নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। আজ রোববার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৬ জুন থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন এরশাদ। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, সন্তান, স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের রেখে গেছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই রক্তে হিমোগ্লোবিন ও লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন এরশাদ। এর আগে জাপা চেয়ারম্যান সিএমএইচের পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে নিয়মিত শারীরিক চেকআপ করান। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান এরশাদ।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে গত বছরের ২০ নভেম্বর ইমানুয়েল কনভেনশন সেন্টারে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সামনে সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য রাখেন এরশাদ। এর পর অসুস্থতার কারণে আর কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি তিনি। গত ৬ ডিসেম্বর গাড়িতে করে অফিসের সামনে এলেও সেখানে বসে কথা বলেই চলে যান।
সিঙ্গাপুর থেকে ভোটের ৩ দিন আগে ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরলেও কোন নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে যোগ দেননি তিনি। এমনকি নিজের ভোটও দিতে যেতে পারেননি তিনি। আবার ভোটের পর শপথ নেন আলাদা সময়ে গিয়ে। সেদিনও স্পিকারের কক্ষে হাজির হয়েছিলেন হুইল চেয়ারে বসে।
গত ২০ জানুয়ারি ফের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য যান এরশাদ। সেখান থেকে ফেরেন ৪ ফেব্রুয়ারি। তারপর থেকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়নি। সংসদ অধিবেশনে মাত্র একদিনের জন্য হাজির হয়েছিলেন তাও হুইল চেয়ারে ভর করেই।
১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলায় দিনহাটায় জন্মগ্রহণ করেন জাপা চেয়ারম্যান। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৬০ – ১৯৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কেন্দ্রে অ্যাডজুট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১৯৬৬ সালে কোয়েটার স্টাফ কলেজ থেকে স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করেন এরশাদ। ১৯৬৮ সালে তিনি শিয়ালকোটে ৫৪ ব্রিগেডের মেজর ছিলেন। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি লাভের পর ১৯৬৯-১৯৭০ সালে ৩য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট-এর অধিনায়ক ও ১৯৭১ – ১৯৭২ সালে ৭ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর অধিনায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।