অনলাইন ডেস্ক:
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
বেশ কিছু দিন ধরেই কাশ্মীর পরিস্থিতি আলোচনায় আসে। সেখানে হঠাৎ করেই ২৫ হাজার আধাসামারিক সেনা নিয়োগ দেয় মোদী সরকার। গৃহবন্দি করা হয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।
এমন পরিস্থিতিতে সবার মুখে একই প্রশ্ন কী হতে যাচ্ছে কাশ্মীরে? অবশেষে, এর উদ্দের মিলল। বাতিল করা হলো সংবিধানের ৩৭০ ধারা হল। বাতিল হল কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা। এর মধ্য দিয়ে ৬৯ বছরের ইতিহাস বদলে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
তবে এত বড় সিদ্ধান্তের বিষয়টি মোদী সরকারের মন্ত্রীরাও নাকি জানতেন না!
সোমবার যখন অমিত শাহ বিলটি পাশের জন্য রাজ্যসভায় উপস্থানের জন্য যান, তখন শুধু সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী ছিলেন তার সঙ্গে। বাকি মন্ত্রীরা ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে।
সোমবার সকালে সেখানেই জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন মোদী। অধিবেশন শুরুর আধা ঘণ্টা আগেও সংসদে আসার ছাড়পত্র পাননি তারা। কারণ পুরো ঘটনাটি খুব গোপন রাখা হয়েছিল।
গোপনীয়তা শব্দটি যেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে সমার্থক হয়ে উঠেছে। বিজেপির একাধিক সাংসদই বলছেন, শনি ও রবিবারের ছুটি বাতিল করে কেন সাংসদদের প্রশিক্ষণ শিবিরে ডাকা হয়েছিল, তা তারা তখন ক্ষুণাক্ষরেও টের পাননি।
এক মন্ত্রী বলেন, আসলে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাইছিলেন যেন মন্ত্রীরা সবাই দিল্লিতেই থাকেন। সাধারণত শুক্রবার হলে সাংসদরা নিজেদের নির্বাচনী কেন্দ্রে ফিরে যান। আর সোমবার দিল্লি পৌঁছাতে অনেকের দেরি হয়। আমাদের দিল্লিতে রেখে দেওয়া হয়েছে যেন সোমবার সকালেই সবাই হাজির থাকতে পারি।
সোমবার অমিত শাহ সংসদে আসার কিছুক্ষণ পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আসেন। এরপর আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাকি মন্ত্রীরা একেবারে শেষ মুহূর্তে উপস্থিত হন।
এক মন্ত্রী একগাল হেসে বলেন, এমনটা যে হবে, সেটা সকাল সাড়ে ৮টার আগেও ঘুণাক্ষরে জানতে পারিনি। ১১টা পর্যন্ত কাউকে বলা নিষেধ ছিল। বিলে ঠিক কী কী আছে, তার খুঁটিনাটি অবশ্য এখনও জানি না।
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জম্মুর ‘বড়’ নেতা হিসেবে পরিচিত। সোমবারও সাংসদদের কর্মশালায় ছিলেন তিনি। কিন্তু এক ধাক্কায় ৩৭০ ধারা বাতিল করে দেওয়া হবে, সেটা তিনিও টের পাননি।
তিনি বলেন, ভেবেছিলাম বড়জোর ৩৫-এ অনুচ্ছেদ সরানো হতে পারে। সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল এনে, দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের সমর্থন ছাড়াও যে অন্য পথে ৩৭০ অনুচ্ছেদ তোলা যেতে পারে, সে ব্যাপারে কোনও ধারণা ছিল না।