চাঁদপুরে বিপাকে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ

  • আপডেট: ০৯:৩৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০২০
  • ৩৬

মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ॥

বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশ লকডাউনে রাখা হয়েছে। সরকারি ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সবাইকে নিজ নিজ ঘরে নিরাপদে অবস্থানের জন্য নির্দেশ রয়েছে। ছুটির ঘোষনা পাশাপাশি করোনা রোধে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের কর্মহীন মানুষের জন্য বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খাদ্য সহায়তা বাছাইকৃত কর্মহারা পরিবার গুলোতে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ মোতাবেক স্থানীয় প্রশাসন দরিদ্র পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীরাও বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় গরীব ও কর্মহীনদের মাঝে চাল, তেল, পিয়াজ, ডালসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। এতে করে বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে প্রকৃত কর্মহারা পরিবারগুলোর সবাই কি এই খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন? প্রশ্ন থেকেই যায়।

চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভার রান্ধুনীমুড়া গ্রামের মৃত রমিজউদ্দিনের স্ত্রী সফি বেগম (৬৫), একই বাড়ির মৃত সফিউল আজমের স্ত্রী জরিনা খাতুন (৫০০) তারা জানান, করোনার লকডাউনে তারা এখনও কোনও খাদ্য সহায়তা পাননি। সফি বেগম বলেন, তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬ জন। পুত্র শহিদ শেখ রিক্সা চালায়। এখন ঘর থেকে বাইরে যাইতে পারছেনা। কাজ বন্ধ। স্থানীয়ভাবেও কোনও খাদ্য পাইনি! জরিনা বেগম বলেন, আমি ভিক্ষা করে খাই। আমির স্বামী বিভিন্ন কাজকর্ম করে। করোনার কারণে সবই বন্ধ। আগের মতো মানুষ ভিক্ষা দেয়না। কেউ নাই আমারে সাহায্য করবো। কখনও কখনও অনাহারে থাকছি। একথা বলতে বলতে চোখ মুছেন তিনি। তাদের কথাবার্তায় ও চোখে মুখে খাদ্য সংকটের ছাপ পড়ার লক্ষ্য করা গেছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া এলাকারি বাসিন্দা জমিরউদ্দিন বলেন, চা দোকান ছিল এখন বন্ধ। পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। স্থানীয় শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ১০ কেজি চাল দিয়ে ছিল এখন চাউল শেষ। তাই খুবই কষ্টে আছি। আর কত দিন থাকতে হয় বলতে পারিনা।

চাঁদপুর সদর ইউনিনের বাগাদী এলাকার বাগাদী গ্রামের মৃত করিম ঢালীর পুত্র দিনমজুর দেলোয়ার (৪৮) বলেন, করোনার কারণে কামে যাইতে পারিনা। ঘরেই থাকি স্ত্রী কন্যা ও পুত্রসহ পরিবারে সদস্য ৬ জন। স্থানীয়ভাবে কিছুটা খাদ্য সামগ্রী পেলেও তা যথেষ্ট নয়। একই গ্রামের মৃত নাজির শেখের পুত্র নির্মাণ শ্রমিক নাছের শেখ (৪০) বর্তমান পরিস্থিতিতে সে কর্মহারা তার সংসারে সদস্য ৫ জন। তিনি বলেন, এখনও কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি। প্রায় ১মাস যাবত তিনি করোনা আতঙ্কে কর্মহীন। প্রায় সময়ই অনাহারে থাকতে হচ্ছে তার।

কারণ হিসেবে জানা যায়, স্থানীয় ইউপি সদস্যরা সরকারি বা বেসকারি কোনও ত্রাণ আসলে তাদের পছন্দের মানুষকেই দিচ্ছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এমন অনেক পরিবার আছে যারা একাধিকবার বিভিন্ন মাধ্যমে খাদ্য সহযোগিতা পেয়েছেন। আবার অনেক বাড়িতে কোনও কোনও কর্মহীন পরিবারের ঘরে এখনও খাদ্য সহযোগিতা পাচ্ছেননা বলে জানা যায়। জেলায় এই পরিস্থিতিতে এমন অনেক কর্মহারা পরিবার আছেন তারা কারও কাছে খাদ্য সহযোগিতা চাইতে পারছেননা। অনেকেই কর্মহীন হলেও লোক লজ্জার কারণে বলতেও পারছেননা।

