ঢাকা থেকে কুমিল্লায় ৮ ঘন্টার পথ পাড়ি দিচ্ছে দেড় ঘণ্টায়

  • আপডেট: ১১:০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০১৯
  • ৫৮

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা ও গোমতী নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু  শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। আর কিছুদিন আগে চালু হয়েছে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর নতুন এই তিনটি সেতু নির্মাণের সুফল পেতে শুরু করেছে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্রগ্রামসহ অত্র অঞ্চলের মানুষ।

 শনিবার ও আজ রোববার ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। অথচ এই পথ পাড়ি দিতে আগে কখনো কখনো ৮ থেকে ১০ ঘণ্টাও লাগত। সেতুর কাছে গাড়ির লম্বা লাইন না থাকলে সাধারণত তিন থেকে চার ঘণ্টায় পৌঁছাতেন যাত্রীরা। যানজট এড়িয়ে দ্রুত পৌঁছানোর জন্য ভোরে রওনা দিতেন অনেকেই। তবে সব সময় সেই চেষ্টাও কাজে আসত না।

ঢাকা থেকে কুমিল্লার দূরত্ব ৯৭ কিলোমিটার। গাড়ির চালকেরা বলছেন, এই পথ পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা লাগার কথা। দেড় ঘণ্টায়ও যাওয়া যায়। কিন্তু তিনটি নদীর ওপর এত দিন দুই লেনের একটি করে সেতু থাকার কারণে কুমিল্লায় যেতে কত সময় লাগবে, তা কেউই বলতে পারতেন না। মেঘনা ও গোমতী সেতুতে ওঠার আগে টোল প্লাজায় আটকা পড়তে হবে কিনা, এমন আশঙ্কা নিয়েই যাত্রা শুরু করতেন যাত্রীরা।

সেতু চালু হওয়ার পর গতকাল শনিবার ছুটির দিন থেকে আজ রোববার পর্যন্ত মহাসড়কে কোনো যানজট নেই। এতে ঘুরমুখো যাত্রী, চালক, পরিবহন মালিকেরা খুশি। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুটি সেতুর উদ্বোধন করেন।

এই দুই দিনে ঢাকা থেকে কুমিল্লায় পৌঁছানো কয়েকজন বাসচালক ও যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতু দুটি চালু হওয়ার পর চিরচেনা যানজট নেই। গতকাল মহাসড়ক ছিল প্রায় ফাঁকা। আজ সকাল ১০টায় কুমিল্লার শাসনগাছা বাস টার্মিনাল ও আশ্রাফপুর বাস টার্মিনালে চালক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে ঢাকা যেতে সর্বোচ্চ আট থেকে দশ ঘণ্টা লেগে যেত। কোনো যানজট না থাকলে দুই ঘণ্টার বেশি লাগত। দুই সেতুর ওপরে বাস উঠতে গেলেই যানজট হতো। শনিবার থেকে সেটি আর নেই।

শাসনগাছা তিশা পরিবহনের ব্যবস্থাপক (সেলস) কাউছার আহমেদ বলেন, এই দুই দিন দেড় ঘণ্টায় ঢাকা থেকে কুমিল্লায় আসা যাচ্ছে। তবে তিনি জানান, সময় কম লাগলেও ভাড়া কমবে না।

এশিয়া লাইন পরিবহনের ব্যবস্থাপক ইউসুফ খান বলেন, ‘কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতু পর্যন্ত যেতে সময় লাগে এখন ৪৫ মিনিট। বাকি ৪৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছা যায়। ৯৭ কিলোমিটারের ভাড়া আসে ২০৩ টাকা। আমরা যাত্রীদের কাছ থেকে নিচ্ছি ২০০ টাকা করে। ভাড়া কমবে না। যাত্রীরা আরামে আসবে। দূরত্ব তো কমেনি।’

তিশা বাসের চালক শাকিল খান বলেন, ‘মাত্র দেড় ঘণ্টায় আমরা ঢাকায় আসা-যাওয়া করতে পারছি। রাস্তা ফাঁকাই বলা চলে।’ আশ্রাফপুর বাস টার্মিনালে রয়েল কোচের যাত্রী আলতাফ হোসেন, আতিকুর রহমান ও সালমা বেগম বলেন, আজ ঢাকা থেকে আসতে সব মিলে তাদের এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট লেগেছে। তাঁরা বলেন, তাদের খুবই ভালো লাগছে।

এশিয়া এয়ারকন পরিবহনের যাত্রী মজিবুর রহমান বলেন, আগে দাউদকান্দির গৌরিপুর গেলেই যানজটে পড়তে হতো। দুই সেতুর কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো। এখন আর সেটি হবে না। আরামে ঢাকা থেকে এসেছেন বলে জানালেন।

কুমিল্লা জেলা রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (বিআরটিএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, সেতু দুটি উদ্বোধনের পর দেশের পূর্বাঞ্চলের মানুষ দুই সেতুর সুফল পাচ্ছে। এখন আর যানজট থাকবে না।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

