মতলব উত্তরেরআধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে হামলা, আটজন গুরুতর আহত, বাড়ী ঘর ভাংচুর

  • আপডেট: ০৩:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মে ২০২০
  • ২৬

হামলায় আহতরা।

মনিরুল ইসলাম মনির:

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মোহনপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের ৪০টি পরিবারের ওপর হামলা হয়েছে। রোববার (১৭ মে) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেখানকার অর্ধশতাধিক ঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে কতিপয় সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় আটজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন ও মুক্তার হোসেনের ওই ইউনিয়নের চরওয়েস্টার গ্রামের অপর ইউপি সদস্য মো. হুমায়ুন খালাশী ও তার স্বজনদের সঙ্গে জমিজমা, টাকা-পয়সার লেনদেন ও এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।

কয়েকদিন আগে শাহাদাত হোসেন ও মো. হুমায়ুন খালাশীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই হামলার জেরে রোববার ভোর রাতে ইউপি সদস্য হুমায়ুন খালাশীর মেয়ের জামাই এখলাশপুর ইউনিয়নের বোরোচর গ্রামের ছিদ্দিক বকাউল তার সহযোগী খবির হোসেন ও শিপন মিয়াসহ দেড় শতাধিক লোক নিয়ে বাহেরচর গ্রামে যায়। সেখানে ককটেল ফুটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পিস্তল, লাঠিসোঁটা ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র নিয়ে ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেনের বাড়িঘর, তার স্বজন, প্রতিবেশি ও গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালায়।

সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে শাহাদাত হোসেন মেম্বার এবং তার ভাই মুক্তার হোসেন, আবির বেপারি, শামসুদ্দিন, চাঁন মিয়া, মনোয়ার শেখ, রফিক বকাউল, আলমগীর বেপারি, মামুন দেওয়ান, জাহাঙ্গীর মিয়া, কাদির মজুমদার, বিল্লাল হোসেন, সফিকুর রহমান ও মেজু বেপারি, জসিম খান’সহ মোট ৪০ ব্যক্তির (৪০ পরিবার) অর্ধশতাধিক বসতঘর ও ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ব্যাপক লুটপাট চালায়। এ সময় তারা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ আরও অনেক মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।

হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর ও আসবাবপত্র।

তাদের হামলায় আহত হন বাহেরচর গ্রামের মোখলেছ গাজীর ছেলে কবির হোসেন (৩৪), মৃত. সিরাজুল ইসলাম খার ছেলে জামাল হোসেন (৪৫), শাহজাহান দেওয়ানের খোকন মিয়া (৩৫), সিরাজুদ্দীনের ছেলে রবিন (২৩), তুজুম আলী চোকদারের ছেলে শামসুদ্দিন (৩৩), মনোয়ার শেখের ছেলে জাকারিয়া (১৭), মনির হোসেনের ছেলে মো. রাজু ১৭) ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী সীমা বেগম (৩০) ও জসিম উদ্দিনের স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৩৮)। তাদের রোববার সকালে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে প্রথম আটজন শাহাদাত হোসেনের লোক। ঘটনার পর সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হলেও ভয়ে ওই এলাকার শতাধিক নারী ও শিশু এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, বোরহান খালাশী, আহার খালাশী, আজাদ খালাশী, কামাল খালাশী, খোরশেদ খালাশী, মহসিন খালাশী, জুয়েল খালাশী নির্দেশে হুমায়ুন খালাসী, বোরচরের সিদ্দিক বকাউল, শিপন খাঁর নেতৃত্বে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। আবারো হামলার আশঙ্কা করছি। গ্রামবাসীকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন জরুরী হয়ে পড়েছে।

মতলব উত্তর থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, থানার এসআই মো. মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় এখনো মামলা হয়নি। মামলা হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

মতলব উত্তরেরআধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে হামলা, আটজন গুরুতর আহত, বাড়ী ঘর ভাংচুর

আপডেট: ০৩:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মে ২০২০

মনিরুল ইসলাম মনির:

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মোহনপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের ৪০টি পরিবারের ওপর হামলা হয়েছে। রোববার (১৭ মে) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেখানকার অর্ধশতাধিক ঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে কতিপয় সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় আটজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন ও মুক্তার হোসেনের ওই ইউনিয়নের চরওয়েস্টার গ্রামের অপর ইউপি সদস্য মো. হুমায়ুন খালাশী ও তার স্বজনদের সঙ্গে জমিজমা, টাকা-পয়সার লেনদেন ও এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।

কয়েকদিন আগে শাহাদাত হোসেন ও মো. হুমায়ুন খালাশীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই হামলার জেরে রোববার ভোর রাতে ইউপি সদস্য হুমায়ুন খালাশীর মেয়ের জামাই এখলাশপুর ইউনিয়নের বোরোচর গ্রামের ছিদ্দিক বকাউল তার সহযোগী খবির হোসেন ও শিপন মিয়াসহ দেড় শতাধিক লোক নিয়ে বাহেরচর গ্রামে যায়। সেখানে ককটেল ফুটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পিস্তল, লাঠিসোঁটা ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র নিয়ে ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেনের বাড়িঘর, তার স্বজন, প্রতিবেশি ও গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালায়।

সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে শাহাদাত হোসেন মেম্বার এবং তার ভাই মুক্তার হোসেন, আবির বেপারি, শামসুদ্দিন, চাঁন মিয়া, মনোয়ার শেখ, রফিক বকাউল, আলমগীর বেপারি, মামুন দেওয়ান, জাহাঙ্গীর মিয়া, কাদির মজুমদার, বিল্লাল হোসেন, সফিকুর রহমান ও মেজু বেপারি, জসিম খান’সহ মোট ৪০ ব্যক্তির (৪০ পরিবার) অর্ধশতাধিক বসতঘর ও ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ব্যাপক লুটপাট চালায়। এ সময় তারা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ আরও অনেক মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।

হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর ও আসবাবপত্র।

তাদের হামলায় আহত হন বাহেরচর গ্রামের মোখলেছ গাজীর ছেলে কবির হোসেন (৩৪), মৃত. সিরাজুল ইসলাম খার ছেলে জামাল হোসেন (৪৫), শাহজাহান দেওয়ানের খোকন মিয়া (৩৫), সিরাজুদ্দীনের ছেলে রবিন (২৩), তুজুম আলী চোকদারের ছেলে শামসুদ্দিন (৩৩), মনোয়ার শেখের ছেলে জাকারিয়া (১৭), মনির হোসেনের ছেলে মো. রাজু ১৭) ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী সীমা বেগম (৩০) ও জসিম উদ্দিনের স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৩৮)। তাদের রোববার সকালে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে প্রথম আটজন শাহাদাত হোসেনের লোক। ঘটনার পর সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হলেও ভয়ে ওই এলাকার শতাধিক নারী ও শিশু এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, বোরহান খালাশী, আহার খালাশী, আজাদ খালাশী, কামাল খালাশী, খোরশেদ খালাশী, মহসিন খালাশী, জুয়েল খালাশী নির্দেশে হুমায়ুন খালাসী, বোরচরের সিদ্দিক বকাউল, শিপন খাঁর নেতৃত্বে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। আবারো হামলার আশঙ্কা করছি। গ্রামবাসীকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন জরুরী হয়ে পড়েছে।

মতলব উত্তর থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, থানার এসআই মো. মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় এখনো মামলা হয়নি। মামলা হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।