মতলবে যুবলীগের নেতার বাড়িতে ছাত্রলীগ নেতাদের অস্ত্র মহড়া

  • আপডেট: ০৩:৩৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৯
  • ৮৫

মতলব উত্তর প্রতিনিধি:

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে যুবলীগ নেতার বাড়িতে অস্ত্র মহড়া ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার সময় উপজেলার অলিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য রিয়াজুল হাসান রিয়াজের বাড়িতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি সোটা নিয়ে মহড়া দেয় ছাত্রলীগ নেতারা। ঘটনার পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আবু হানিফ অভিসহ তার নেতৃত্বে প্রায় ২০ টি মোটরসাইকেলে করে প্রায় ৫০-৬০ জন অলিপুর বাজারে এসে রিয়াজের ব্যানার ফেস্টুন ছিঁড়তে থাকে আর গালমন্দ করতে থাকে। এতে বাঁধা দেওয়ায় অলিপুর গ্রামের বাবুর আলীর ছেলে হযরত আলী (৩০), আঃ রহিমের ছেলে দুলাল (৩৫), বদি আলম মজুমদারের ছেলে মেহেদী (১৯), দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সোহেল (২৮) ও গাফফার মজুমদারের ছেলে রাহিম (১৮) কে মারধর করলে তারা আহত আহত হয়ে পড়ে। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এবং গুরুতর আহত হযরত আলীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেন জানান এলাকাবাসী।

আহত স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা দুলাল হোসেন বলেন, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বাঁধা দেওয়ায় আমাকে তারা মারধর করেছে। আমার বুকে ও হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে। একজন আওয়ামীলীগ কর্মী হয়ে ছাত্রলীগের ছেলেদের হাতে মার খেতে হল। এ ধরনের অপরাজনীতির তীব্র নিন্দা জানাই। আহত সোহেল বলেন, আমি দোকানে বসে ছিলাম। হঠাৎ করে তারা অস্ত্র ও লাঠি সোটা নিয়ে এসে বাজারে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করেছে। যাকে সামনে পেয়েছে তাদেরকেই মেরেছে। আমাকেও হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে।

রিয়াজের পিতা মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনার সময় আমি জুমার নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ওই সময় আমার বিল্ডিংয়ের সামনে ছাত্রলীগ নেতা আবু হানিফ অভি ও তার নেতৃত্বে প্রায় ৫০-৬০ জন এসে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছে এবং ঘর ভাংচুর করতে চেয়েছে। বাড়ির লোকজন বাঁধা দেওয়ায় ভাংচুর করতে পারেনি। এর আগে তারা বাজারে যাকে পেয়েছে তাকেই মেরেছে।

রিয়াজের চাচা নূরুল ইসলাম বলেন, গালমন্দ শুনে আমি ঘর থেকে বেরিয়ে আসার পর তারা আমাকে বলে সামনে আসলে গুলি করে দিবে। তাই আমি আর তাদের সামনে যাইনি।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য রিয়াজুল হাসান রিয়াজ মুঠোফোনে বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। মতলবের কারো সাথে আমার কোন দন্দ্ব নেই। কেন তারা আমার এলাকায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানিনা। তবে আমি ফেসবুকে মাদকের বিরুদ্ধে সবসময় ষ্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছি। হয়তো এই লেখালেখির কারনে কারো স্বার্থে আঘাত আনতে পারে।

রিয়াজ আরও বলেন, এ ঘটনাটি আমি স্থানীয় এমপি অ্যাড. নুরুল আমিন রুহুলসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। তারা বলেছেন আমরা বিষয়টি দেখছি। তবে এ ঘটনায় মামলা পক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান রিয়াজ।

তবে এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা আবু হানিফ অভি বলেন, আমি এ ঘটনার সাথে কোন ভাবেই জড়িত নেই। কে বা কাহারা করেছে তাও আমি জানি না।
এদিকে ঘটনার দিন বিকালে অলিপুর বাজার সহ আশপাশের সড়কে এ ঘটনায় জড়িতের বিচার চেয়ে এবং এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। এসময় ছাত্রলীগ নেতা আবু হানিফ অভি সহ যারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ত তাদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে তীব্র নিন্দা জানান বিক্ষোভকারীরা।

