ফরিদগঞ্জে পুলিশের চেষ্টায় পাঁচ মাস পর ধরা পড়ল সেই রিমন

  • আপডেট: ০৩:০২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০১৯
  • ৬২

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:
স্বেচ্ছায় আত্মগোপনের ৫ মাস পর চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পুলিশের জালে ধরা পড়ল রিমন। রোববার রাতে প্রেসব্রিফিং করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইন চার্জ আবদুর রকিব ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান।

প্রেসবিফিংয়ে তিনি জানান, সহপাঠির সাথে তিন বছর প্রেম করে বিয়ে, তারপর প্রায় মাসাধিককাল বাসা ভাড়া নিয়ে একত্রে বসবসাসের পর হঠাৎ নিরুদ্দেশ। ছেলে নিঁখোজের কথা উল্লেখ করে ২৩ জানুয়ারী থানায় সাধারন ডায়েরি করার পর ছেলেকে অপহরনের অভিযোগে মায়ের মামলা। গত ২০ মার্চ থানায় এফআইআর হওয়া মামলার আসামী ছেলে রিমনের স্ত্রী চায়না আক্তার, তার মা রোশনারা বেগম। সাথে আরো আসামী করা হয় বিয়ের কাবিন নামার স্বাক্ষী জাকির হোসেন এবং দুই পক্ষ নিয়ে মিমাংসার চেষ্টাকারী এ এম টুটুল পাটওয়ারী নামে একজন ব্যবসায়ী। এরই মধ্যে স্বামীকে হারিয়ে হতাশ স্ত্রী ও সহপাঠি চায়না আক্তার গত ১৩ জুন ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিরুদ্দেশ স্বামীর সন্ধান চায়। তার ৫ দিন পর ১৯ জুন পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে রিমনের মা রওশনারা বেগম অপহরণ মামলার আসামী আটক ও তাদের ছেলেকে উদ্ধারের বিষয়ে পুলিশের গড়িমসির অভিযোগ করে।

কিন্তু এতসব কিছু ঘটনার মধ্যে দিয়েও অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন্ত মুজমদার তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পুলিশের জালে নিয়ে আসতে সক্ষম হন রিমনকে। অবশেষে শুক্রবার দিবাগত রাতে ঢাকার দোহার উপজেলার জয়পাড়া বাজারের একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে দোহার থানা পুলিশের সহায়তায় রিমন উদ্ধার হয়।

তিনি জানান, স্বেচ্ছা আত্মগোপন করার রিফাতুল ইসলাম গতকাল রোববার দুপুরে চাঁদপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি প্রদানের মাধ্যমে এই দীর্ঘ ৫ মাসের নাটকের অবসান ঘটায়।

ওসি জানান, জবানবন্দিতে রিমন জানায় তার পিতার পরামর্শে প্রথমে সে সিলেটের সুনামগঞ্জে পরবর্তীতে ঢাকার দয়াগঞ্জে ও নাজিরা বাজার পর্যায়ক্রমে অবস্থান করে। সর্বশেষ গত ২০ দিন পূর্বে রিমনের বাবা ফারুকুল ইসলাম ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার জয়পাড়া বাজারের জনৈক নুরুল ইসলামের মোবাইল ফোনের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে রেখে আসেন।

সর্বশেষ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সুমন্ত মজুমদার তাকে ফোন ট্র্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাকে জালে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। কিন্তু চতুর রিমন বারংবার তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার চেষ্টা করলেও তাকে উদ্ধার সেখানে হাজির হন তদন্তকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ। গত ২১ জুন দোহার থানা পুলিশের অফিসার নুর খানের সহায়তায় দিনভর জয়পাড়া বাজারে চিরুনী অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা যখন প্রায় ব্যর্থ! তখন ফিরে আসার প্রক্রিয়া কালে সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে কুরিয়ার সার্ভিসের লোক হিসেবে ছদ্ম বেশে রিমনের নাম্বারে ফোন দিলে টোপ গিলে সে। সে কিছুক্ষণ পর তার দোকান মালিককে দিয়েই সে ফোন দিয়ে কুরিয়ারর সার্ভিসের বিষয় জানতে চায়। এই সময় পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে দোহার থানা পুলিশের সহযোগিতায় শুক্রবার গভীর রাতে তাকে ধরতে সমর্থ হয়। প্রেসব্রিফিং কালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন্ত মজুমদারসহ প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুন্নবী নোমান, সাধারণ সম্পাদকসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

