পদ্মা-মেঘনার ইলিশে সয়লাব চাঁদপুরের মাছ ঘাট

  • আপডেট: ০২:৫০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০১৯
  • ৩২

মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ॥
পদ্মা মেঘনার ইলিশে সয়লাব চাঁদপুরের মাছ ঘাট। এযেন রুপালি ইলিশের হাট। নতুন চেহারায় ফিরে এসেছে ইলিশের বাড়ী খ্যাত চাঁদপুর। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় পরই মাছ ধরতে নেমেছেন চাঁদপুরের জেলেরা। এতে জালে ধরা পড়া ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। আর এসব ইলিশ নিয়ে মোকামে ফিরছেন তারা। কাঙ্খিত ইলিশ পেয়ে জেলে-ফিশিং ট্রলার মালিক ও মৎস্য আড়তদারদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর প্রজনন মৌসুমের পূর্বে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার জেলেরা ছিল হতাশ। নদীতে জাল ফেলে রুপালি ইলিশের দেখা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাদের। দায়-দেনার দায়ে অনেক জেলে জর্জরিত।

এরই মধ্যে ২২ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর মাছ ধরতে নেমেই কাঙ্খিত ইলিশ ধরা দিচ্ছে জেলেদের জালে। প্রথম দিন থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। আর মাছ পেয়ে সন্তুষ্ট জেলেরা।

চাঁদপুরের প্রধান পাইকারি ইলিশের বাজার বড়স্টেশন মাছঘাটই শুধু নয়, জেলার দক্ষিণের হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী, কাটাখালী, বাবুরবাজার এমন কি ষাটনল পর্যন্ত ছোটবড় মোকামগুলোও ইলিশে সয়লাব।

চাঁদপুর মাছঘাটে যেসব ইলিশ উঠছে, তার অধিকাংশই চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ধরা পড়েছে। পদ্মার ইলিশের মাছের সুখ্যাতি থাকায় দামও একটু ছড়া।

তরতাজা মাছ কিনতে অনেক সাধারণ ক্রেতাও ভিড় করছেন মোকামে। পাইকাররা মাছ কিনে বরফ দিয়ে সাজিয়ে বাতাস নিরোধক কার্টনে ভর্তি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। আড়তদার, জেলে ও ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত প্রতিটি মোকাম।

জেলেরা জানালেন, ২২ দিনের অভিযানের পর স্থানীয় নদীতেই ধরা পড়েছে প্রচুর ইলিশ। ছোট ছোট ইলিশের সঙ্গে বড় আকারের ডিমওয়ালা ইলিশও ধরা পড়ছে।

একজন জেলে বলেন, ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় কয়েকদিন পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকটা কষ্ট করতে হয়েছে। অবশেষে নিষেধাজ্ঞা শেষে জালে মাছ পড়তে শুরু করছে। এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। মাছের প্রচুর সরবরাহ থাকায় জেলেদের মতো খুশি মাছ ব্যবসায়ীরাও।

জামালসহ বেশ কয়েকজন ইলিশ ব্যবসায়ী বলেন, তারা জেলেদের কোটি কোটি টাকা দাদন দিয়েছেন। এরপর ইলিশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ইলিশ ধরতে না পারায় ২২ দিন ধরে মাছঘাটে ইলিশ ছিল না। দুই দিন আগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে তারা খুশি।

কাওসার নামে একজন বিক্রেতা বলেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ ভালো। দামও অনেকটা সস্তা। কিছু দিনের মধ্যে ইলিশের দাম আরও কমে যাবে।

সবার সহযোগিতায় ইলিশ সংরক্ষণ ও উৎপাদন ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে জানান জেলার মৎস্য কর্মকর্তা।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী বলেন, মার্চ-এপ্রিল আমাদের যে জাটকা অভিযান চলবে, এটাকে যদি আমরা সঠিকভাবে বজায় রাখতে পারি তাহলে আমাদের ইলিশের উৎপাদন অব্যাহত থাকবে।

চাঁদপুরের মৎস্য আড়ৎদার হাজী আবদুল মালেক জানান পদ্মা-মেঘনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তাই মাছ ঘাট জমজমান। তিনি জানান, দক্ষিণাঞ্চলের মাছ না আসায় মাছের দাম একটু ছড়া। তবে দক্ষিণাঞ্চলের মাছ আসলে দাম কমে যাবে। বর্তমানে এখানে ইলিশের মন প্রকার ভেদে ১৮ হাজার, ২৬ হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। আর ননগ্রেডগুলো ১৪ হাজার/১৬ হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