আবার অনেক কর্মহীন মানুষ জানান, জেলায় একটি ফোন নম্বরে ফোন করলে খাদ্য বাড়ীতে এনে দিয়ে যায় শুনেছি। কিন্তু নম্বর পাচ্ছিনা। তাই ফোনও করতে পারিনাই। আবার অনেকে জেলা প্রশাসকের “ত্রাণ যাবে বাড়ী” মোবাইল নম্বরে ফোন করে খাদ্য দ্রব্য পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তাও অপ্রতুল বলে জানান তারা।

৯নং গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. হীরা জানান, এসব স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো ত্রাণের অপেক্ষায়। করোনার কারণে কর্মহীন থাকায় তাদের কষ্ট বেড়েছে। তবে সরকারি এবং বেসরকারিভাবে আমাদের উপজেলায় জেলায় ত্রাণ তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জানান যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তা নগন্য। আমাদের এলাকায় গরীব লোক বেশী সবাই ত্রাণের জন্য এসে বসে থাকে। প্রতি ওয়ার্ডে ১০/১৫জনকে দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ বলেন, দেশব্যাপী করোনা রোধে যে পরিস্থিতি হয়েছে এটা খুবই ভয়াবহ। জীবন যাত্রায় মানুষ সার্বিকভাবেই অসহায় হয়ে পড়ছেন। এখনও কর্মহারা সাধারণ মানুষ করোনা রোধ প্রতিযোগিতায় অনেকেই হয়ত টিকে আছেন। এই পরিস্থিতি যদি আরো বেশী দিন চলমান থাকে তাহলে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ গুলো সার্বিকভাবেই চরমদুর্ভোগে পড়বে। নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়বে। ত্রাণ সহায়তা তারা যাই পাচ্ছেন এটা একটি পরিবারের জন্য প্রর্যাপ্ত নয়। এরমধ্যেও অনেক পরিবার খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেননা বলেও শুনতে পাওয়া যায়। তারা মনে করেন, খাদ্য সহায়তা বন্টনে এলাকা ভিত্তিক স্থানীয় ওর্য়াডের জনপ্রতিনিধিগণ বাছাইকৃত ও প্রকৃত দরিদ্র পরিবার গুলোর মধ্যেই সঠিকভাবে বিতরণ করেন তাহলে এখানে কেউ বাদ পরবে না। তারা মনে করছেন মানুষ যতই কষ্ট ও দুর্ভোগের স্বীকার হননা কেন সরকারে নির্দেশ অমান্য করলে চলবেনা। করোনা রোধে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। করোনা ভাইরাস সংক্রম রোধে হোম কোয়ারেন্টি’র বিকল্প কিছু হতে পারেনা। জীবন বাচাতে সবাইকে ঘরেই নিরাপদে থাকতে হবে।

কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানান, নিম্ন আয়ের মানুষের চেয়েও কিছু মধ্যবিত্ত পরিবার আছে তারা খুবই বিপদগ্রস্ত। মুখ খুলে কারো কাছে চাইতে পারছেনা আবার বলতেও পারছেনা। তাদের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে।

ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ আছে, গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের। কয়েকজন অভিযোগ করেন শুনি শুধু ত্রাণ দেয়। কোথায় দেয়, কে দেয় জানিনা। গেলে শুনি শেষ তাহলে কাকে দিচ্ছে। আসলেই দিচ্ছেতো? নাকি লোক দেখানো!

চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলায় সরকারিভাবে ত্রাণ দেয়া শুরু হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ ইউনিয়ন ভিত্তিক এ ত্রাণ প্রদান করছেন। এ ছাড়া চাঁদপুর সদরে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান ৪টি হোটেলে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রতিদিন দুপরে একবেলা ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। জেলা প্রশাসকের “ত্রাণ যাবে বাড়ী” কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকালে চট্রগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে টেলিকনফারেন্সে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুর জেলা প্রশাসককে দক্ষ জেলা প্রশাসক হিসেবে অভিহিত করেন এবং অন্যান্য জেলাকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের ত্রাণ কার্যক্রম ফলো করার কথা বলেন।

এর বাহিরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান পিপিএম পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রত্যেক উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ করছেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য মোতাহার হোসেন পাটোয়ারী’র সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যাপক জনসমাগম

