হাজীগঞ্জে কুদ্দুছ, জুনু ও আরিফ নামের তিনজনকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করে আত্মহত্যা করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক প্রবাসীর স্ত্রী। একটি কাগজে ওই তিনজনের নাম উল্লেখ করে তিনি কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের মাড়কি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের প্রবাসী গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী। রোববার (১৬ জুলাই) চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। চিঠিতে উল্লেখিত ব্যক্তিরা একই গ্রামের বাসিন্দা।
প্রবাসী গিয়াস উদ্দিনের ভাইয়ের স্ত্রী সংবাদকর্মীদের জানান, চিৎকার শুনে জান্নাতের ঘরের সামনে গিয়ে তিনি দেখেন দরজা বন্ধ। পরে জান্নাত দরজা খুলে দেয়। আর ঘরের ভিতরে নাজিম, কুদ্দুস, জুনু ও আরিফ ছিল। এ সময় জান্নাত তাকে জানায়, নাজিম তার সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে জোরপূর্বক চেষ্টা করছে।
এরপর জান্নাতকে গুরুতর উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেপার করা হয় এবং শনিবার রাতেই কুমিল্লায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এরপর নিহতের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। খবর পেয়ে মরদেহ হাজীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোপিনাথ সহ সঙ্গীয় ফোর্স।
এ দিকে জান্নাতুল ফেরদৌসের কিটনাশক পান ও মৃত্যুর খবর শুনে এবং চিরকুটে মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করার বিষয়টি জানতে পেরে গা-ঢাকা দেন অভিযুক্তরা। রোববার সংবাদকর্মীরা অভিযুক্তদের বক্তব্য নিতে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। যার ফলে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে চিরকুটে অভিযুক্তদের পরিবার থেকে বলা হচ্ছে, নাজিমের সাথে জান্নাতুল ফেরদৌসের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। শুক্রবার রাতে কুদ্দুস, জুনু ও আরিফ তাদের হাতে-নাতে ধরে। চিরকুটের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, জান্নাত পড়াশোনা জানেন না, তাহলে এ চিরকুট কে লিখলো ? এমন প্রশ্ন তাদের। এসময় তারা অভিযুক্তদের মুঠোফোন নম্বর দিতেও অপরাগতা প্রকাশ করেন।
এদিকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেয়ে সংবাদকর্মীদের জানান, তার সামনেই শনিবার সকালে এই চিরকুট লিখেছেন তার মা। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাজিমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য রতনও এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এ ঘটনায় ওই এলাকায় চাঞ্চল্যক সৃষ্টি হয়েছে। চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, জান্নাতুল ফেরদৌসের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো (এ সংবাদ লিখা পর্যন্ত) কেউ অভিযোগ দেয়নি। এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চিঠিটি পাইনি মোবাইলে দেখেছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।