মতলব প্রতিনিধি:
বিয়ের প্রলোভন দিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে মতলব দক্ষিণ থানায় মামলা হয়েছে । এ ঘটনায় পুলিশ ধর্ষক মেহেদী হাসান (২৭) কে ১৭ মার্চ তাকে আটক করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মতলব দক্ষিণ উপজেলার ওই মেয়ে ঢাকার শ্যামপুর এলাকায় ফুফুর বাড়িতে থেকে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। সেখানে চাকরি করা অবস্থায় ফেসবুকের মাধ্যমে মেহেদী হাসান নামের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তিনি মালয়েশিয়ায় লেখাপড়া শেষ করে গত ১৬ নভেম্বর বাড়ি ফেরেন। বাড়িতে আসার পর মেহেদীর সঙ্গে ওই তরুণীর যোগাযোগ আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
গত ২৭ জানুয়ারি বিকেলে লঞ্চযোগে ঢাকা থেকে চাঁদপুর হয়ে বাড়ি আসার উদ্দেশে এক সঙ্গে রওনা দেন ওই তরুণ-তরুণী। তাঁরা ওই লঞ্চের একটি কেবিন ভাড়া করেন। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সেখানেই ওই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মেহেদী হাসান। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তাঁরা দুজন বাড়ি থেকে চাঁদপুর হয়ে লঞ্চে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে ভাড়া করা কেবিনে ওই তরুণ আগের মতই একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন তিনি। বাড়ি আসার পর গত ফেব্রুয়ারি জুড়ে ও চলতি মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত তরুণীটির বসতঘরে গিয়ে প্রায় প্রতি রাতে ওই তরুণ বহুবার তাঁকে ধর্ষণ করেন। তরুণী দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাঁকে বিয়ে করার জন্য মেহেদীকে প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাঁর প্রস্তাবে রাজি হন নি মেহেদী।
মেয়েটি জানায়, কয়েক দিন আগে ঘটনাটি তিনি তাঁর বাবা-মা ও খালাকে জানালে তাঁরা বিষয়টি ওই তরুণের ভাই ইউপি সদস্য আবু তাহের ও মামা আলমগীর হোসেনকে জানান।
পরে আবু তাহের ও আলমগীর বিষয়টি মীমাংসার জন্য চাঁদপুর শহরের ষোলঘর এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের একটি কক্ষে ওই তরুণী এবং তাঁর পরিবারের লোকজনকে ডেকে নেন। সেখানে বিয়ের পরিবর্তে আড়াই লাখ টাকার ঘটনাটি রফাদফার প্রস্তাব করা হয়।
মেয়েটির অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছেলে বহুবার তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর সে প্রতিশ্রুতি ভুলে ঘটনাটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে তাঁর পরিবারের মানসম্মান ও তাঁর নিজের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে মঙ্গলবার বিকেলে মতলব দক্ষিণ থানায় মামলা করেন।
মতলব দক্ষিণ থানার ওসি স্বপন কুমার আইচ বলেন, ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়েটি নিজেই বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) অভিযুক্ত মেহেদী হাসানসহ চারজনকে আসামি করে থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। অভিযুক্ত মেহেদী হাসানকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। মামলাটির তদন্ত চলছে।