লেখেন- ‘ওই দুই কংগ্রেস সদস্যকে (ইলহান ওমর ও রাশিদা তালিব) ইসরাইল সফরের অনুমতি দেয়া হলে তা হবে ইসরাইলের দুর্বলতা। কারণ তারা ইসরাইল ও সব ইহুদিকে ঘৃণা করেন। কোনোভাবেই তাদের মানসিকতার পরিবর্তন হবে না।
ট্রাম্পের ওই টুইটবার্তার পর ইসরাইল তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কথা জানায়।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিভিন্ন সময়ে ইলহান-রাশিদার মতো অভিবাসনের সুযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে আইনপ্রণেতা নির্বাচিত হওয়া নেতাদের প্রতি বিতর্কিত মন্তব্য করছেন।