পদ্মা-মেঘনার ইলিশে সয়লাব চাঁদপুরের মাছ ঘাট

আপডেট: ০২:৫০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০১৯

মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ॥
পদ্মা মেঘনার ইলিশে সয়লাব চাঁদপুরের মাছ ঘাট। এযেন রুপালি ইলিশের হাট। নতুন চেহারায় ফিরে এসেছে ইলিশের বাড়ী খ্যাত চাঁদপুর। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় পরই মাছ ধরতে নেমেছেন চাঁদপুরের জেলেরা। এতে জালে ধরা পড়া ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। আর এসব ইলিশ নিয়ে মোকামে ফিরছেন তারা। কাঙ্খিত ইলিশ পেয়ে জেলে-ফিশিং ট্রলার মালিক ও মৎস্য আড়তদারদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর প্রজনন মৌসুমের পূর্বে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার জেলেরা ছিল হতাশ। নদীতে জাল ফেলে রুপালি ইলিশের দেখা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাদের। দায়-দেনার দায়ে অনেক জেলে জর্জরিত।

এরই মধ্যে ২২ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর মাছ ধরতে নেমেই কাঙ্খিত ইলিশ ধরা দিচ্ছে জেলেদের জালে। প্রথম দিন থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। আর মাছ পেয়ে সন্তুষ্ট জেলেরা।

চাঁদপুরের প্রধান পাইকারি ইলিশের বাজার বড়স্টেশন মাছঘাটই শুধু নয়, জেলার দক্ষিণের হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী, কাটাখালী, বাবুরবাজার এমন কি ষাটনল পর্যন্ত ছোটবড় মোকামগুলোও ইলিশে সয়লাব।

চাঁদপুর মাছঘাটে যেসব ইলিশ উঠছে, তার অধিকাংশই চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ধরা পড়েছে। পদ্মার ইলিশের মাছের সুখ্যাতি থাকায় দামও একটু ছড়া।

তরতাজা মাছ কিনতে অনেক সাধারণ ক্রেতাও ভিড় করছেন মোকামে। পাইকাররা মাছ কিনে বরফ দিয়ে সাজিয়ে বাতাস নিরোধক কার্টনে ভর্তি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। আড়তদার, জেলে ও ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত প্রতিটি মোকাম।

জেলেরা জানালেন, ২২ দিনের অভিযানের পর স্থানীয় নদীতেই ধরা পড়েছে প্রচুর ইলিশ। ছোট ছোট ইলিশের সঙ্গে বড় আকারের ডিমওয়ালা ইলিশও ধরা পড়ছে।

একজন জেলে বলেন, ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় কয়েকদিন পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকটা কষ্ট করতে হয়েছে। অবশেষে নিষেধাজ্ঞা শেষে জালে মাছ পড়তে শুরু করছে। এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। মাছের প্রচুর সরবরাহ থাকায় জেলেদের মতো খুশি মাছ ব্যবসায়ীরাও।

জামালসহ বেশ কয়েকজন ইলিশ ব্যবসায়ী বলেন, তারা জেলেদের কোটি কোটি টাকা দাদন দিয়েছেন। এরপর ইলিশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ইলিশ ধরতে না পারায় ২২ দিন ধরে মাছঘাটে ইলিশ ছিল না। দুই দিন আগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে তারা খুশি।

কাওসার নামে একজন বিক্রেতা বলেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ ভালো। দামও অনেকটা সস্তা। কিছু দিনের মধ্যে ইলিশের দাম আরও কমে যাবে।

সবার সহযোগিতায় ইলিশ সংরক্ষণ ও উৎপাদন ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে জানান জেলার মৎস্য কর্মকর্তা।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী বলেন, মার্চ-এপ্রিল আমাদের যে জাটকা অভিযান চলবে, এটাকে যদি আমরা সঠিকভাবে বজায় রাখতে পারি তাহলে আমাদের ইলিশের উৎপাদন অব্যাহত থাকবে।

চাঁদপুরের মৎস্য আড়ৎদার হাজী আবদুল মালেক জানান পদ্মা-মেঘনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তাই মাছ ঘাট জমজমান। তিনি জানান, দক্ষিণাঞ্চলের মাছ না আসায় মাছের দাম একটু ছড়া। তবে দক্ষিণাঞ্চলের মাছ আসলে দাম কমে যাবে। বর্তমানে এখানে ইলিশের মন প্রকার ভেদে ১৮ হাজার, ২৬ হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। আর ননগ্রেডগুলো ১৪ হাজার/১৬ হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।