ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:
ফরিদগঞ্জে প্রথম স্ত্রী নাজমা ও পরিবারের সদস্যদের সাথে অভিমান করে দ্বিতীয় স্ত্রী সাহিদা বেগম এর বাড়িতে আত্মহত্যার ঘটনায় প্রথম স্ত্রী নাজমা বেগম বাদী হয়ে সাহিদাসহ স্থানীয় ৪ জনকে আসামি করে চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করেছে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। মামুনকে কি হত্যা করা হয়েছে, নাকি সে আত্মহত্যা করলো এমন রহস্য নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন।
সরেজমিনে গিয়ে ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের আষ্টা এলাকার মোহাম্মদ আলী বেপারীর ছেলে পেশায় রিক্সা চালক মামুন বেপারী (৪০) তথ্য গোপন করে পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শাশিয়ালী গ্রামের মৃত-আব্দুল গনি মিয়া’র মেয়ে সাহিদা বেগমকে ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর দুই লাখ টাকা কাবিন মূলে ইসলামি শরীয়া মোতাবেক দু’জনের মতামতের ভিত্তিতে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। যাহার রেজিষ্টেন নাম্বার- ১৫১৬।
সাহিদা বেগম জানায়, বিয়ের পর থেকে আমাদের সংসার ভালোই চলছিল। ১৪ মে ২০১৯ সোমবার দুপুরে মামুন তার বাবার বাড়ি গিয়েছিল। মামুনের বাবার বাড়িতে নাজমা বেগম ও ভাই মাসুদের সাথে মারামারি হয়েছিল বলে মামুন আমাকে জানায়। আমি মামুনকে সান্তনা দিয়ে ইফতার করতে বলি এবং ইফতার শেষে নামাজ পড়ে গোয়াল ঘরে গরুর খাবার দিতে যাই। কিছুক্ষনের মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে যায়। ঘরে এসে ভিতরের দরজা বন্ধ পেয়ে অনেক ডাকাডাকির পরও মামুন দরজা না খোলায় আশপাশের লোকদের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে দেখতে পাই মামুন ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। তা দেখেই আমি জ্ঞান হারিয়ে পেলি। অতপর স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে সাহিদা জানায়, আদালতে যে মামলাটি করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। যাদেরকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে, তাদের সাথে আমার কোন ধরনের সম্পর্ক নেই। এ সময় সাহিদা আরো বলেন, আমার স্বামী মামুন মারা যাওয়ার পর তার বন্ধু মনির আমার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। আমাকে হুমকি দিয়েছে টাকা না দিলে আমার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দিবে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী নিহত মামুনের প্রথম স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, আমার স্বামী মামুনকে সাহিদা ও তার সহযোগিরা পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে।
মামলার আসামি রফিকুল ইসলাম, আমির হোসেন, মহসিন তপদার জানান, এ মামলা সম্পর্কে আমাদের কোন কিছুই অবগত নই। একটি কুচক্রি মহল আমাদের সম্মানহানি করতে এ মামলার সাথে জড়িয়েছে।
মামলার স্বাক্ষী নূরুল ইসলাম, মাফিয়া বেগম, মোর্শেদ ও সবুজ মিয়া জানান, সাহিদা আমাদের প্রতিবেশি। কিন্তু যে মামলাটি করা হয়েছে তা সম্পর্কে আমাদের কোন কিছুই জানানো হয়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) সুমন্ত মজুমদার বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন, তদন্ত শেষ হলে বলা যাবে, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।