আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অংশ হিসেবে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে: রতন

  • আপডেট: ০৩:৫৫:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০১৯
  • ২৯

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ফরিদগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (বিআরডিবি) ও ফরিদগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন রতন জুয়া খেলায় তাকেসহ ৪জন আটকের ঘটনা নিয়ে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বিআরডিবির সভাপতির কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমানে আওয়ামীলীগ এখন একটি সুসংগঠিত দল। এই দলের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করতে নানাভাবে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র চলছে। আমি উপজেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক, পরবর্তীতে উপজেলা যুব লীগের সভাপতি এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হই। সর্বশেষ ভোটের মাধ্যমে বিআরডিবির সভাপতি পদে নির্বাচিত হই। আমি বঙ্গবন্ধু আদর্শের সৈনিক ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে বিশ্বাস করি।

বিগত সময়ের মতো তাই আমি দলের পদে অধিষ্ঠিত হয়ে এবং বিআডিবির সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান তুলে ধরি। দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান, যে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে উন্মুক্ত ভাবে কথা বলায় অনেকের বিরাগভাজন হয়েছি। বিএনপি জামাত জোটের নেতাকর্মীদের প্রতিষ্ঠিত করা, প্রধান মন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে তাদের নামে অর্থ সহায়তা আনাসহ নানা বিষয়ে আমি ছিলাম সব সময়ে সোচ্চার। এছাড়া বিআরডিবির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত ৯ বছরে প্রতিষ্ঠানটিতে ঘটে যাওয়া সকল অনিয়ম একের পর এক উঠিয়ে নিয়ে চেষ্টা করছি। কারণ জনগণের আমানত যেভাবে খেয়ানত হয়েছে, তার প্রতিকার করা।

এতেই আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে প্রতিপক্ষরা। ফরিদগঞ্জের সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিআরডিবির সাবেক সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী এবং বিআরডিবির নির্বাচনে আমার সাথে পরাজিতরাসহ একটি চক্র ষড়যন্ত্রের লিপ্ত হয়। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অংশ হিসেবে আমাকে ফাঁসানোর নীল নকশা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা সাজানো নাটক সাজিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে ।

তিনি বলেন, গত ৩১ অক্টোবর দিন আমার ছোট ভাইয়ের বিবাহত্তোর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানটি শেষ করে আমি রাতে আমার অফিসে বসে অনুষ্ঠানের খরচাদি বিভিন্নজনকে প্রদান করছিলাম। আমার সাথে সহযোগিতার জন্য এসময় আমার পৌর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্ব পালনকারী বিল্লাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন স্বপন ও মামুনুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।

এই সময়েই হঠাৎ করেই এসআই আনিছের নেতৃত্বে ৭/৮জন পুলিশ রুমে প্রবেশ করেই আনোয়ার হোসেন ও মামুনুর রশিদকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে ফেলে। আমরা কথা বলার চেষ্টা করলেও গুলি করার হুমকি দিয়ে আমার পকেট থেকে রক্ষিত টাকা বের করে, পরবর্তীতে ছবি তুলে আমাকে টেনে হিচঁড়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি থানায় গিয়ে ওসি সাহেবকে ঘটনা জানালেও তিনি বলেন, আমার কিছু করার নেই উপরের নিদের্শ রয়েছে। ফলে আমি বুঝতে পারি এটি একটি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র । আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় আমি সবকিছুই মেনে নেই। ঘটনাটির কিছুক্ষনের মধ্যেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে চলে আসার বিষয়টি আমাকে ষড়যন্ত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
তিনি বলেন, আমি বর্তমানে ওই মামলায় জামিনে রয়েছি। চেষ্টা হয়েছিল আমি জুয়া খেলার কথা স্বীকার করে জেল জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেলে তাদের সুবিধা হবে। আমাকে জুয়াড়ী হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। কিন্তু আমি যেহেতু এই কার্য করি নি। তাই আমি সেই পথে যাই নি। তিনি জানান, আদালত তাকে জামিন দেয়ার পর জেল সুপারের কাছে প্রেরিত জামিনের কাগজ ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল করা হয়। মামলা নং, আমার নাম এবং আমার ছেলের নাম ভুল লেখাও একটি ষড়যন্ত্র বলে আমার মনে হয়েছে।
মোট কথা আওয়ামী লীগ নিয়ে ফরিদগঞ্জে অপরাজনীতি শুরু হয়েছে। কিন্তু আমি দলের একজন কর্মী হিসেবে এটা মেনে নিতে পারি না। আমি বিআরডিবির মতো একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নীতি আদর্শ বিবর্জিত রাজনীতি করি না এবং করতে দিবো না। আগামী দিনগুলোতে যেন এভাবে কেউ চক্রান্তের শিকার না হয় সেই ব্যাপারে সাংবাদিক মহল ও নেতাকর্মীরা সজাগ দৃষ্টি রাখবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
লিখিত বক্তব্য শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিগত দিনগুলোতে কারা এবং বিএনপি জামাত জোটের নেতাকর্মীদের পুর্নবাসিত করেছে, কারা চাকুরি দিয়েছে এবং বিআরডিবির গত ৯ বছরের সকল অনিয়ম জনসম্মুখে তুলে ধরা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুব লীগের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন,আলআমিন পাটওয়ারী, সদস্য মাসুদ আলম আয়াত, পৌর আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের সভাপতি ও সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে না-রিজভী

