কে এই রুম্পা, কেন এসেছিল সিদ্ধেশ্বরীতে

  • আপডেট: ০২:৫৫:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২৪

অনলাইন ডেস্ক:

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা পরিবারের সঙ্গে থাকতেন মালিবাগের শান্তিবাগে। কিন্তু তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড থেকে। কী উদ্দেশ্যে বা কেন তিনি সিদ্ধেশ্বরীতে এসেছিলেন, এই প্রশ্ন সামনে রেখে রুম্পার মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে রুম্পার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় জানা যায়নি। পরদিন তার পরিচয় মেলে। জানা যায়, রুম্পার বাবা রোকন উদ্দিন হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের পরিদর্শক।

রুম্পার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাদী হয়েছেন রমনা থানার এসআই আবুল খায়ের। তিনি বলেন, রুম্পার বাসা থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব প্রায় আধা কিলোমিটার। নিহত হওয়ার বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের পাশে তিনটি ভবন রয়েছে। যেকোনও একটি ভবন থেকে নিচে পড়ে মারা গেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রুম্পার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দারাও কাজ করছেন।

ঘটনার পরদিন (৫ ডিসেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে উপর থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার নমুনা পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রুম্পার মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ সদরের বিজয়নগরে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে রুম্পার সহপাঠীরা এই মৃত্যুর প্রতিবাদে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষকরাও। তারা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও সন্দেহ করছেন তারা। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে-ই জড়িত থাকুক তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে মানববন্ধন থেকে।

প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের কোনও আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, তার ভিসেরা, ব্লাড পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও মৃত্যুর আগে শারীরিক মেলামেশা বা ধর্ষণ হয়েছে কিনা, সেই নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সব পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।

এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রুম্পা কীভাবে মারা গেছেন, তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় গিয়েছিলেন কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিশ্চিতভাবে তার মৃত্যুর কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়। আমাদের তদন্ত চলছে।

রুম্পা কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য বা কেউ তাকে ডেকে এনেছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এস এম শামীম।

তিনি বলেন, আমরা রুম্পার মোবাইল ফোনটি পেয়েছি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। কেন তিনি সেদিন ওই জায়গায় এসেছিলেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। যেখানে রুম্পার মরদেহ পাওয়া গেছে, তার পাশে তিনটি ভবন রয়েছে। এই তিন ভবনের কারও সঙ্গে রুম্পার পরিচয় ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-অর্থ সম্পাদক হাজীগঞ্জের মাহবুব আলম ২ দিনের রিমান্ডে

কে এই রুম্পা, কেন এসেছিল সিদ্ধেশ্বরীতে

আপডেট: ০২:৫৫:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা পরিবারের সঙ্গে থাকতেন মালিবাগের শান্তিবাগে। কিন্তু তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড থেকে। কী উদ্দেশ্যে বা কেন তিনি সিদ্ধেশ্বরীতে এসেছিলেন, এই প্রশ্ন সামনে রেখে রুম্পার মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে রুম্পার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় জানা যায়নি। পরদিন তার পরিচয় মেলে। জানা যায়, রুম্পার বাবা রোকন উদ্দিন হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের পরিদর্শক।

রুম্পার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাদী হয়েছেন রমনা থানার এসআই আবুল খায়ের। তিনি বলেন, রুম্পার বাসা থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব প্রায় আধা কিলোমিটার। নিহত হওয়ার বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের পাশে তিনটি ভবন রয়েছে। যেকোনও একটি ভবন থেকে নিচে পড়ে মারা গেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রুম্পার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দারাও কাজ করছেন।

ঘটনার পরদিন (৫ ডিসেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে উপর থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার নমুনা পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রুম্পার মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ সদরের বিজয়নগরে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে রুম্পার সহপাঠীরা এই মৃত্যুর প্রতিবাদে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষকরাও। তারা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও সন্দেহ করছেন তারা। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে-ই জড়িত থাকুক তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে মানববন্ধন থেকে।

প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের কোনও আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, তার ভিসেরা, ব্লাড পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও মৃত্যুর আগে শারীরিক মেলামেশা বা ধর্ষণ হয়েছে কিনা, সেই নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সব পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।

এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রুম্পা কীভাবে মারা গেছেন, তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় গিয়েছিলেন কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিশ্চিতভাবে তার মৃত্যুর কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়। আমাদের তদন্ত চলছে।

রুম্পা কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য বা কেউ তাকে ডেকে এনেছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এস এম শামীম।

তিনি বলেন, আমরা রুম্পার মোবাইল ফোনটি পেয়েছি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। কেন তিনি সেদিন ওই জায়গায় এসেছিলেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। যেখানে রুম্পার মরদেহ পাওয়া গেছে, তার পাশে তিনটি ভবন রয়েছে। এই তিন ভবনের কারও সঙ্গে রুম্পার পরিচয় ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।