অনলাইন ডেস্ক:
দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় আক্রান্ত মুসলিমদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছে শিখ ও দলিত সম্প্রদায়ের লোকেরা। গত চার দিনের সহিংসতায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছে। ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে মুসলিম প্রধান এলাকাগুলো।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, হিন্দু উগ্রবাদীদের হামলায় প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন মুসলিমেরা। এমন পরিস্থিতিতে তাদের আশ্রয় দিতে খুলে দেয়া হয়েছে শিখদের প্রার্থনাস্থল গুরদুয়ারা। ইতিমধ্যে দিল্লির একাধিক এলাকায় গুরদুয়ারাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন বিপুলসংখ্যক মুসলিম।
লেখিকা ও অ্যাকটিভিস্ট নীলাঞ্জনা রায় এক টুইটে জানান, দিল্লির গুরদুয়ারাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। আক্রান্তদের সেখানে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তিনি ইতিমধ্যে একটি গুরদুয়ারা ঘুরেও এসেছেন বলে জানান।
এ ছাড়া উগ্রবাদীদের হামলা থেকে মুসলিমদের বাঁচাতে এলাকাগুলোতে টহল দেয়া শুরু করেছে শিখ লোকেরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষেরাও। নীলাঞ্জনা রায় জানান, সিলামপুরে মুসলিম প্রতিবেশীদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে দলিতরা। উন্মত্ত জনতাকে রাস্তায় আটকে দিয়েছে তারা। তিনি বলেন, ‘পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতারা তাদের দায়িত্ব ভুলে গেছে কিন্তু মানুষ সাহস ও ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে এসেছে।’
প্রসঙ্গত, ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রাজধানী দিল্লিতে কয়েক দশকের মধ্যে নজিরবিহীন সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। টানা চতুর্থ দিনের সহিংসতায় নিহত বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- এসব স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসি বাংলা জানায়, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে দেখা যাচ্ছে। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে বিক্ষোভ বন্ধে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রার আল্টিমেটামের কয়েক ঘণ্টা পর রবিবার রাজধানী দিল্লিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা শুরু করে আইনটির সমর্থকরা।