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

চাঁদপুরে খাঁটি গরুর দুধ বিক্রর নামে প্রতারণা

মতলবে যুবলীগের নেতার বাড়িতে ছাত্রলীগ নেতাদের অস্ত্র মহড়া

আপডেট: ০৩:৩৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৯

মতলব উত্তর প্রতিনিধি:

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে যুবলীগ নেতার বাড়িতে অস্ত্র মহড়া ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার সময় উপজেলার অলিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য রিয়াজুল হাসান রিয়াজের বাড়িতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি সোটা নিয়ে মহড়া দেয় ছাত্রলীগ নেতারা। ঘটনার পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আবু হানিফ অভিসহ তার নেতৃত্বে প্রায় ২০ টি মোটরসাইকেলে করে প্রায় ৫০-৬০ জন অলিপুর বাজারে এসে রিয়াজের ব্যানার ফেস্টুন ছিঁড়তে থাকে আর গালমন্দ করতে থাকে। এতে বাঁধা দেওয়ায় অলিপুর গ্রামের বাবুর আলীর ছেলে হযরত আলী (৩০), আঃ রহিমের ছেলে দুলাল (৩৫), বদি আলম মজুমদারের ছেলে মেহেদী (১৯), দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সোহেল (২৮) ও গাফফার মজুমদারের ছেলে রাহিম (১৮) কে মারধর করলে তারা আহত আহত হয়ে পড়ে। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এবং গুরুতর আহত হযরত আলীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেন জানান এলাকাবাসী।

আহত স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা দুলাল হোসেন বলেন, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বাঁধা দেওয়ায় আমাকে তারা মারধর করেছে। আমার বুকে ও হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে। একজন আওয়ামীলীগ কর্মী হয়ে ছাত্রলীগের ছেলেদের হাতে মার খেতে হল। এ ধরনের অপরাজনীতির তীব্র নিন্দা জানাই। আহত সোহেল বলেন, আমি দোকানে বসে ছিলাম। হঠাৎ করে তারা অস্ত্র ও লাঠি সোটা নিয়ে এসে বাজারে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করেছে। যাকে সামনে পেয়েছে তাদেরকেই মেরেছে। আমাকেও হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে।

রিয়াজের পিতা মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনার সময় আমি জুমার নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ওই সময় আমার বিল্ডিংয়ের সামনে ছাত্রলীগ নেতা আবু হানিফ অভি ও তার নেতৃত্বে প্রায় ৫০-৬০ জন এসে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছে এবং ঘর ভাংচুর করতে চেয়েছে। বাড়ির লোকজন বাঁধা দেওয়ায় ভাংচুর করতে পারেনি। এর আগে তারা বাজারে যাকে পেয়েছে তাকেই মেরেছে।

রিয়াজের চাচা নূরুল ইসলাম বলেন, গালমন্দ শুনে আমি ঘর থেকে বেরিয়ে আসার পর তারা আমাকে বলে সামনে আসলে গুলি করে দিবে। তাই আমি আর তাদের সামনে যাইনি।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য রিয়াজুল হাসান রিয়াজ মুঠোফোনে বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। মতলবের কারো সাথে আমার কোন দন্দ্ব নেই। কেন তারা আমার এলাকায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানিনা। তবে আমি ফেসবুকে মাদকের বিরুদ্ধে সবসময় ষ্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছি। হয়তো এই লেখালেখির কারনে কারো স্বার্থে আঘাত আনতে পারে।

রিয়াজ আরও বলেন, এ ঘটনাটি আমি স্থানীয় এমপি অ্যাড. নুরুল আমিন রুহুলসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। তারা বলেছেন আমরা বিষয়টি দেখছি। তবে এ ঘটনায় মামলা পক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান রিয়াজ।

তবে এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা আবু হানিফ অভি বলেন, আমি এ ঘটনার সাথে কোন ভাবেই জড়িত নেই। কে বা কাহারা করেছে তাও আমি জানি না।
এদিকে ঘটনার দিন বিকালে অলিপুর বাজার সহ আশপাশের সড়কে এ ঘটনায় জড়িতের বিচার চেয়ে এবং এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। এসময় ছাত্রলীগ নেতা আবু হানিফ অভি সহ যারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ত তাদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে তীব্র নিন্দা জানান বিক্ষোভকারীরা।

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।