ফরিদগঞ্জে পুলিশের চেষ্টায় পাঁচ মাস পর ধরা পড়ল সেই রিমন

আপডেট: ০৩:০২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০১৯

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:
স্বেচ্ছায় আত্মগোপনের ৫ মাস পর চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পুলিশের জালে ধরা পড়ল রিমন। রোববার রাতে প্রেসব্রিফিং করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইন চার্জ আবদুর রকিব ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান।

প্রেসবিফিংয়ে তিনি জানান, সহপাঠির সাথে তিন বছর প্রেম করে বিয়ে, তারপর প্রায় মাসাধিককাল বাসা ভাড়া নিয়ে একত্রে বসবসাসের পর হঠাৎ নিরুদ্দেশ। ছেলে নিঁখোজের কথা উল্লেখ করে ২৩ জানুয়ারী থানায় সাধারন ডায়েরি করার পর ছেলেকে অপহরনের অভিযোগে মায়ের মামলা। গত ২০ মার্চ থানায় এফআইআর হওয়া মামলার আসামী ছেলে রিমনের স্ত্রী চায়না আক্তার, তার মা রোশনারা বেগম। সাথে আরো আসামী করা হয় বিয়ের কাবিন নামার স্বাক্ষী জাকির হোসেন এবং দুই পক্ষ নিয়ে মিমাংসার চেষ্টাকারী এ এম টুটুল পাটওয়ারী নামে একজন ব্যবসায়ী। এরই মধ্যে স্বামীকে হারিয়ে হতাশ স্ত্রী ও সহপাঠি চায়না আক্তার গত ১৩ জুন ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিরুদ্দেশ স্বামীর সন্ধান চায়। তার ৫ দিন পর ১৯ জুন পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে রিমনের মা রওশনারা বেগম অপহরণ মামলার আসামী আটক ও তাদের ছেলেকে উদ্ধারের বিষয়ে পুলিশের গড়িমসির অভিযোগ করে।

কিন্তু এতসব কিছু ঘটনার মধ্যে দিয়েও অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন্ত মুজমদার তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পুলিশের জালে নিয়ে আসতে সক্ষম হন রিমনকে। অবশেষে শুক্রবার দিবাগত রাতে ঢাকার দোহার উপজেলার জয়পাড়া বাজারের একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে দোহার থানা পুলিশের সহায়তায় রিমন উদ্ধার হয়।

তিনি জানান, স্বেচ্ছা আত্মগোপন করার রিফাতুল ইসলাম গতকাল রোববার দুপুরে চাঁদপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি প্রদানের মাধ্যমে এই দীর্ঘ ৫ মাসের নাটকের অবসান ঘটায়।

ওসি জানান, জবানবন্দিতে রিমন জানায় তার পিতার পরামর্শে প্রথমে সে সিলেটের সুনামগঞ্জে পরবর্তীতে ঢাকার দয়াগঞ্জে ও নাজিরা বাজার পর্যায়ক্রমে অবস্থান করে। সর্বশেষ গত ২০ দিন পূর্বে রিমনের বাবা ফারুকুল ইসলাম ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার জয়পাড়া বাজারের জনৈক নুরুল ইসলামের মোবাইল ফোনের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে রেখে আসেন।

সর্বশেষ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সুমন্ত মজুমদার তাকে ফোন ট্র্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাকে জালে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। কিন্তু চতুর রিমন বারংবার তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার চেষ্টা করলেও তাকে উদ্ধার সেখানে হাজির হন তদন্তকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ। গত ২১ জুন দোহার থানা পুলিশের অফিসার নুর খানের সহায়তায় দিনভর জয়পাড়া বাজারে চিরুনী অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা যখন প্রায় ব্যর্থ! তখন ফিরে আসার প্রক্রিয়া কালে সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে কুরিয়ার সার্ভিসের লোক হিসেবে ছদ্ম বেশে রিমনের নাম্বারে ফোন দিলে টোপ গিলে সে। সে কিছুক্ষণ পর তার দোকান মালিককে দিয়েই সে ফোন দিয়ে কুরিয়ারর সার্ভিসের বিষয় জানতে চায়। এই সময় পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে দোহার থানা পুলিশের সহযোগিতায় শুক্রবার গভীর রাতে তাকে ধরতে সমর্থ হয়। প্রেসব্রিফিং কালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন্ত মজুমদারসহ প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুন্নবী নোমান, সাধারণ সম্পাদকসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।