• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

হাজীগঞ্জে স্বামী-স্ত্রীর খুনের ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামী করে মামলা, আটক ৮

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]
ছবি-নতুনেরকথা।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হাত-পা ও মুখ বাধা স্বামী ও স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর বড়কুল গ্রামের পান্নার বাড়ি প্রকাশ কালাসিকদারের বাড়ী থেকে উত্তম চন্দ্র বর্মণ তুফান (৭০) ও কাজলী রানি দাস (৫৫) মরদেহ করা হয়।

এ ঘটনায় হত্যার শিকার উত্তম চন্দ্র বর্মণ তুফানের বড় মেয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং ১০।

ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোন এক সময়ে দুর্বৃত্তরা জানালার গ্রীল কেটে দালানঘরে প্রবেশ করে তাদেরকে হত্যা করেছে। হত্যাকান্ডের শিকার উত্তম চন্দ্র বর্মণ তুফান স্থানীয় রায়চোঁ (নোয়াহাট) বাজারের মাছ বিক্রেতা। তিনি উত্তর বড়কুল গ্রামের দাস বাড়ির মৃত হরমন চন্দ্র বর্ধনের ছেলে।

মেয়ে রিনা রানি বর্মণ জানান, গত আট-দশ বছর যাবৎ দুলাল সাহার কাজকর্ম করে আসছেন বাবা ও মা। দুলাল চন্দ্র নারায়নগঞ্জ বসবাস করায় গত ২ বছর দুলাল সাহার দালানঘর পাহারা দেন এবং ওই ঘরেই থাকেন বাবা-মা। শুক্রবার সকালে বাবা-মায়ের মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বাড়িতে আসি।

তিনি বলেন, শুনেছি পাশের বাড়ির সবিতা রানি সাহা পূজার জন্য ফুল নিতে আসেন। এ সময় তিনি দরজা খোলা দেখে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে খাটের উপর বাবা-মায়ের হাত-পা বাধা মরদেহ দেখতে পেয়ে ডাক-চিৎকার দেন।

তিনি আরো বলেন, আমরা দুইবোন স্বামীর বাড়িতেই থাকি। ভাই না থাকায় বাবা মাছ বিক্রি এবং মা টুকটাক মানুষের কাজকর্ম করে কোনমতে চলেন (জীবিকা নির্বাহ করেন)। পাশাপাশি বাবা-মা দুলাল সাহার বাড়িঘর পাহারা দেন, বাতি জ্বালান, পূজা দেন।
কান্নাজড়িত কন্ঠে রিনা রানী বর্মণ বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কোন শত্রু নেই। জানিনা, কে বা কারা বাবা-মাকে মেরে ফেলেছে, আমরা তার বিচার চাই।

ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মজিব জানান, খবর পেয়ে আমি ওই বাড়ীতে গিয়েছি। নিহতের মেয়ে রিনা রানীর সাথে কথা বলছি। সে বলেছে তার পিতা-মাতার সাথে কারো কোন দ্বন্দ্ব নেই। ঘটনাটি পুলিশ তদন্ত করছে। আমি চাই যারা ঘটনায় জড়িত তারা দ্রুত বিচারের আওতায় আসুক।

এদিকে সংবাদ পেয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজিগঞ্জ সার্কেল) পঙ্কজ কুমার দেবনাথ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র ওসি এনামুল হক চৌধুরী, হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একজন নারী ও পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করেছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমাদের সাথে পুলিশের বেশ কয়েকটি ইউনিট কাজ করছে। আমরা ক্রাইম সিন থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছি। এই ঘটনার পিছনের কারণ হিসেবে কিছু তথ্য পেয়েছি। তথ্য যাচাই বাচাই সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য এখন থেকেই জেলা পুলিশ কাজ করছে।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আ. রশিদ জানান, উত্তম চন্দ্র বর্মণ তুফান (৭০) ও কাজলী রানি দাস (৫৫) খুনের ঘটনায় নিহতদের বড় মেয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিশপুর গ্রামের রিনা রানী অজ্ঞাতদের আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং ১০।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় ৮জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের দেয়া তথ্য যাছাই বাছাই করা হচ্ছে। খুনের ঘটনাটি থানা পুলিশের পাশা-পাশি পিবিআই ও ডিবিও তদন্ত করছে।

এ দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এডিএম মো. আকতারুজ্জামান ও হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম।

রাশেদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে সংবাদকর্মীদের জন্য, আমি চাই এমন নৃশংস হত্যা কাণ্ড  যারা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। প্রশাসন তাদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • সারা দেশ এর আরও খবর
error: Content is protected !!