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অংশ হিসেবে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে: রতন

আপডেট: ০৩:৫৫:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০১৯

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ফরিদগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (বিআরডিবি) ও ফরিদগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন রতন জুয়া খেলায় তাকেসহ ৪জন আটকের ঘটনা নিয়ে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বিআরডিবির সভাপতির কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমানে আওয়ামীলীগ এখন একটি সুসংগঠিত দল। এই দলের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করতে নানাভাবে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র চলছে। আমি উপজেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক, পরবর্তীতে উপজেলা যুব লীগের সভাপতি এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হই। সর্বশেষ ভোটের মাধ্যমে বিআরডিবির সভাপতি পদে নির্বাচিত হই। আমি বঙ্গবন্ধু আদর্শের সৈনিক ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে বিশ্বাস করি।

বিগত সময়ের মতো তাই আমি দলের পদে অধিষ্ঠিত হয়ে এবং বিআডিবির সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান তুলে ধরি। দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান, যে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে উন্মুক্ত ভাবে কথা বলায় অনেকের বিরাগভাজন হয়েছি। বিএনপি জামাত জোটের নেতাকর্মীদের প্রতিষ্ঠিত করা, প্রধান মন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে তাদের নামে অর্থ সহায়তা আনাসহ নানা বিষয়ে আমি ছিলাম সব সময়ে সোচ্চার। এছাড়া বিআরডিবির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত ৯ বছরে প্রতিষ্ঠানটিতে ঘটে যাওয়া সকল অনিয়ম একের পর এক উঠিয়ে নিয়ে চেষ্টা করছি। কারণ জনগণের আমানত যেভাবে খেয়ানত হয়েছে, তার প্রতিকার করা।

এতেই আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে প্রতিপক্ষরা। ফরিদগঞ্জের সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিআরডিবির সাবেক সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী এবং বিআরডিবির নির্বাচনে আমার সাথে পরাজিতরাসহ একটি চক্র ষড়যন্ত্রের লিপ্ত হয়। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অংশ হিসেবে আমাকে ফাঁসানোর নীল নকশা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা সাজানো নাটক সাজিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে ।

তিনি বলেন, গত ৩১ অক্টোবর দিন আমার ছোট ভাইয়ের বিবাহত্তোর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানটি শেষ করে আমি রাতে আমার অফিসে বসে অনুষ্ঠানের খরচাদি বিভিন্নজনকে প্রদান করছিলাম। আমার সাথে সহযোগিতার জন্য এসময় আমার পৌর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্ব পালনকারী বিল্লাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন স্বপন ও মামুনুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।

এই সময়েই হঠাৎ করেই এসআই আনিছের নেতৃত্বে ৭/৮জন পুলিশ রুমে প্রবেশ করেই আনোয়ার হোসেন ও মামুনুর রশিদকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে ফেলে। আমরা কথা বলার চেষ্টা করলেও গুলি করার হুমকি দিয়ে আমার পকেট থেকে রক্ষিত টাকা বের করে, পরবর্তীতে ছবি তুলে আমাকে টেনে হিচঁড়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমি থানায় গিয়ে ওসি সাহেবকে ঘটনা জানালেও তিনি বলেন, আমার কিছু করার নেই উপরের নিদের্শ রয়েছে। ফলে আমি বুঝতে পারি এটি একটি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র । আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় আমি সবকিছুই মেনে নেই। ঘটনাটির কিছুক্ষনের মধ্যেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে চলে আসার বিষয়টি আমাকে ষড়যন্ত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
তিনি বলেন, আমি বর্তমানে ওই মামলায় জামিনে রয়েছি। চেষ্টা হয়েছিল আমি জুয়া খেলার কথা স্বীকার করে জেল জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেলে তাদের সুবিধা হবে। আমাকে জুয়াড়ী হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। কিন্তু আমি যেহেতু এই কার্য করি নি। তাই আমি সেই পথে যাই নি। তিনি জানান, আদালত তাকে জামিন দেয়ার পর জেল সুপারের কাছে প্রেরিত জামিনের কাগজ ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল করা হয়। মামলা নং, আমার নাম এবং আমার ছেলের নাম ভুল লেখাও একটি ষড়যন্ত্র বলে আমার মনে হয়েছে।
মোট কথা আওয়ামী লীগ নিয়ে ফরিদগঞ্জে অপরাজনীতি শুরু হয়েছে। কিন্তু আমি দলের একজন কর্মী হিসেবে এটা মেনে নিতে পারি না। আমি বিআরডিবির মতো একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নীতি আদর্শ বিবর্জিত রাজনীতি করি না এবং করতে দিবো না। আগামী দিনগুলোতে যেন এভাবে কেউ চক্রান্তের শিকার না হয় সেই ব্যাপারে সাংবাদিক মহল ও নেতাকর্মীরা সজাগ দৃষ্টি রাখবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
লিখিত বক্তব্য শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিগত দিনগুলোতে কারা এবং বিএনপি জামাত জোটের নেতাকর্মীদের পুর্নবাসিত করেছে, কারা চাকুরি দিয়েছে এবং বিআরডিবির গত ৯ বছরের সকল অনিয়ম জনসম্মুখে তুলে ধরা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুব লীগের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন,আলআমিন পাটওয়ারী, সদস্য মাসুদ আলম আয়াত, পৌর আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের সভাপতি ও সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।