ঢাকা থেকে কুমিল্লায় ৮ ঘন্টার পথ পাড়ি দিচ্ছে দেড় ঘণ্টায়

আপডেট: ১১:০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা ও গোমতী নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু  শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। আর কিছুদিন আগে চালু হয়েছে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর নতুন এই তিনটি সেতু নির্মাণের সুফল পেতে শুরু করেছে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্রগ্রামসহ অত্র অঞ্চলের মানুষ।

 শনিবার ও আজ রোববার ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। অথচ এই পথ পাড়ি দিতে আগে কখনো কখনো ৮ থেকে ১০ ঘণ্টাও লাগত। সেতুর কাছে গাড়ির লম্বা লাইন না থাকলে সাধারণত তিন থেকে চার ঘণ্টায় পৌঁছাতেন যাত্রীরা। যানজট এড়িয়ে দ্রুত পৌঁছানোর জন্য ভোরে রওনা দিতেন অনেকেই। তবে সব সময় সেই চেষ্টাও কাজে আসত না।

ঢাকা থেকে কুমিল্লার দূরত্ব ৯৭ কিলোমিটার। গাড়ির চালকেরা বলছেন, এই পথ পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা লাগার কথা। দেড় ঘণ্টায়ও যাওয়া যায়। কিন্তু তিনটি নদীর ওপর এত দিন দুই লেনের একটি করে সেতু থাকার কারণে কুমিল্লায় যেতে কত সময় লাগবে, তা কেউই বলতে পারতেন না। মেঘনা ও গোমতী সেতুতে ওঠার আগে টোল প্লাজায় আটকা পড়তে হবে কিনা, এমন আশঙ্কা নিয়েই যাত্রা শুরু করতেন যাত্রীরা।

সেতু চালু হওয়ার পর গতকাল শনিবার ছুটির দিন থেকে আজ রোববার পর্যন্ত মহাসড়কে কোনো যানজট নেই। এতে ঘুরমুখো যাত্রী, চালক, পরিবহন মালিকেরা খুশি। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুটি সেতুর উদ্বোধন করেন।

এই দুই দিনে ঢাকা থেকে কুমিল্লায় পৌঁছানো কয়েকজন বাসচালক ও যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতু দুটি চালু হওয়ার পর চিরচেনা যানজট নেই। গতকাল মহাসড়ক ছিল প্রায় ফাঁকা। আজ সকাল ১০টায় কুমিল্লার শাসনগাছা বাস টার্মিনাল ও আশ্রাফপুর বাস টার্মিনালে চালক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে ঢাকা যেতে সর্বোচ্চ আট থেকে দশ ঘণ্টা লেগে যেত। কোনো যানজট না থাকলে দুই ঘণ্টার বেশি লাগত। দুই সেতুর ওপরে বাস উঠতে গেলেই যানজট হতো। শনিবার থেকে সেটি আর নেই।

শাসনগাছা তিশা পরিবহনের ব্যবস্থাপক (সেলস) কাউছার আহমেদ বলেন, এই দুই দিন দেড় ঘণ্টায় ঢাকা থেকে কুমিল্লায় আসা যাচ্ছে। তবে তিনি জানান, সময় কম লাগলেও ভাড়া কমবে না।

এশিয়া লাইন পরিবহনের ব্যবস্থাপক ইউসুফ খান বলেন, ‘কুমিল্লা থেকে দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতু পর্যন্ত যেতে সময় লাগে এখন ৪৫ মিনিট। বাকি ৪৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছা যায়। ৯৭ কিলোমিটারের ভাড়া আসে ২০৩ টাকা। আমরা যাত্রীদের কাছ থেকে নিচ্ছি ২০০ টাকা করে। ভাড়া কমবে না। যাত্রীরা আরামে আসবে। দূরত্ব তো কমেনি।’

তিশা বাসের চালক শাকিল খান বলেন, ‘মাত্র দেড় ঘণ্টায় আমরা ঢাকায় আসা-যাওয়া করতে পারছি। রাস্তা ফাঁকাই বলা চলে।’ আশ্রাফপুর বাস টার্মিনালে রয়েল কোচের যাত্রী আলতাফ হোসেন, আতিকুর রহমান ও সালমা বেগম বলেন, আজ ঢাকা থেকে আসতে সব মিলে তাদের এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট লেগেছে। তাঁরা বলেন, তাদের খুবই ভালো লাগছে।

এশিয়া এয়ারকন পরিবহনের যাত্রী মজিবুর রহমান বলেন, আগে দাউদকান্দির গৌরিপুর গেলেই যানজটে পড়তে হতো। দুই সেতুর কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো। এখন আর সেটি হবে না। আরামে ঢাকা থেকে এসেছেন বলে জানালেন।

কুমিল্লা জেলা রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (বিআরটিএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, সেতু দুটি উদ্বোধনের পর দেশের পূর্বাঞ্চলের মানুষ দুই সেতুর সুফল পাচ্ছে। এখন আর যানজট থাকবে না।