হাজীগঞ্জে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বেড়েছে মাদক বিক্রেতা ও সেবীদের সংখ্যা, শঙ্কিত অভিভাবক মহল

হাজীগঞ্জ উপজেলার পাড়া-মহল্লায় বেড়েছে জুয়া, মাদক বিক্রেতা ও সেবীদের সংখ্যা। গত কয়েক মাসে এর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মাদক শিমূলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

স্থানীয় সৃত্রে জানাযায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট, গাজাসহ বিভিন্ন চেতনাশক মাদকদ্রব্য। আগের চেয়ে সহজলভ্য হওয়ায় এ উপজেলায় মাদকসেবীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া দিনমজুর কেউই বাদ নেই মাদক সেবন থেকে। চাহিদা থাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা দ্বিগুন দামে বিক্রি করছে গাজা ও ইয়াবা ট্যাবলেট। এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রভাবশালী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকা নেতাকর্মী ও গ্রামের কতিপয় চৌকিদার সদস্যরা। এ কারণে নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাজার রমরমা ব্যবসা ও সেবন চলছে এ এলাকায়। পুলিশ মাঝে মধ্যে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে মাদক সেবীদের আটক করে কোর্টে চালান করে দেয়। কিন্তু ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা চিহ্নিত মাদক ব্যাবসায়ীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাজীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুর, কংগ্রাইশ, হাটিলা, নোয়াপাড়া, কালচোঁ, সিহিরচোঁ, সাহেব বাজার, চেঙ্গাতলী, রাজারগাঁও, বাকিলা রেল স্টেশন, বলাখাল রেল স্টেশন, ওলিপুর খেয়াঘাট, সমেশপুর, ঝাঁকুনী, আল মদিনা বাজার, দেবীপুর, মল্লাডহর, মালিগাঁও, কাশিমপুর, হাজীগঞ্জ বাজারের করিমের বাগান, সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকা, বাদশা হোটেলের পিছনে, এনায়েতপুর হাট খোলা, হাসপাতালের আশপাশের এলাকা, মকিমাবাদ উত্তর, জিয়ানগর, ডিগ্রি কলেজ এলাকা, বালুরমাঠ মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।

নাম প্রকাশে না করার শর্তে এক মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন এ প্রতিবেদককে জানান, টোরাগড় ও মকিমাবাদ এলাকার বাস টার্মিনাল অবাধে চলছে মাদক ব্যবসা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক অধিদফতরের অভিযানে যারা গ্রেফতার হন তারা খুচরা ব্যবসায়ী, কোন অভিযানেই বড় বিক্রেতাদের খোঁজা হয় না। বছরে দু’একবার এ উপজেলা গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে দু-একজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করলেও বড় বড় ব্যবসায়ীরা বহাল তবিয়তে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাসিক মাসোহারা ভিত্তিতে এবং বছরের অধিকাংশ সময় পুলিশের নিরব ভুমিকায় মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

বড়কূল টোরাগড় সেতুর উপর বসে থাকা কয়েকজন যুবক প্রকাশ্যে মাদক সেবন করতে দেখে জনৈক এক ব্যক্তি বাধা দেয়। এতে মাদকসেবীরা তার উপর ছড়ো হয়ে উঠলে আর কেউ প্রতিবাদের সাহস পায়নি। যে কারনে সেখানে দিন দিন বাড়ছে মাদক সেবী বখাটে ছেলেদের আনাগোনা বাড়ছে।

স্থানীয়রা জানান, আগে পুলিশের অবস্থান থাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবন কারীরা গুজুপ্তে কার্যক্রম চালাতো। বর্তমানে পুলিশের তেমন কার্যক্রম না থাকার সুযোগে তারা দোকান পাঠের সাইডে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের কাজকারবার। তাই আমরা প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি যে অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের ধরে আইনের আওতায় আনা হয়। তা না হলে আমাদের সন্তানরা পুরাপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, আমরা ইতিমধ্যে প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়িয়ে একাধিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। মাদকের বিরুদ্ধে বরাবরই পুলিশের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাজীগঞ্জে সাংবাদিক এনায়েত মজুমদারের ভাই তাপাজ্জলের দাফন সম্পন্ন

