• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ২৭ আগস্ট, ২০১৯

ভিডিও ফাঁসের ঘটনা জানতেন ডিসি, চাওয়া হয়েছিল মোটা অংকের চাঁদা, সাধনার সাথে জড়িত রয়েছে অফিসের অনেকেই

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

অনলাইন ডেস্ক:

অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওএসডি হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরেব গুরুদণ্ড হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাকে চাকরিচ্যুত, অপসারণ কিংবা নিচের পদে নামিয়ে দেয়া হতে পারে। এমনকি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

তবে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একের পর নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠলেও খুব কম ক্ষেত্রেই শাস্তি পাচ্ছেন তারা। মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা ডিসি, ইউএনও ও এসিল্যান্ডের নামে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রায়ই যৌন হয়রানি ও যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করার লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন তাদের সহকর্মী ও সেবাগ্রহীতা নারীরা।

যৌন হয়রানির প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলার ঘটনাও ঘটেছে। তবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

তদন্ত হয় কেবল নামেই। জনপ্রশাসনে এসব গুরুতর অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ‘ওএসডি’। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির দুটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রোববার তাকে বদলি করে ‘বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা’ (ওএসডি) হিসেবে পাঠানো হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।

এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অথচ জামালপুরের এই ডিসিকে চলতি বছর বিভাগীয় পর্যায়ে সেরা হিসেবে শুদ্ধাচার পুরস্কার দিয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগের তৎকালীন কমিশনার মাহ্‌মুদ হাসান।

ওএসডি হওয়ার আগে শনিবার মধ্যরাতে একটি মাইক্রোবাসে করে সপরিবারে জামালপুর ছেড়েছেন ওই জেলা প্রশাসক। ওই কেলেঙ্কারিতে জড়িত ডিসি অফিসের নারী কর্মচারীও নিখোঁজ থাকলে পরে সোমবার অফিসে আসেন তিনি।

এদিকে ভিডিও ভাইরালের পর অফিস সরকারী নারীর সাথে কি আপনার যোগাযোগ হয়েছে? এমন এক প্রশ্নে আহমেদ কবির বলেন, হ্যাঁ, আমার সাথে ওনার পরিবার ও ওনার কথা হয়েছে। তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনিও এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায়।

জেলা প্রশাসকের বাহিরে আপনি একটি পরিবারের অবিভাবক। এই ঘটনার পর আপনার পরিবারে কি কোন ধরণের আঘাত পড়েছে?

না, আমার পরিবারে কোন ধরণের আঘাত পড়েনি। আমার পরিবারকে বুঝিয়েছি বিষয়টি। প্রশাসনিক ভাবে কি আপনার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছ? এই ঘটনার কি তদন্ত হবে?

আমার সাথে বিভিন্ন উপর মহল থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। জানতে চেয়েছেন। আমি সঠিকটি বলেছি। এরপর কোন ধরণের তদন্ত হবে কিনা আমি বলতে পারছি না।

তিনি জানান, ফেসবুক আইডি ব্যবহারকারীরা গত ১২দিন ধরে আমার কাছে প্রথমে ৫০০ ডলার এরপর বাংলা টাকা ১ লাখ দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করি। এরপর ভিডিওটি প্রকাশ করে দেওয়া হয়।

যে ভিডিওটি প্রকাশ হয়েছে সেটা কি জেলা প্রশাসকের আওতাধীন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, এটা আমাদের আওতাধীন না। সেখানে কি করে সিসি ক্যামেরা আসলো আমি বলতে পারবো না। আমার অফিসের কেউ ষড়যন্ত্র করেছে আমার বিরুদ্ধে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত চাচ্ছি।

জামালপুরের জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার বলেন, এই ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন মহল থেকে আমারা যারা চাকরিতে কর্মরত রয়েছি তাদের কাছে ফোন আসছে, জানতে চাওয়া হচ্ছে। যেটা আমাদের জন্য লজ্জাকর। আমরা বিব্রতকর পরিস্থিতি পড়েছি। এমন ঘটনা আমাদের জন্য কাম্য ছিল না।

জামালপুরের জেলার উপপরিচালক মোহাম্মদ কবির উদ্দীনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না।

তবে ডিসি অফিসের অনেকেই ওএসডি হওয়া সাবেক জেলা প্রশাসক আহমেদ কবিরের পক্ষ নিয়ে কথা বলে বলেন, এর সাথে স্যার শুধু একা জড়িত নয়। অফিসে ও জেলায় অনেকে তার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিতে না ফেরে ওই নারীকে দিয়ে স্যারকে ফাঁসিয়েছেন। সুষ্ঠুতদন্ত হলে  সব বেরিয়ে আসবে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

error: Content is protected !!