শাহরাস্তিতে ডাকাতির ঘটনায় ১জনের মৃত্যুদন্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

  • আপডেট: ১২:১২:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২৬

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার খেড়িহরে ডাকাতির মামলায় মজিবুর রহমান বেপারীকে মৃত্যুদন্ড ও মো. আবুল কাশেম, আনোয়ার হোসেন, মাহবুবুর রহমান ও কামালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামীকে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আবুল কাশেমকে পৃথক ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তার উভয় দন্ড একই সময়ে কার্যকর হবে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন এই রায় দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মুজিবু রহমান খেড়িহর পূর্ব পাড়ার মঞ্জুর আহমেদ এর ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আবুল কাশেম মৃত হাসমত উল্যাহর ছেলে, আনোয়ার হোসেন মো. চাঁন মিয়ার ছেলে, মাহবুবুর রহমান মৃত আব্দুল্লাহ মাষ্টারের ছেলে। তাদের বাড়ী খেড়িহর গ্রামে এবং কামাল কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানার নর পাইয়া পূর্ব পাড়ার মৃত শাহ আলমের ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ জানুয়ারী রাত আনুমানিক দেড়টায় উপজেলার খেড়িহর গ্রামের মো. ফারুক এর বসতঘরে অধিকাংশ মুখশধারী একদল ডাকাত অস্রশস্র সজ্জিত হয়ে ডাকাতি করতে আসে। ওই সময় ঘরে থাকা লোকজন টেরপেয়ে ডাক চিৎকার করলে জেঠাৎ ভাই তাজুল ইসলাম এগিয়ে আসে। তখন উপস্থিত ডাকাতরা তাজুলকে ইটপাটকেল মারে এবং গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়। ঠিক ওই মুহুর্তে তাজুলের পিতা বুদরুছ ঘরের দরজা খুলে বের হলে ডাকাতরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এই সময় ডাকাতের তান্ডবে প্রত্যেক পরিবারের লোকজন এলোমেলো অবস্থায় ছুটাছুটি করলে ডাকাতরা ফারুকের ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমে অস্ত্র ঠেকিয়ে স্বর্নালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।

অপরদিকে গুলিবিদ্ধ তাজুল ইসলামের পিতা বুদরুছকে আহত অবস্থায় স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আব্দুর রহিমের কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসক তাকে মৃতু ঘোষনা করেন। এই ঘটনায় তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিনই শাহরাস্তি থানায় ৩৯৬ধারায় মামলা দায়ের করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহরাস্তি থানার তৎকালীন সময়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. নুরুল আফসার ভুঁইয়া তদন্ত শেষে উল্লেখিত আসামীদের ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে প্রমাণ পাওয়ায় ২০০৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আমান উল্যাহ বলেন, মামলায় প্রথমে আসামী ৬জন থাকলেও আবুল খায়ের নামে একজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরববর্তীতে মামলাটি দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর চলমান অবস্থায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করে। মামলার সাক্ষ্য প্রমান ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক ৩৯৬ ও ৪১২ ধারায় আসামীদেরকে পৃথক সাজায় দন্ডিত করেন। দন্ডিত আসামীদের মধ্যে মজিবুর রহমান, আবুল কাশেম ও আনোয়ার হোসেন পলাতক রয়েছে এবং বাকী দুই আসামী মাহবুবুর রহমান ও কামাল এর উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. সেলিম আকবর, অ্যাড. আনেয়ার গাজী, অ্যাড. রাজেশ মুখার্জি।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

শাহরাস্তিতে ডাকাতির ঘটনায় ১জনের মৃত্যুদন্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

আপডেট: ১২:১২:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার খেড়িহরে ডাকাতির মামলায় মজিবুর রহমান বেপারীকে মৃত্যুদন্ড ও মো. আবুল কাশেম, আনোয়ার হোসেন, মাহবুবুর রহমান ও কামালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামীকে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আবুল কাশেমকে পৃথক ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তার উভয় দন্ড একই সময়ে কার্যকর হবে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন এই রায় দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মুজিবু রহমান খেড়িহর পূর্ব পাড়ার মঞ্জুর আহমেদ এর ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আবুল কাশেম মৃত হাসমত উল্যাহর ছেলে, আনোয়ার হোসেন মো. চাঁন মিয়ার ছেলে, মাহবুবুর রহমান মৃত আব্দুল্লাহ মাষ্টারের ছেলে। তাদের বাড়ী খেড়িহর গ্রামে এবং কামাল কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানার নর পাইয়া পূর্ব পাড়ার মৃত শাহ আলমের ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ জানুয়ারী রাত আনুমানিক দেড়টায় উপজেলার খেড়িহর গ্রামের মো. ফারুক এর বসতঘরে অধিকাংশ মুখশধারী একদল ডাকাত অস্রশস্র সজ্জিত হয়ে ডাকাতি করতে আসে। ওই সময় ঘরে থাকা লোকজন টেরপেয়ে ডাক চিৎকার করলে জেঠাৎ ভাই তাজুল ইসলাম এগিয়ে আসে। তখন উপস্থিত ডাকাতরা তাজুলকে ইটপাটকেল মারে এবং গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়। ঠিক ওই মুহুর্তে তাজুলের পিতা বুদরুছ ঘরের দরজা খুলে বের হলে ডাকাতরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এই সময় ডাকাতের তান্ডবে প্রত্যেক পরিবারের লোকজন এলোমেলো অবস্থায় ছুটাছুটি করলে ডাকাতরা ফারুকের ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমে অস্ত্র ঠেকিয়ে স্বর্নালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।

অপরদিকে গুলিবিদ্ধ তাজুল ইসলামের পিতা বুদরুছকে আহত অবস্থায় স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আব্দুর রহিমের কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসক তাকে মৃতু ঘোষনা করেন। এই ঘটনায় তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিনই শাহরাস্তি থানায় ৩৯৬ধারায় মামলা দায়ের করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহরাস্তি থানার তৎকালীন সময়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. নুরুল আফসার ভুঁইয়া তদন্ত শেষে উল্লেখিত আসামীদের ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে প্রমাণ পাওয়ায় ২০০৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আমান উল্যাহ বলেন, মামলায় প্রথমে আসামী ৬জন থাকলেও আবুল খায়ের নামে একজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরববর্তীতে মামলাটি দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর চলমান অবস্থায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করে। মামলার সাক্ষ্য প্রমান ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক ৩৯৬ ও ৪১২ ধারায় আসামীদেরকে পৃথক সাজায় দন্ডিত করেন। দন্ডিত আসামীদের মধ্যে মজিবুর রহমান, আবুল কাশেম ও আনোয়ার হোসেন পলাতক রয়েছে এবং বাকী দুই আসামী মাহবুবুর রহমান ও কামাল এর উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. সেলিম আকবর, অ্যাড. আনেয়ার গাজী, অ্যাড. রাজেশ মুখার্জি।