চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেছেন, অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় এবারের অভিযান কঠোর ভাবে পরিচালনা করা হবে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে আমরা কঠোরভাবে মনিটরিং করবো। অভিযান চলাকালে আমরা কোন জেলেকে নদীতে নামতে দিবো না। যদি কেউ আইন অমান্য করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বুধবার (০২ অক্টোবর) সকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, এই সময়টাতে যতগুলো বরফ কল আছে তা বন্ধ থাকবে। লোকাল যে বাজার গুলোতে অবৈধ ইলিশ বিক্রি হয় সে বাজারগুলো আমরা মনিটরিং করবো। শুধুমাত্র বিক্রেতা নয় রাস্তা যদি ক্রেতাদের কাছ থেকেও ইলিশ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। টাস্কফোর্সের সাথে সাথে যেন সেনাবাহিনীর ওইসব অবৈধভাবে ইলিশ বিক্রির ঘাটগুলোতে যায় সেজন্যে অনুরোধ করবো। ২৪ ঘন্টাই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না।
জেলা প্রশাসক বলেন, কোন জেলে কোন দুস্কৃতকারীরা প্রশাসনকে তুচ্ছ করবে তা সম্ভব না। যদি করে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনপ্রতিনিধিরা বা অন্য কেউ সহায়তা করুক বা না করুক আমরা সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করবো। যে সকল নদীর শাখা মুখ রয়েছে সেসব স্থানে কঠোর নজরদারি করতে হবে।
বালুমহল সংক্রান্তে জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের কোন বৈধ বালুমহল নেই। ইতিমধ্যে আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। যদি কেউ বালু উঠাতে যায় তারা অবৈধ, আর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থাকবো। কোনভাবেই নদীতে ড্রেজার চলবে না।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, দাদন ব্যবসায়ী, বরফ কল ব্যবসায়ী, মৎস ব্যবসায়ীদের সাথে একটু মতবিনিময় করার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও জেলেদের সাথে মতবিনিময় করবো। অভিযানকালীন চারটি জেলার সমন্বয়ে কাজ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, কোস্টগার্ড চাঁদপুরের স্টেশন কমান্ডার ফজলুল হক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত, নৌ পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ, সমাজসেবা কর্মকর্তা (রেজি.) মনিরুল ইসলাম, মৎসজীবী নেতা তছলিম বেপারী প্রমূখ।
সভার শুরুতে চাঁদপুরে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন জেলা মৎস কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান।
উল্লেখ্য, আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-ক্রিয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।