ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রেন দূর্ঘটনা:এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করা হলো না চাঁদপুরের ফারজানার

  • আপডেট: ১০:৫০:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯
  • ৩২

চাঁদপুর, ১২ নভেম্বর, মঙ্গলবার॥

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আন্তনগর তূর্ণা নিশীথা ও আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড উত্তর বালিয়া গ্রামের তালুকদার বাড়ির ফারজানা আক্তারের এস.এস.সি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করা হলো। ফরম ফিলাপ করার জন্য সিলেটে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বেড়ানো শেষে নিজ বাড়িতে আসার পথ এই মর্মান্তিক দূর্ঘটটনায় ফারজানা আক্তর চলে গেল না ফেরার দেশে। ফারজানার লাশ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে চলছে শোকের মাতম।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ডের উত্তর বালিয়া তালুকদার বাড়ির সৌদি প্রবাসী বিল্লাল হোসেন বেপারীর পরিবারের সদস্যরা গত ৭ নভেম্বর সিলেটে ফারজানা আক্তারের খালাতো বোনের বিয়েরঅনুষ্ঠানে শিশু কিশোর সহ ৭ জন অংশগ্রহণ করতে যায়। গতকাল মঙ্গলবার বাগাদী ইউনিয়নের বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ করার শেষ দিন ছিল। ফারজানা আক্তার এই বিদ্যালয়েরবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। মঙ্গলবার ফরম ফিলাপের শেষ দিন থাকায় সোমবার রাতে তারা ট্রেনযোগে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ রেল স্টেশনে তূর্ণা নিশীথা ও আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এতে করে ফারজানা আক্তারের ২টি পা শরীর থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ফারজানা ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। অপর আহত হলো বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী বেবী বেগম (৪৫), শাশুড়ী ফিরোজা বেগম (৬৫), মেয়ে সুমি আক্তার (২০), ফারজানা আক্তার (১৭), শিশু ইলরিন (৫), জুবায়েদ (৩) বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ফিরছিল। ওই দূর্ঘটনায় বিল্লাল হোসেনের ছোট মেয়ে ফারজানা আক্তার দূর্ঘটনার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে মারা যায়। অপর সদস্যরা মারাত্মকভাবে আহত হয়। সরজমিনে বালিয়া ইউনিয়নের তালুকদার বাড়িতে গেলে জানা যায়, মিতু আক্তার (২৫) ও শাহিদা বেগম (৪০) এখনও নাকি নিখোঁজ রয়েছে বলে ফারজানার বড় ভাই হাসান জানান। বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারজানার মৃত্যুর খবর পৌছলে তার সহপাঠীরা ফারজানার বাড়িতে ছুটে আসে। সেখানে এসে তারা সহপাঠীর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ে আজ মঙ্গলবার ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের শেষ দিন ছিল। যার কারণে ফারজানা সিলেটে তার খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফরম ফিলাপের জন্য সোমবার রাতে রওনা হয়। পথিমধ্যে কসবায় সড়ক দূর্ঘটনায় সে পৃথিবর মায়া ত্যাগ করেছে। ফারজানার এই অকাল মৃত্যুতে বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয় ও আমরা একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ও বন্ধুকে হারিয়েছি। এ শোক ভুলে যাওয়ার নয়।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য মোতাহার হোসেন পাটোয়ারী’র সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যাপক জনসমাগম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রেন দূর্ঘটনা:এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করা হলো না চাঁদপুরের ফারজানার

আপডেট: ১০:৫০:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯

চাঁদপুর, ১২ নভেম্বর, মঙ্গলবার॥

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আন্তনগর তূর্ণা নিশীথা ও আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড উত্তর বালিয়া গ্রামের তালুকদার বাড়ির ফারজানা আক্তারের এস.এস.সি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করা হলো। ফরম ফিলাপ করার জন্য সিলেটে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বেড়ানো শেষে নিজ বাড়িতে আসার পথ এই মর্মান্তিক দূর্ঘটটনায় ফারজানা আক্তর চলে গেল না ফেরার দেশে। ফারজানার লাশ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে চলছে শোকের মাতম।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ডের উত্তর বালিয়া তালুকদার বাড়ির সৌদি প্রবাসী বিল্লাল হোসেন বেপারীর পরিবারের সদস্যরা গত ৭ নভেম্বর সিলেটে ফারজানা আক্তারের খালাতো বোনের বিয়েরঅনুষ্ঠানে শিশু কিশোর সহ ৭ জন অংশগ্রহণ করতে যায়। গতকাল মঙ্গলবার বাগাদী ইউনিয়নের বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ করার শেষ দিন ছিল। ফারজানা আক্তার এই বিদ্যালয়েরবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। মঙ্গলবার ফরম ফিলাপের শেষ দিন থাকায় সোমবার রাতে তারা ট্রেনযোগে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ রেল স্টেশনে তূর্ণা নিশীথা ও আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এতে করে ফারজানা আক্তারের ২টি পা শরীর থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ফারজানা ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। অপর আহত হলো বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী বেবী বেগম (৪৫), শাশুড়ী ফিরোজা বেগম (৬৫), মেয়ে সুমি আক্তার (২০), ফারজানা আক্তার (১৭), শিশু ইলরিন (৫), জুবায়েদ (৩) বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ফিরছিল। ওই দূর্ঘটনায় বিল্লাল হোসেনের ছোট মেয়ে ফারজানা আক্তার দূর্ঘটনার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে মারা যায়। অপর সদস্যরা মারাত্মকভাবে আহত হয়। সরজমিনে বালিয়া ইউনিয়নের তালুকদার বাড়িতে গেলে জানা যায়, মিতু আক্তার (২৫) ও শাহিদা বেগম (৪০) এখনও নাকি নিখোঁজ রয়েছে বলে ফারজানার বড় ভাই হাসান জানান। বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারজানার মৃত্যুর খবর পৌছলে তার সহপাঠীরা ফারজানার বাড়িতে ছুটে আসে। সেখানে এসে তারা সহপাঠীর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ে আজ মঙ্গলবার ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের শেষ দিন ছিল। যার কারণে ফারজানা সিলেটে তার খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফরম ফিলাপের জন্য সোমবার রাতে রওনা হয়। পথিমধ্যে কসবায় সড়ক দূর্ঘটনায় সে পৃথিবর মায়া ত্যাগ করেছে। ফারজানার এই অকাল মৃত্যুতে বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয় ও আমরা একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ও বন্ধুকে হারিয়েছি। এ শোক ভুলে যাওয়ার নয়।