আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অভাবের সংসার। সন্তানদের ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অবশেষে নিজের মাথার চুল বিক্রি করে দিলেন এক ভারতীয় বিধবা। দেশটির তামিলনাড়ুর সালেমে এমন ঘটনা ঘটেছে। কলকাতা টোয়েন্টিফোর ও সংবাদ প্রতিদিনের খবরে এমন তথ্য মিলেছে।
প্রেমা নামের এই নারীর স্বামী সেলভামের মৃত্যুর পর একেবারে কপর্দকশূন্য হয়ে পড়ে তাদের সংসার। তিন সন্তানকে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ে যান তিন। ছেলেদের বয়স পাঁচ, তিন ও দুই বছর।
খবরে জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। হঠাৎই প্রেমার স্বামী ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আড়াই লাখ টাকা ধার করে ব্যবসা শুরুও করেছিলেন। কিন্তু প্রতারকের ফাঁদে পা দিয়ে ধার দেনায় ডুবে যান তিনি।
এরপর পাওনাদারদের চাপে কয়েকমাস আগে আত্মহত্যার করেন প্রেমার স্বামী। তার মৃত্যুর পর তিন সন্তানকে নিয়ে অথৈ সাগরে পড়তে হয় ওই নারীকে। প্রথম দিকে সন্তানদের নিয়ে কোনওক্রমে চলে গেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের দায়িত্ব পালন প্রেমার কাছে কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
সন্তানদের ক্ষুধার জ্বালা সইত না পেরে পরিচিত জনদের কাছে হাত পেতেও কোনো সহায়তা পাননি তিনি। এরপর যখন এক চুল ক্রেতা পরচুলা বানানোর জন্য চুল কিনতে আসে, তখন প্রেমা দ্রুত সেই ব্যক্তির কাছে ছুটে যান।
মাত্র দেড়শ টাকার বিনিময়ে মাথার চুল বিক্রি করেন প্রেমা। এরপর ১০০ টাকা দিয়ে খাবার ও বাকিটা দিয়ে তিনি কীটনাশক কিনতে যান। এতে সন্দেহ হয় দোকানির। তিনি তাকে কীটনাশক দিতে অস্বীকার করেন।
শেষ পর্যন্ত অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেও ভাগ্যগুণে সেখানে তার বোন এসে পড়েন তখন এবং তাকে নিবৃত্ত করেন। পরে এই ঘটনা সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেই অনেকেই তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন। এক ব্যক্তি তাকে একটি চাকরিও দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি যাতে বিধবা ভাতা পান সে ব্যাপারেও নিশ্চিত করা হয়েছে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।