হাজীগঞ্জে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বেড়েছে মাদক বিক্রেতা ও সেবীদের সংখ্যা, শঙ্কিত অভিভাবক মহল

আপডেট: ০৯:৩৪:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

হাজীগঞ্জ উপজেলার পাড়া-মহল্লায় বেড়েছে জুয়া, মাদক বিক্রেতা ও সেবীদের সংখ্যা। গত কয়েক মাসে এর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মাদক শিমূলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

স্থানীয় সৃত্রে জানাযায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট, গাজাসহ বিভিন্ন চেতনাশক মাদকদ্রব্য। আগের চেয়ে সহজলভ্য হওয়ায় এ উপজেলায় মাদকসেবীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া দিনমজুর কেউই বাদ নেই মাদক সেবন থেকে। চাহিদা থাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা দ্বিগুন দামে বিক্রি করছে গাজা ও ইয়াবা ট্যাবলেট। এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রভাবশালী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকা নেতাকর্মী ও গ্রামের কতিপয় চৌকিদার সদস্যরা। এ কারণে নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাজার রমরমা ব্যবসা ও সেবন চলছে এ এলাকায়। পুলিশ মাঝে মধ্যে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে মাদক সেবীদের আটক করে কোর্টে চালান করে দেয়। কিন্তু ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা চিহ্নিত মাদক ব্যাবসায়ীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাজীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুর, কংগ্রাইশ, হাটিলা, নোয়াপাড়া, কালচোঁ, সিহিরচোঁ, সাহেব বাজার, চেঙ্গাতলী, রাজারগাঁও, বাকিলা রেল স্টেশন, বলাখাল রেল স্টেশন, ওলিপুর খেয়াঘাট, সমেশপুর, ঝাঁকুনী, আল মদিনা বাজার, দেবীপুর, মল্লাডহর, মালিগাঁও, কাশিমপুর, হাজীগঞ্জ বাজারের করিমের বাগান, সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকা, বাদশা হোটেলের পিছনে, এনায়েতপুর হাট খোলা, হাসপাতালের আশপাশের এলাকা, মকিমাবাদ উত্তর, জিয়ানগর, ডিগ্রি কলেজ এলাকা, বালুরমাঠ মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।

নাম প্রকাশে না করার শর্তে এক মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন এ প্রতিবেদককে জানান, টোরাগড় ও মকিমাবাদ এলাকার বাস টার্মিনাল অবাধে চলছে মাদক ব্যবসা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক অধিদফতরের অভিযানে যারা গ্রেফতার হন তারা খুচরা ব্যবসায়ী, কোন অভিযানেই বড় বিক্রেতাদের খোঁজা হয় না। বছরে দু’একবার এ উপজেলা গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে দু-একজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করলেও বড় বড় ব্যবসায়ীরা বহাল তবিয়তে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাসিক মাসোহারা ভিত্তিতে এবং বছরের অধিকাংশ সময় পুলিশের নিরব ভুমিকায় মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

বড়কূল টোরাগড় সেতুর উপর বসে থাকা কয়েকজন যুবক প্রকাশ্যে মাদক সেবন করতে দেখে জনৈক এক ব্যক্তি বাধা দেয়। এতে মাদকসেবীরা তার উপর ছড়ো হয়ে উঠলে আর কেউ প্রতিবাদের সাহস পায়নি। যে কারনে সেখানে দিন দিন বাড়ছে মাদক সেবী বখাটে ছেলেদের আনাগোনা বাড়ছে।

স্থানীয়রা জানান, আগে পুলিশের অবস্থান থাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবন কারীরা গুজুপ্তে কার্যক্রম চালাতো। বর্তমানে পুলিশের তেমন কার্যক্রম না থাকার সুযোগে তারা দোকান পাঠের সাইডে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের কাজকারবার। তাই আমরা প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি যে অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের ধরে আইনের আওতায় আনা হয়। তা না হলে আমাদের সন্তানরা পুরাপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, আমরা ইতিমধ্যে প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়িয়ে একাধিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। মাদকের বিরুদ্ধে বরাবরই পুলিশের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রয়েছে।