• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

কাজ না করেই অর্ধকোটি টাকা বিল!

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হালা রাহরিত। ছবি-ত্রিনদী

অনলাইন ডেস্ক:

সরকারের একটি আবাসন প্রকল্পে নির্ধারিত পরিমাণ মাটি ভরাট না করেই অগ্রিম ৫০ লাখ ৪ হাজার ২৯২ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এক বছর পর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ী সরকারের কাছে তাদের জামানত ফেরত চাইলে মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর কর্র্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করে। এ কমিটিও তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের কাছে গত ২৮ আগস্ট একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ঘটনাটি ঘটেছে জাতীয় গৃহায়ন কর্র্তৃপক্ষের (জাগৃক) ‘রাজশাহী জেলার তেরখাদিয়ায় সাইট

অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন’ প্রকল্পে। এ সময় দায়িত্বে ছিলেন জাগৃকের নির্বাহী প্রকৌশলী পরিমল কুমার কুরি, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, উপসহকারী প্রকৌশলী দেবাইন কুমার সরকার ও বাবুল আখতার।

জাগৃকের কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পের কাজের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি। ২ কোটি ১৬ লাখ ১২ হাজার ৫০৬ টাকা ব্যয়ে হাতে নেওয়া এ কাজ শেষ হয় একই বছরের ১৮ এপ্রিল। এ প্রকল্পের কাজ হওয়ার এক বছর পর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছে জমা রাখা জামানতের অর্থ ফেরত পেতে আবেদন করে। এরপর সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে বিপুল পরিমাণ মাটি এখনো ভরাট হয়নি। এরপর জাগৃকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পর্যায়ের এক কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এ ঘটনা সংস্থার সর্বোচ্চ পর্যায় অবহিত হওয়ার পর চলতি বছরের ১৭ জুন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। জাগৃকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিকল্পনা, নকশা ও বিশেষ প্রকল্প) দেওয়ান মাউদুদুর রহমানকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (বগুড়া উপবিভাগ) মো. জিয়াউর রহমান ও ঢাকা ডিভিশন-২-এর সার্ভেয়ার মো. আবদুর রহমান। এ কমিটি গত ২৮ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি ও অনুমোদিত প্রাক্কলন অনুযায়ী মোট মাটি ভরাট বাকি আছে ১৮ হাজার ৩৬৪ দশমিক ৩১ ঘনমিটার। প্রতি ঘনমিটার ২৭২ দশমিক ৫০১ টাকা দরে মোট ৫০ লাখ ৪ হাজার ২৯২ দশমিক ৮৪ টাকার মাটি ভরাটের কাজ এখনো বাকি আছে মর্মে কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান জাগৃকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিকল্পনা, নকশা ও বিশেষ প্রকল্প) দেওয়ান মাউদুদুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ প্রকল্পের পুরো বিল পরিশোধ করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ঠিকাদার এখন তাদের জামানত ও স্রিংকেজ অর্থ ফেরত নেবে। এ অবস্থায় আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাঠপর্যায়ে মাটি ভরাট ঠিক আছে কি না খতিয়ে দেখতে। আমরা সব ধরনের কারিগরি বিষয়াদি যাচাই-বাছাই করে দেখেছি চুক্তি অনুযায়ী ১৮ হাজার ৩৬৪ দশমিক ৩১ ঘনমিটার মাটি কম ভরাট হয়েছে; যা টাকার হিসাবে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মাটি কম আছে। তাই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে জমা রাখা অর্থ ফেরত না দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছি।’

এ কাজ তদারকির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে প্রতিবেদনে কোনো সুপারিশ নেই এ প্রশ্নের জবাবে এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমাদের তদন্ত কমিটিকে শুধু মাটি ভরাটের বিষয়টি খতিয়ে দেখার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রতিবেদন যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। দায়ীদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তি হবে তা ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।’

এ অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী পরিমল কুমার কুরি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। মাটি যদি কম ভরাট থাকে তাহলে আবার ভরাট করে দেওয়া হবে। সরকারের কাছে জামানতের টাকা আছে।’

এ বিষয়ে জানতে জাগৃকের চেয়ারম্যান মো. রাশিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

error: Content is protected !!