মনিরুল ইসলাম মনির :
মতলব উত্তরে এ বছর সোনালী আঁশ পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজার দরও ভালো। ধানের লোকসান পাট দিয়ে কিছুটা হলেও লাঘব হওয়ার আশায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এ বছর অল্প পরিমাণ জমিতে পাট চাষাবাদ করলেও আগামী বছর বেশি পরিমাণ জমিতে পাট চাষ করার স্বপ্ন বুনছেন এখানকার চাষিরা।
এখানকার চাষিরা তোষা, দেশি ও কেনাফ জাতের পাট চাষ করে থাকে। এর মধ্যে বেশির ভাগ চাষিই দেশি ও তোষা জাতের পাট চাষাবাদ করেছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, পাট চাষিদের পর্যাপ্ত পরামর্শ ও সহযোগিতার ফলে এ বছর পাটের ভালো ফলন হয়েছে। তা ছাড়া বর্তমান বাজারে ১৪শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা দরে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে। এতে ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় পাট চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে বলে জানা গেছে।
কলাকান্দা গ্রামের কৃষক মো. হাসমত আলী। তিনি এ বছর দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। দেড় বিঘা জমিতে ১৩ থেকে ১৪ মণ পাট পাবেন বলে ধারণা করছেন। এতে বর্তমান বাজার দরে পাটের আঁশ বিক্রি করে খরচ ওঠে আসবে। পাশাপাশি পাটশোলা বিক্রি করেও লাভবান হবেন বলে জানান।
উপজেলার জহিরাবাদ গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৪০ শতাংশ জমিতে তোষা পাট চাষ করেছি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সঠিক পরিচর্যা করায় পাটগাছগুলো আট থেকে নয় হাত পর্যন্ত লম্বা হয়েছে। এখন কর্তন করার সময় হয়েছে। সবকিছুু ঠিকঠাক থাকলে এবার পাট চাষ করে বেশ লাভবান হবো। গত বৎসর একই জমিতে ধান চাষ করে তেমন একটা লাভবান হতে পারি নাই। কিন্তু এবার পাট চাষে আমার সেই ঘাটতি পুষিয়ে উঠবে।
বাগানবাড়ী এলাকার কৃষক আফাজ উদ্দিন বলেন, ৩০শতাংশ জমিতে কেনাফ জাতের পাট চাষ করেছি। এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এর আগে এতে ভালো ফলন পাইনি। তা ছাড়া পাটের বাজার দরও ভালো। তাই আগামী বছর আরো বেশি জমিতে পাটের চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন জানান, যদিও এ বছর এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাটের চাষাবাদ কিছুটা কম হয়েছে। কিন্তু ফলন ভালো হয়েছে। তা ছাড়া বাজার দর ভালো থাকায় কৃষকেরা আগামী বছরে আরো বেশি জমিতে পাট চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের পর্যাপ্ত পরামর্শ ও সহযোগিতার ফলে পাটের ফলন ভালো হয়েছে বলে তিনি জানান।