মো. জামাল হোসেন, শাহরাস্তি॥
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূ আইরিন সুলতানা (২৩) মারা গেছে। শনিবার সন্ধ্যায় গৃহবধূকে ময়নাতদন্ত শেষে বাবার বাড়িতে এনে দাফন করে বাবার পরিবার। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নারায়ণগঞ্জের কো-অপারেটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিওতে গৃহবধু আইরিন সুলতানা মারা যায়। তার স্বামী আরিফুল ইসলাম, শ্বাশুড়ি ও দেবর আজাদ হাসপাতালে গৃহবধূর লাশ রেখে পালিয়ে যায়। ওই সময় তাদের চার বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে যায় শ্বাশুড়ি। স্বামী আরিফুল ইসলাম ঈদুল আযহার পর দিন দুবাই থেকে বাড়িতে আসে। কোন অজুহাতে গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন চালায়, তা জানেন না বাবার পরিবার। গৃহবধূ আইরিন সুলতানা শাহরাস্তি উপজেলার মেহার উত্তর ইউনিয়নের বরুলিয়া গ্রামের পুরাতন বাড়ি আরিফুল ইসলাম এর স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি একই উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের মুড়াগাঁও বড় বাড়ি। শাহজাহান মিয়ার বড় মেয়ে। ২০১৫ সালে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ করে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। ওই হাসপাতালে নারায়ণগঞ্জ থানা পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে গৃহবধূর শরীরে ছুরিকাঘাত ও জখমের দাগ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
বাবা শাহজাহান মিয়া বলেন, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২ টায় আমার মেয়ে বিষপান করেছে বলে জানায় দেবর আজাদ। রাতে কোন হাসপাতালে খোঁজ পাইনি। পরে বুধবার দুপুরে জানতে পারি নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড রোডে কো-অপারেটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছে। আইরিন সুলতানার মা আফরোজা ইয়াসমিন বলেন, আমার মেয়েকে নির্যাতন করে মেরেছে। আমার মেয়ে বিষপান করেনি। মেয়ের চাচাতো ভাই সোহাগ বলেন, আমরা হাসপাতালে গিয়ে আইরিনকে আইসিওতে দেখতে পাই। চারদিন আইসিওতে থাকার পর তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে শাহরাস্তি থানায় প্রথমে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দিয়েছি। শনিবার রাতেই স্বামী, শাশুড়ী ও দেবরকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করবো। বরুলিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য ভূষণ চন্দ্র দাস মুঠোফোনে বলেন, গৃহবধূর শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জেনেছি।
শাহরাস্তি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, আইরিন সুলতানার মৃত্যুর খবর পেয়েছে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ পেয়েছি। নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে কিনা তা লাশের ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে বলা যাবে।
অপরদিকে স্বামী ও শ্বাশুড়ির মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সংযোগ পাওয়া যায়নি।