আলোচিত কোটিপতি পিয়ন গ্রেফতার

  • আপডেট: ০২:০৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ৩০

অনলাইন ডেস্কঃ

অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের আলোচিত কোটিপতি পিয়ন ইয়াছিন মিয়াকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। ইয়াছিন মিয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দির আতুয়াকান্দির হাজী মোহন মিয়ার ছেলে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জানায়, গত ২৬ নভেম্বর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের পিয়ন ইয়াসিন মিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরই মাঝে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার তাদের অডিটে বিপুল পরিমাণ অর্থ তছরুপের প্রমাণ পায়। এর প্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার ইয়াসিন নিখোঁজ হওয়ার একটি সাধারণ ডায়েরি করে।
শুক্রবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ ইয়াসিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে তার তৃতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকায় তার বিষয়ে কোন অনুসন্ধান করেনি পুলিশ। এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

জানা যায়, ২০০৬ সালে ইয়াছিন সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে পিয়ন পদে চাকরি পান। এরপর নানা সময়ে তাকে আশুগঞ্জ ও নাসিরনগর উপজেলায় বদলি করা হলেও ঘুরে ফিরে তিনি সদর উপজেলায়ই চাকরি করেন। ২০১৪ সাল থেকে নকল তল্লাশির কাজ এবং রেজিস্ট্রেশন ফিসহ চালানের টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য পাঠানো হতো তাকে। কিছুদিন আগে অফিসিয়াল অডিটে তার বিরুদ্ধে ‘কোটি টাকার ঘাপলা’ প্রকাশ পায়। এরপর গা ঢাকা দেন ইয়াছিন। অভিযোগ ওঠেছে, ব্যাংকের ভুয়া চালান তৈরি করে তিনি ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

ইয়াছিনের প্রথম স্ত্রী সাজেদা বেগমকে পৌর এলাকার ভাদুঘরে ৪ শতাংশ জায়গার উপর তৈরি করে দিয়েছেন ৩ তলা বাড়ি। যার মূল্য কোটি টাকার উপরে। মাস কয়েক আগে বড় ছেলেকে পাঠিয়েছেন ফ্রান্সে। ২৫ বছর পূর্বে প্রথম বিয়ে করে ইয়াছিন। এর ১০ বছর পর আকলিমা নামের এক বিধবা নারীকে কন্যা সন্তানসহ দ্বিতীয় বিয়ে করেন পিয়ন ইয়াছিন। ওই কন্যা সন্তান বড় হওয়ার পর ইতালি প্রবাসীর কাছে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই মেয়ের স্বামীর সাথে যৌথভাবে জেলা শহরের পাইকপাড়ায় ৬তলা একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন।

২য় স্ত্রী আকলিমাকে বিয়ে করার ৫ বছর পর প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়েন। পরে ওই নারীকে বিয়ে করেন ইয়াছিন। ইয়াসিন ছোট স্ত্রীকে নিয়ে শহরের মুন্সেফপাড়ায় নিজের কেনা ফ্লাটে বসবাস করতেন। ইয়াছিন নিখোঁজ হওয়ার পাশাপাশি তার ছোট স্ত্রীরও নিখোঁজ ছিলেন।

ইয়াছিনের পিতা হাজী মোহন মিয়া জানান, ‘আমার চার ছেলে। কোন মেয়ে সন্তান নেই। এর মধ্যে ইয়াছিন সবার বড়। আমার সাথে তার তেমন কোন যোগাযোগ নেই। আমি অন্য ছেলের সাথে কলেজপাড়াতে বসবাস করি। আমার জানা মতে, সে তিনটি বিয়ে করেছে।’ তবে এ বিষয়ে ইয়াছিন মিয়ার কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

সর্বাধিক পঠিত

স্থানীয় জনতার আগুনে জ্বলছে মাজার

আলোচিত কোটিপতি পিয়ন গ্রেফতার

আপডেট: ০২:০৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

অনলাইন ডেস্কঃ

অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের আলোচিত কোটিপতি পিয়ন ইয়াছিন মিয়াকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। ইয়াছিন মিয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দির আতুয়াকান্দির হাজী মোহন মিয়ার ছেলে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জানায়, গত ২৬ নভেম্বর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের পিয়ন ইয়াসিন মিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরই মাঝে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার তাদের অডিটে বিপুল পরিমাণ অর্থ তছরুপের প্রমাণ পায়। এর প্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার ইয়াসিন নিখোঁজ হওয়ার একটি সাধারণ ডায়েরি করে।
শুক্রবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ ইয়াসিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে তার তৃতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকায় তার বিষয়ে কোন অনুসন্ধান করেনি পুলিশ। এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

জানা যায়, ২০০৬ সালে ইয়াছিন সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে পিয়ন পদে চাকরি পান। এরপর নানা সময়ে তাকে আশুগঞ্জ ও নাসিরনগর উপজেলায় বদলি করা হলেও ঘুরে ফিরে তিনি সদর উপজেলায়ই চাকরি করেন। ২০১৪ সাল থেকে নকল তল্লাশির কাজ এবং রেজিস্ট্রেশন ফিসহ চালানের টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য পাঠানো হতো তাকে। কিছুদিন আগে অফিসিয়াল অডিটে তার বিরুদ্ধে ‘কোটি টাকার ঘাপলা’ প্রকাশ পায়। এরপর গা ঢাকা দেন ইয়াছিন। অভিযোগ ওঠেছে, ব্যাংকের ভুয়া চালান তৈরি করে তিনি ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

ইয়াছিনের প্রথম স্ত্রী সাজেদা বেগমকে পৌর এলাকার ভাদুঘরে ৪ শতাংশ জায়গার উপর তৈরি করে দিয়েছেন ৩ তলা বাড়ি। যার মূল্য কোটি টাকার উপরে। মাস কয়েক আগে বড় ছেলেকে পাঠিয়েছেন ফ্রান্সে। ২৫ বছর পূর্বে প্রথম বিয়ে করে ইয়াছিন। এর ১০ বছর পর আকলিমা নামের এক বিধবা নারীকে কন্যা সন্তানসহ দ্বিতীয় বিয়ে করেন পিয়ন ইয়াছিন। ওই কন্যা সন্তান বড় হওয়ার পর ইতালি প্রবাসীর কাছে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই মেয়ের স্বামীর সাথে যৌথভাবে জেলা শহরের পাইকপাড়ায় ৬তলা একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন।

২য় স্ত্রী আকলিমাকে বিয়ে করার ৫ বছর পর প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়েন। পরে ওই নারীকে বিয়ে করেন ইয়াছিন। ইয়াসিন ছোট স্ত্রীকে নিয়ে শহরের মুন্সেফপাড়ায় নিজের কেনা ফ্লাটে বসবাস করতেন। ইয়াছিন নিখোঁজ হওয়ার পাশাপাশি তার ছোট স্ত্রীরও নিখোঁজ ছিলেন।

ইয়াছিনের পিতা হাজী মোহন মিয়া জানান, ‘আমার চার ছেলে। কোন মেয়ে সন্তান নেই। এর মধ্যে ইয়াছিন সবার বড়। আমার সাথে তার তেমন কোন যোগাযোগ নেই। আমি অন্য ছেলের সাথে কলেজপাড়াতে বসবাস করি। আমার জানা মতে, সে তিনটি বিয়ে করেছে।’ তবে এ বিষয়ে ইয়াছিন মিয়ার কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।