মহিউদ্দিন আল আজাদ
হাজীগঞ্জের আহম্মদ (৩) নামে এক নামে শিশুকে হত্যা করে বসতঘরে গর্ত করে পুঁতে রেখেছেন সৎ মা। ২৬ আগস্ট (শুক্রবার) নির্মমভাবে শিশু আহম্মদকে হত্যা করে নিখোঁজের নাটক সাজায় সৎ মা কোহিনুর। শিশু আহম্মদ হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন রায়চোঁ জিয়ানগর এলাকার হাফেজ শাহ্ মিরানের প্রথম ঘরের সন্তান।
সোমবার বিকেলে রামগঞ্জ থানা পুলিশ সৎ মা কোহিনুরকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার ৭নং দরবেশপুর ইউনিয়নের বাইল্যা চৌমুহনী গ্রামর চকিদার বাড়ীর কোহিনুরের বসত ঘরের মেঝে খুঁড়ে আহম্মদ’র মৃত্যুদেহ উদ্ধার করে।
হাফেজ শাহ্ মিরান জানান, কয়েক দিন পূর্বে আমার স্ত্রী কোহিনুর আহম্মদকে নিয়ে তার বাপের বাড়ী লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ৭নং দরবেশপুর ইউনিয়নের বাইল্যা চৌমুহনী চকিদার বাড়ীতে বেড়াতে যাই।
গত শনিবার (২৭ আগস্ট) আবার আমাদের বাড়ীতে আসে। ওই দিনই বিকেলে আমাকে টেলিফোনে জানায়, আহম্মদকে পাওয়া যাচ্ছেনা। বাড়ীর সবাই অনেক খুঁজেও আহম্মদের সন্ধান না পেয়ে রবিবার হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়ে আমাদের বাড়ীর পুকুরে সন্ধান করা হয়। সেখানেও তার মৃত্যুদেহ না পেয়ে আমি হাজীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি। এক পর্যায়ে জানতে পারি আমার শশুরবাড়ীর ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ। ঘরে স্থানীয় কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছেনা। তখনই আমার স্ত্রী কোহিনুরকে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে গত শুক্রবার রাতে আহম্মদকে হত্যা করে তাদের ঘরের মেঝেতে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।
পরে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ রামগঞ্জ থানাকে খবর দিলে রামগঞ্জ থানা পুলিশ সৎ মা কোহিনুরকে সঙ্গে নিয়ে চকিদার বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ঘরের মেঝে খুঁড়ে আহম্মেদের মৃত্যুদেহ উদ্ধার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সৎ মা কোহিনূর বেগমকে আটক দেখানো হয়। কোহিনুর বেগম বাইল্যা চৌমুহনী গ্রামের মৃত্যু মোবারক কুট্রির মেয়ে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোহিনুরের মা রাহেলা বেগম ও খালাকে হেফাজতে নিয়েছে।
শিশু আহম্মদ’র পিতা হাজীগঞ্জ উপজেলার ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের জিয়ানগর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির হাফেজ শাহ মিরন পরকীয়া করে কোহিনুরকে বিয়ে করে তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয়। শিশু আহম্মদ তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সৎ মা ঘাতক কোহিনুর শিশু আহম্মদকে লাথি মেরে হত্যার কথা স্বীকার করে।
হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের পর সৎ মা হত্যার দায় শিকার করার পর রামগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সৎ মা কোহিনূর বেগমকে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশের লীপুর জেলার রামগঞ্জের সার্কেল শেখ সাদী বলেন, আমরা লাশ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্ত শেষে পিতার নিকট লাশ হস্তান্তর করা হবে। সে সাথে ঘাতককে আটক দেখানো হয়েছে। এই হত্যাকান্ডের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না সেটিও আমরা খতিয়ে দেখছি। আর কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সন্দেহের বাহিরে হত্যার শিকার আহম্মদ’র বাবা হাফেজ শাহ মিরনও নেই।