মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে: শিক্ষামন্ত্রীর বগুড়াকাণ্ডে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট: ০৫:০৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০
  • ৪৭

অনলাইন ডেস্ক:

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সম্প্রতি বগুড়ার পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবন উদ্বোধন করতে গেলে সেখানে উপস্থিত ছাত্রীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখোশ পরে তাকে স্বাগত জানান। এ নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এমন অঘটনে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে শেখ হাসিনা বিরক্তি প্রকাশ করেন। বিষয়টি  সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য।

সূত্র জানায়, বগুড়ার অঘটনে খুবই চটে যান শেখ হাসিনা। দীপু মনির কাছে থেকে এমনটি তিনি আশা করেননি বলেও জানা যায়।

বৈঠকে সব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবদের মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে বাড়তি ব্যয় না করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলা যেখানে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এটাই মুজিববর্ষের চেতনা। এসময় প্রধানমন্ত্রী, সবস্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ না করার নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদিকদের বলেন, ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের একটি কর্মসূচিকে মুজিববর্ষের কর্মসূচি হিসেবে দেখাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে বড় বাজেটের কর্মসূচি না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন বলেও জানান আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, যারা অবসর ভাতা পান তারা যাতে ঘরে বসে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এটা পেতে পারেন, সেজন্য অর্থ মন্ত্রণালয় একটি কর্মসূচি নিয়েছিল আগেই। সেই কর্মসূচিকে মুজিববর্ষের কর্মসূচি হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এ কর্মসূচির জন্য আলাদা খরচ করা লাগবে না। বাড়তি খরচ করা লাগবে এমন কর্মসূচি পরিহার করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে করা জাতীয় কমিটির কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি বাজেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয় কমিটির অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা লাগছে। মূলত খরচ সমন্বয় করতেই বাজেট কমিটি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দলীয় ব্যানারে কিছু কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্দেশ দেওয়া আছে জাতীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে এ দলীয় কর্মসূচি পালন করতে হবে।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সকালে শিক্ষামন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির মুখোশ পরে শিক্ষামন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

ছবি: প্রথম আলো’র সৌজন্যে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগর। বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের তৈরি হতে হবে। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, মুজিববর্ষে মুজিব হব, শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দেব।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সেদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার (সচিব) নজরুল ইসলাম, বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন, পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সফিজুল ইসলাম, বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম ঝুনু প্রমুখ। (দৈনিক শিক্ষা)

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে: শিক্ষামন্ত্রীর বগুড়াকাণ্ডে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: ০৫:০৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সম্প্রতি বগুড়ার পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবন উদ্বোধন করতে গেলে সেখানে উপস্থিত ছাত্রীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখোশ পরে তাকে স্বাগত জানান। এ নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এমন অঘটনে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে শেখ হাসিনা বিরক্তি প্রকাশ করেন। বিষয়টি  সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য।

সূত্র জানায়, বগুড়ার অঘটনে খুবই চটে যান শেখ হাসিনা। দীপু মনির কাছে থেকে এমনটি তিনি আশা করেননি বলেও জানা যায়।

বৈঠকে সব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবদের মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে বাড়তি ব্যয় না করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলা যেখানে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এটাই মুজিববর্ষের চেতনা। এসময় প্রধানমন্ত্রী, সবস্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ না করার নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদিকদের বলেন, ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের একটি কর্মসূচিকে মুজিববর্ষের কর্মসূচি হিসেবে দেখাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে বড় বাজেটের কর্মসূচি না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন বলেও জানান আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, যারা অবসর ভাতা পান তারা যাতে ঘরে বসে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এটা পেতে পারেন, সেজন্য অর্থ মন্ত্রণালয় একটি কর্মসূচি নিয়েছিল আগেই। সেই কর্মসূচিকে মুজিববর্ষের কর্মসূচি হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এ কর্মসূচির জন্য আলাদা খরচ করা লাগবে না। বাড়তি খরচ করা লাগবে এমন কর্মসূচি পরিহার করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে করা জাতীয় কমিটির কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি বাজেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয় কমিটির অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা লাগছে। মূলত খরচ সমন্বয় করতেই বাজেট কমিটি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দলীয় ব্যানারে কিছু কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্দেশ দেওয়া আছে জাতীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে এ দলীয় কর্মসূচি পালন করতে হবে।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সকালে শিক্ষামন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির মুখোশ পরে শিক্ষামন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

ছবি: প্রথম আলো’র সৌজন্যে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগর। বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের তৈরি হতে হবে। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, মুজিববর্ষে মুজিব হব, শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দেব।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সেদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার (সচিব) নজরুল ইসলাম, বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন, পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সফিজুল ইসলাম, বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম ঝুনু প্রমুখ। (দৈনিক শিক্ষা)