চাঁদপুরের ১২টি পরিবারে নেই ঈদ আনন্দ, আছে বেঁচে থাকার চেষ্টা

  • আপডেট: ০৫:৩৫:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০১৯
  • ৪৭

অনলাইন ডেস্ক:

মেঘনা নদীর ভাঙনে সম্বলহারা চাঁদপুর জেলার মতলব থানার ১২টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে নরসিংদীর রায়পুরায় মেথিকান্দা প্রাইমারি স্কুলের পাশে খোলা আকাশের নিচে। তারা ৯টি তাঁবু ও স্কুলের বারান্দায় গাদাগাদি করে বসবাস করছেন।

খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। মাথাগোঁজার ঠাঁই বলতে আছে বাঁশ, কাপড়, পলিথিন নিয়ে তৈরি তাঁবু। যাদের ভাগ্যে তা-ও জোটেনি তারা আশ্রয় নিয়েছেন স্কুলের বারান্দায়। ঈদ নিয়ে তাদের ভাবনা নেই। আছে বেঁচে থাকার চেষ্টা।

অসহায় পরিবারগুলো জানায়, ১৫ দিন ধরে তারা মেথিকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের খোলা জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন বা সমাজের বিত্তবান কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। কষ্টে দিন কাটছে আশ্রয় নেওয়া ১২টি পরিবারে তাদের ৩০ জন নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুর। চিকিৎসা ও খাবারের অভাবে কাতরাচ্ছে অনেকে। শিশুদের পরনে নেই জামা।

মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, চাঁদপুরের মতলব থানায় তার বাড়ি। মেঘনা নদীর ভাঙনে তার ভিটে মাটি হারিয়ে আশ্রয় নেন বাঁধে। ওই খানে সরকারি ত্রাণ, মাথাগোঁজার ঠাঁই, পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান না থাকায় কর্মসংস্থানের আশায় এখানে ১৫ দিন আগে এসেছেন।

তিনি জানান, এখনো কোনো কাজের সন্ধান করতে পারেননি। সংসারে তার স্ত্রী, স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে ও দুই নাতি রয়েছে। মাথাগোঁজার ঠাঁই পেলেও খাবারের জন্য কষ্ট করছেন তারা।

পাশের তাঁবুতে থাকেন রেহেনা বেগম। স্বামী বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। বললেন, বাবা কিছু টাকা দেন হাঁড়িতে রান্না করার মতো চাল-ডাল নেই। অসুস্থ স্বামী নিয়ে খেয়ে না-খেয়ে দিন পার করছি।

আর একটু এগোতেই সিরাজুলের ৯ বছরের নাতির সাথে দেখা। নাম রিয়াদ। মলিন চেহারা নিয়ে অন্য বাচ্চাদের সাথে দৌড়াদৌড়ি করছে। সে জানে না এবারের ঈদে নতুন জামা পাবে কি-না।রিয়াদের মতো বাকি শিশুরাও জানে না ঈদে নতুন জামা পাবে কিনা।

মেথিকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান জানান, পরিবারগুলো স্কুলের পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে আবার স্কুলের বারান্দায় অবস্থান নিয়েছেন। তা ছাড়া পরিবারগুলোর জন্য শৌচাগার না থাকায় খোলাস্থানে মলত্যাগ করায় আশপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

এ ব্যাপার পলাশতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আপনার মাধ্যমে বিষয়টি এখন শুনলাম। চেয়ারম্যান বলেন, তিনি পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য ও সহযোগিতা করবেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ফরিদগঞ্জে গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যু

চাঁদপুরের ১২টি পরিবারে নেই ঈদ আনন্দ, আছে বেঁচে থাকার চেষ্টা

আপডেট: ০৫:৩৫:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

মেঘনা নদীর ভাঙনে সম্বলহারা চাঁদপুর জেলার মতলব থানার ১২টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে নরসিংদীর রায়পুরায় মেথিকান্দা প্রাইমারি স্কুলের পাশে খোলা আকাশের নিচে। তারা ৯টি তাঁবু ও স্কুলের বারান্দায় গাদাগাদি করে বসবাস করছেন।

খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। মাথাগোঁজার ঠাঁই বলতে আছে বাঁশ, কাপড়, পলিথিন নিয়ে তৈরি তাঁবু। যাদের ভাগ্যে তা-ও জোটেনি তারা আশ্রয় নিয়েছেন স্কুলের বারান্দায়। ঈদ নিয়ে তাদের ভাবনা নেই। আছে বেঁচে থাকার চেষ্টা।

অসহায় পরিবারগুলো জানায়, ১৫ দিন ধরে তারা মেথিকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের খোলা জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন বা সমাজের বিত্তবান কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। কষ্টে দিন কাটছে আশ্রয় নেওয়া ১২টি পরিবারে তাদের ৩০ জন নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুর। চিকিৎসা ও খাবারের অভাবে কাতরাচ্ছে অনেকে। শিশুদের পরনে নেই জামা।

মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, চাঁদপুরের মতলব থানায় তার বাড়ি। মেঘনা নদীর ভাঙনে তার ভিটে মাটি হারিয়ে আশ্রয় নেন বাঁধে। ওই খানে সরকারি ত্রাণ, মাথাগোঁজার ঠাঁই, পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান না থাকায় কর্মসংস্থানের আশায় এখানে ১৫ দিন আগে এসেছেন।

তিনি জানান, এখনো কোনো কাজের সন্ধান করতে পারেননি। সংসারে তার স্ত্রী, স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে ও দুই নাতি রয়েছে। মাথাগোঁজার ঠাঁই পেলেও খাবারের জন্য কষ্ট করছেন তারা।

পাশের তাঁবুতে থাকেন রেহেনা বেগম। স্বামী বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। বললেন, বাবা কিছু টাকা দেন হাঁড়িতে রান্না করার মতো চাল-ডাল নেই। অসুস্থ স্বামী নিয়ে খেয়ে না-খেয়ে দিন পার করছি।

আর একটু এগোতেই সিরাজুলের ৯ বছরের নাতির সাথে দেখা। নাম রিয়াদ। মলিন চেহারা নিয়ে অন্য বাচ্চাদের সাথে দৌড়াদৌড়ি করছে। সে জানে না এবারের ঈদে নতুন জামা পাবে কি-না।রিয়াদের মতো বাকি শিশুরাও জানে না ঈদে নতুন জামা পাবে কিনা।

মেথিকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান জানান, পরিবারগুলো স্কুলের পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে আবার স্কুলের বারান্দায় অবস্থান নিয়েছেন। তা ছাড়া পরিবারগুলোর জন্য শৌচাগার না থাকায় খোলাস্থানে মলত্যাগ করায় আশপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

এ ব্যাপার পলাশতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আপনার মাধ্যমে বিষয়টি এখন শুনলাম। চেয়ারম্যান বলেন, তিনি পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য ও সহযোগিতা করবেন।