গাজী মহিনউদ্দিনঃ
মুসলিম সম্প্রদায়ের রেওয়াজ অনুযায়ী ঈদ আনন্দে মেতে ওঠে মুসলমানরা। ঈদের খুশিতে ধণী-গরিব সকলের ঘরে সাধ্যমত রকমারি খাবারের আয়োজন করে। তার মধ্যে সবার জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে সেমাইয়ের পায়েস। যা আহার করে ঈদের খুশিতে মেতে উঠে ছোট বড় সব বয়সের লোকেরা। ঈদের নামাজ আদায় করে মুসল্লিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবার-পরিজনের সাথে একত্রে বসে সেমাইয়ের পায়েস খেয়ে থাকে। আর ঈদের আগে বাজার থেকে ক্রয় করে বিভিন্ন রকমারি সেমাই। ঈদের পূর্বে বাজারগুলোতে দেখা মিলছে বিভিন্ন রকমারির প্যাকেজিংয়ে সেমাই ও লাচ্ছি সেমাই। প্যাকেটের ডিজাইন ও মোড়ক ক্রেতাদের মুগ্ধ করে দেদারছে বিক্রি চলছে ভেজাল সেমাই। এ সেমাই ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, ঈদকে সামনে রেখে বাজারে এমন কিছু সেমাইয়ের প্যাকেজিং দেখা যায়। যেগুলোর গায়ে কোন প্রকার উৎপাদনের তারিখ কিংবা মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কোন তারিখ নেই। হাজীগঞ্জ বাজারের অধিকাংশ দোকানে ঘুরে দেখা যায়। অধিকাংশ সেমাইয়ের প্যাকেজিংয়ে মেয়াদ উ ওজন নিয়েও কথা ওঠে! সেমাইয়ের প্যাকেটের গায়ে ২০০ গ্রাম লেখা থাকলেও সঠিক পরিমানে সেমাই থাকে না। প্রায় ৫০গ্রাম সেমাই কম থাকে। সাদা প্যাকেটে নাম বিহীন এক ধরণের সেমাই বাজারে আসছে; যেগুলোর গায়ে কোন প্রকার সীল ও বি.এস.টি.আই অনুমোদনের কোন প্রকার প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
ঈদ আসলে ব্যাঙের ছাতার মত জেগে ওঠে সেমাই প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। যেগুলোর শুধু মাত্র রঙ বে-রঙের প্যাকেট লাগিয়ে ও মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ উল্লেখ না করে বাজারে পণ্য সরবরাহ করে আসছে। এসব সেমাই কতদিন নাগাদ মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে? এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে জনসাধারণ।
হাজীগঞ্জ বাজারের অধিকাংশ দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, এরকম কয়েক’শ রকমারির ভেজাল সেমাইয়ের প্যাকেট রয়েছে। যা যার অধিকাংশই ঈদের বাজারকে সামনে রেখে বাজারে ভেজাল সেমাই সাপ্লাই দিয়ে আসছে। বিক্রয়কর্মীদের মাধ্যমে দোকানদারদের অধিক মুনাফা অর্জনের লোভ দেখিয়ে ঈদের বাজারে ভেজাল খাদ্যের মিশ্রণ ঘটাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেসী মহল। এমনকি ভেজাল সেমাই উৎপাদকারী প্রতিষ্ঠান পূর্বের বছরের অবিক্রিত সেমাইগুলো দোকানিদের অধিক মুনাফা দেখিয়ে বাজারে এসব ভেজাল খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে। এ ধরণের সেমাই খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়বে: এমনকি পেটে ব্যাথা জনিত রোগও দেখা দিতে পারে। দোকানদারদের অভিযোগ, বিক্রয়কর্মীরা পণ্য দিয়ে যাওয়ার পর মেয়াদ উত্তীর্ণ ও লেভেল বিহীন পণ্য আমাদের চোখে ধরা পড়লেও এজেন্টের নিকট ফেরৎ দিতে চাইলে তারা অস্বীকৃতি জানায়। এতে বাধ্য হয়েই বিক্রি করতে হয়। ক্রেতারা বলছে, ভাল পণ্য বিক্রয় করে যে মুনাফা আয় হয়; ভেজাল ও মানহীন পণ্য বিক্রয় করে তার অধিক মুনাফা আয় করা সম্ভব হচ্ছে। যার ফলে বাজারে ভেজাল সেমাইয়ে সয়লাব হচ্ছে। এসব ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ সেমাই বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া না হলে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। প্রশাসনের তদারকি না থাকায় হাজীগঞ্জ বাজারের অলি-গলির মুদি দোকান ও ভ্রাম্যমান দোকানগুলো এবং গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারের দোকানগুলোতে ভেজাল সেমাইয়ের সয়লাব হয়ে গেছে। এমত অবস্থায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ভেজাল খাদ্র সামগ্রী অপসারণের জন্য প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও বাজার মনিটরিং করার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিরোনাম:
ঈদকে সামনে রেখে হাজীগঞ্জ বাজারে ভেজাল সেমাইয়ে সয়লাব
Tag :
সর্বাধিক পঠিত