আজ ০৯ এপ্রিল বুধবার, সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই তথ্য তুলে ধরে বলেন, প্রতিবছর ঈদ কেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশংকাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবৎ পর্যবেক্ষণ করে আসছে। তবে এবার দীর্ঘ ছুটির কারনে ধাপে ধাপে বাড়ি ফেরার সুযোগ হওয়ায় ঈদযাত্রা স্বস্থিদায়ক হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলে সংগঠনের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।
ঈদযাত্রা শুরুর দিন ২৪ মার্চ থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ০৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩১৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২২ জন নিহত ৮২৬ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১৩৯৮ জন আহত হয়েছিল। বিগত বছরের সাথে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ২১.০৫ শতাংশ, প্রাণহানী ২০.৮৮ শতাংশ, আহত ৪০.৪১ শতাংশ কমেছে।
এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৭০ জন চালক, ৪৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫০ জন পথচারী, ৬০ জন নারী, ৪০ জন শিশু, ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ২০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ০৬ জন শিক্ষক, ০৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ০১ জন সাংবাদিকের পরিচয় মিলেছে।
দুর্ঘটনার ২৭.৩০ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪২.২২ শতাংশ পথচারীকে গাড়ী চাপা দেয়ার ঘটনা, ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ১.৫৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনে, ০.৩১ শতাংশ চাকায় ওড়না পেছিয়ে ও ৮.৫৭ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারনে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সড়কে মাফিয়া সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ায় এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএসহ আইনশৃংঙ্খলারক্ষাকারি বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকায় সড়কে খানিকটা শৃংঙ্খলা ফিরে এসেছে। দীর্ঘছুটির কারণে ধাপে ধাপে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগানোর কারনে স্বস্থিদায়ক যাতায়াতের পাশাপাশি দুর্ঘটনা কিছুটা কমেছে। এইজন্য অর্ন্তবর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আগামীতে এইধারা অব্যাহত রাখার দাবী জানান। তিনি দক্ষ চালক গড়ে তোলা, উন্নত বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, সড়কে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীকে অনিয়ম দুর্নীতি ও মালিক সমিতির প্রভাব মুক্ত রাখা, মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, নিষিদ্ধ ত্রি-হুইলার, ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলাচল বন্ধ করা, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের আমদানী বন্ধ করে দেশব্যাপী উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।