চাঁদপুরে বিপাকে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ

আপডেট: ০৯:৩৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০২০

মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ॥

বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশ লকডাউনে রাখা হয়েছে। সরকারি ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সবাইকে নিজ নিজ ঘরে নিরাপদে অবস্থানের জন্য নির্দেশ রয়েছে। ছুটির ঘোষনা পাশাপাশি করোনা রোধে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের কর্মহীন মানুষের জন্য বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খাদ্য সহায়তা বাছাইকৃত কর্মহারা পরিবার গুলোতে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ মোতাবেক স্থানীয় প্রশাসন দরিদ্র পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীরাও বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় গরীব ও কর্মহীনদের মাঝে চাল, তেল, পিয়াজ, ডালসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। এতে করে বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে প্রকৃত কর্মহারা পরিবারগুলোর সবাই কি এই খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন? প্রশ্ন থেকেই যায়।

চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভার রান্ধুনীমুড়া গ্রামের মৃত রমিজউদ্দিনের স্ত্রী সফি বেগম (৬৫), একই বাড়ির মৃত সফিউল আজমের স্ত্রী জরিনা খাতুন (৫০০) তারা জানান, করোনার লকডাউনে তারা এখনও কোনও খাদ্য সহায়তা পাননি। সফি বেগম বলেন, তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬ জন। পুত্র শহিদ শেখ রিক্সা চালায়। এখন ঘর থেকে বাইরে যাইতে পারছেনা। কাজ বন্ধ। স্থানীয়ভাবেও কোনও খাদ্য পাইনি! জরিনা বেগম বলেন, আমি ভিক্ষা করে খাই। আমির স্বামী বিভিন্ন কাজকর্ম করে। করোনার কারণে সবই বন্ধ। আগের মতো মানুষ ভিক্ষা দেয়না। কেউ নাই আমারে সাহায্য করবো। কখনও কখনও অনাহারে থাকছি। একথা বলতে বলতে চোখ মুছেন তিনি। তাদের কথাবার্তায় ও চোখে মুখে খাদ্য সংকটের ছাপ পড়ার লক্ষ্য করা গেছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া এলাকারি বাসিন্দা জমিরউদ্দিন বলেন, চা দোকান ছিল এখন বন্ধ। পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। স্থানীয় শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ১০ কেজি চাল দিয়ে ছিল এখন চাউল শেষ। তাই খুবই কষ্টে আছি। আর কত দিন থাকতে হয় বলতে পারিনা।

চাঁদপুর সদর ইউনিনের বাগাদী এলাকার বাগাদী গ্রামের মৃত করিম ঢালীর পুত্র দিনমজুর দেলোয়ার (৪৮) বলেন, করোনার কারণে কামে যাইতে পারিনা। ঘরেই থাকি স্ত্রী কন্যা ও পুত্রসহ পরিবারে সদস্য ৬ জন। স্থানীয়ভাবে কিছুটা খাদ্য সামগ্রী পেলেও তা যথেষ্ট নয়। একই গ্রামের মৃত নাজির শেখের পুত্র নির্মাণ শ্রমিক নাছের শেখ (৪০) বর্তমান পরিস্থিতিতে সে কর্মহারা তার সংসারে সদস্য ৫ জন। তিনি বলেন, এখনও কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি। প্রায় ১মাস যাবত তিনি করোনা আতঙ্কে কর্মহীন। প্রায় সময়ই অনাহারে থাকতে হচ্ছে তার।

কারণ হিসেবে জানা যায়, স্থানীয় ইউপি সদস্যরা সরকারি বা বেসকারি কোনও ত্রাণ আসলে তাদের পছন্দের মানুষকেই দিচ্ছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এমন অনেক পরিবার আছে যারা একাধিকবার বিভিন্ন মাধ্যমে খাদ্য সহযোগিতা পেয়েছেন। আবার অনেক বাড়িতে কোনও কোনও কর্মহীন পরিবারের ঘরে এখনও খাদ্য সহযোগিতা পাচ্ছেননা বলে জানা যায়। জেলায় এই পরিস্থিতিতে এমন অনেক কর্মহারা পরিবার আছেন তারা কারও কাছে খাদ্য সহযোগিতা চাইতে পারছেননা। অনেকেই কর্মহীন হলেও লোক লজ্জার কারণে বলতেও পারছেননা।

