অনলাইন ডেস্ক:
বিকল কিডনি চিকিৎসায় ডায়ালাইসিসের তুলনায় কিডনি প্রতিস্থাপন সহজতর, কম খরচের একটি উত্তম চিকিৎসা ব্যবস্থা। কিন্তু বাংলাদেশে আইনের সংকীর্ণতায় সৃষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানের অভাবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কিডনি সংযোজন বা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না।
শুক্রবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের ‘গেরিলা কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দার বীর উত্তম মিলনায়তনে’ দুই দিনব্যাপী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আন্তর্জাতিক নেফ্রোলজি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারের প্রধান নেফ্রোলজিস্ট অধ্যাপক ব্রি. জে. (অব.) মামুন মোস্তাফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী এবং সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব নেফ্রোলজির (আইএসএন) সভাপতি অধ্যাপক ডা. বিবেকানন্দ ঝাঁ।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে ডায়ালাইসিস নেয়া বিকল কিডনি রোগীদের তালিকা তৈরি করতে হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব রোগীদের কিডনি প্রতিস্থাপনের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনে আন্তর্জাতিক আইনের অনুসারে বাংলাদেশের আইন সংশোধনের পরামর্শ দেন তিনি।
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ বলেন, অতীতে ডায়ালাইসিস ব্যবস্থা অনেক জটিল কষ্টকর ছিল। কিন্তু গত কয়েক দশকে প্রযুক্তির ধারাবাহিক উন্নয়নের ধারায় ডায়ালাইসিস ব্যবস্থা অনেকটা সহজতর হয়েছে। কিন্তু তারপরও এটি অনেক ব্যয়বহুল। অন্যদিকে সাশ্রয়ী হলেও নানা জটিলতায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক কিডনি সংযোজন হচ্ছে না।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে চিকিৎসা সেবায় অসামান্য অবদানের জন্য গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আনোয়ারুল হাফিজ, নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নুরুল আমিন, চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন এবং কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রফিকুল আলমকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।
প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের প্রায় দুইশ’র বেশি কিডনি বিশেষজ্ঞ, নার্স, বায়োমেডিকেল প্রকৌশলী অংশ নেন। এতে কিডনি রোগের আধুনিক চিকিৎসা, হেমোডায়ালাইসিস, কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণাপত্র উপস্থাপনা করা হয় এবং কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।