হাজীগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ঢাবি শিক্ষার্থী আহত, থানায় অভিযোগ

কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা। ছবি-নতুনেরকথা।

হাজীগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের অতর্কিত হামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীসহ দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে। আহত শিক্ষার্থী মতিউর রহমান (২০) ইতোমধ্যে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭ নং বড়কূল ইউনিয়নের একতা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নাটেহার গ্রামের ফাছিউর রহমানের ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মতিউর রহমান(২০), ওই গ্রামের জাকির পাটোয়ারীর ছেলে সিয়াম (২০) ওপর হামলা চালায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

হামলাকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল প্রতাপপুর গ্রামের কবিরাজ বাড়ির ইব্রাহিমের ছেলে হাসান(২২), নাটেহারা গ্রামের সাবেক মেম্বার আক্তারের ছেলে রনি(২২), রিফাত(২০), রিপন(১৮), প্রতাপপুর ইসমাইলের ছেলে রাকিব (২২), প্রতাপপুর বেপারি বাড়ির দেলোয়ারের ছেলে বাঁধন(২০)। হামলায় আহতরা আলীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।

মতিউর রহমান ঢাবির ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি জানান, অতীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার কারণে হাসান তাকে হুমকি দিয়েছিল। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট হলেও, সেই দিন হঠাৎ হামলা চালানো হয়। হামলায় লাথি, ঘুষি ও থাপ্পরের আঘাতে তিনি ও তার সঙ্গী আহত হন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আক্তার মেম্বারের ছেলে রনির নেতৃত্বে মতিউর এবং সিয়ামের ওপর এই হামলা চালানো হয়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে ঘটে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

এলাকার বাসিন্দাদের মতে, আক্তার মেম্বারের ছেলেরা স্থানীয়ভাবে চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। চুরি, মাদক, ছিনতাই, ইভটিজিং সহ প্রায় সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে তারা জড়িত। তাদের নেতৃত্বে এলাকায় একটি সক্রিয় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে, যারা নিয়মিতভাবে অপরাধমূলক তৎপরতায় লিপ্ত থাকে। গ্রামের মানুষ তাদের অত্যাচারে দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছে এবং সাহস করে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আক্তার মেম্বারকে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন বন্ধ করে রাখেন।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, কিশোর গ্যাং এবং তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে। তিনি আশ্বস্ত করেন, অভিযোগের ভিত্তিতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে মাদক, ছিনতাই এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্তদের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা হবে।

হাজীগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের অপতৎপরতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে স্থানীয়রা আতঙ্কিত। এলাকাবাসী প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে, আহত ঢাবি শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ দায়ের করে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করছেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

হাজীগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ঢাবি শিক্ষার্থী আহত, থানায় অভিযোগ

আপডেট: ০৯:৩০:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

হাজীগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের অতর্কিত হামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীসহ দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে। আহত শিক্ষার্থী মতিউর রহমান (২০) ইতোমধ্যে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭ নং বড়কূল ইউনিয়নের একতা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নাটেহার গ্রামের ফাছিউর রহমানের ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মতিউর রহমান(২০), ওই গ্রামের জাকির পাটোয়ারীর ছেলে সিয়াম (২০) ওপর হামলা চালায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

হামলাকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল প্রতাপপুর গ্রামের কবিরাজ বাড়ির ইব্রাহিমের ছেলে হাসান(২২), নাটেহারা গ্রামের সাবেক মেম্বার আক্তারের ছেলে রনি(২২), রিফাত(২০), রিপন(১৮), প্রতাপপুর ইসমাইলের ছেলে রাকিব (২২), প্রতাপপুর বেপারি বাড়ির দেলোয়ারের ছেলে বাঁধন(২০)। হামলায় আহতরা আলীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।

মতিউর রহমান ঢাবির ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি জানান, অতীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার কারণে হাসান তাকে হুমকি দিয়েছিল। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বিষয়টি মিটমাট হলেও, সেই দিন হঠাৎ হামলা চালানো হয়। হামলায় লাথি, ঘুষি ও থাপ্পরের আঘাতে তিনি ও তার সঙ্গী আহত হন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আক্তার মেম্বারের ছেলে রনির নেতৃত্বে মতিউর এবং সিয়ামের ওপর এই হামলা চালানো হয়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে ঘটে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

এলাকার বাসিন্দাদের মতে, আক্তার মেম্বারের ছেলেরা স্থানীয়ভাবে চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। চুরি, মাদক, ছিনতাই, ইভটিজিং সহ প্রায় সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে তারা জড়িত। তাদের নেতৃত্বে এলাকায় একটি সক্রিয় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে, যারা নিয়মিতভাবে অপরাধমূলক তৎপরতায় লিপ্ত থাকে। গ্রামের মানুষ তাদের অত্যাচারে দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছে এবং সাহস করে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আক্তার মেম্বারকে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন বন্ধ করে রাখেন।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, কিশোর গ্যাং এবং তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে। তিনি আশ্বস্ত করেন, অভিযোগের ভিত্তিতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে মাদক, ছিনতাই এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্তদের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা হবে।

হাজীগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের অপতৎপরতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে স্থানীয়রা আতঙ্কিত। এলাকাবাসী প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে, আহত ঢাবি শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ দায়ের করে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করছেন।