আবার অনেক কর্মহীন মানুষ জানান, জেলায় একটি ফোন নম্বরে ফোন করলে খাদ্য বাড়ীতে এনে দিয়ে যায় শুনেছি। কিন্তু নম্বর পাচ্ছিনা। তাই ফোনও করতে পারিনাই। আবার অনেকে জেলা প্রশাসকের “ত্রাণ যাবে বাড়ী” মোবাইল নম্বরে ফোন করে খাদ্য দ্রব্য পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তাও অপ্রতুল বলে জানান তারা।

৯নং গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. হীরা জানান, এসব স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো ত্রাণের অপেক্ষায়। করোনার কারণে কর্মহীন থাকায় তাদের কষ্ট বেড়েছে। তবে সরকারি এবং বেসরকারিভাবে আমাদের উপজেলায় জেলায় ত্রাণ তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জানান যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তা নগন্য। আমাদের এলাকায় গরীব লোক বেশী সবাই ত্রাণের জন্য এসে বসে থাকে। প্রতি ওয়ার্ডে ১০/১৫জনকে দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ বলেন, দেশব্যাপী করোনা রোধে যে পরিস্থিতি হয়েছে এটা খুবই ভয়াবহ। জীবন যাত্রায় মানুষ সার্বিকভাবেই অসহায় হয়ে পড়ছেন। এখনও কর্মহারা সাধারণ মানুষ করোনা রোধ প্রতিযোগিতায় অনেকেই হয়ত টিকে আছেন। এই পরিস্থিতি যদি আরো বেশী দিন চলমান থাকে তাহলে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ গুলো সার্বিকভাবেই চরমদুর্ভোগে পড়বে। নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়বে। ত্রাণ সহায়তা তারা যাই পাচ্ছেন এটা একটি পরিবারের জন্য প্রর্যাপ্ত নয়। এরমধ্যেও অনেক পরিবার খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেননা বলেও শুনতে পাওয়া যায়। তারা মনে করেন, খাদ্য সহায়তা বন্টনে এলাকা ভিত্তিক স্থানীয় ওর্য়াডের জনপ্রতিনিধিগণ বাছাইকৃত ও প্রকৃত দরিদ্র পরিবার গুলোর মধ্যেই সঠিকভাবে বিতরণ করেন তাহলে এখানে কেউ বাদ পরবে না। তারা মনে করছেন মানুষ যতই কষ্ট ও দুর্ভোগের স্বীকার হননা কেন সরকারে নির্দেশ অমান্য করলে চলবেনা। করোনা রোধে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। করোনা ভাইরাস সংক্রম রোধে হোম কোয়ারেন্টি’র বিকল্প কিছু হতে পারেনা। জীবন বাচাতে সবাইকে ঘরেই নিরাপদে থাকতে হবে।

কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানান, নিম্ন আয়ের মানুষের চেয়েও কিছু মধ্যবিত্ত পরিবার আছে তারা খুবই বিপদগ্রস্ত। মুখ খুলে কারো কাছে চাইতে পারছেনা আবার বলতেও পারছেনা। তাদের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে।

ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ আছে, গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের। কয়েকজন অভিযোগ করেন শুনি শুধু ত্রাণ দেয়। কোথায় দেয়, কে দেয় জানিনা। গেলে শুনি শেষ তাহলে কাকে দিচ্ছে। আসলেই দিচ্ছেতো? নাকি লোক দেখানো!

চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলায় সরকারিভাবে ত্রাণ দেয়া শুরু হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ ইউনিয়ন ভিত্তিক এ ত্রাণ প্রদান করছেন। এ ছাড়া চাঁদপুর সদরে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান ৪টি হোটেলে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রতিদিন দুপরে একবেলা ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। জেলা প্রশাসকের “ত্রাণ যাবে বাড়ী” কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকালে চট্রগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে টেলিকনফারেন্সে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুর জেলা প্রশাসককে দক্ষ জেলা প্রশাসক হিসেবে অভিহিত করেন এবং অন্যান্য জেলাকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের ত্রাণ কার্যক্রম ফলো করার কথা বলেন।

এর বাহিরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান পিপিএম পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রত্যেক উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ করছেন।