শাহরাস্তিতে সরকারী ঘরের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ২৫ হাজার টাকায় দফারফা

  • আপডেট: ০৩:৩৩:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯
  • ৬৫

স্টাফ রিপোর্টার:

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ঘর বিতরণে টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি ২৫ হাজার টাকায় দফারফা করতে আত্মসাতকারীরা বিভিন্ন মহলে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে। এ নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন নানা জল্পনা চলছে। গত ২৫ মে শনিবার রাত ৯ টায় চারু পাটোয়ারী বাড়িতে প্রভাবশালী আত্মসাতকারীরা অসহায় রাবেয়াকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং পঁচিশ হাজার টাকায় বিষয়টি শেষ করার জন্য বাধ্য করতে এলাকার এক শ্রেনীর লোক উঠেপড়ে লেগেছে- এমন তথ্য এলাকাবাসীর।

এব্যাপারে রাবেয়া বলেন, আমি অসহায় বলে এমন ঘটনাটির বিচার কারও কাছে পাইনি। নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগটি তুলে নিতে আনসার আলী, রিপন চন্দ্র ধাম ও সাত্তার আমাকে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করেন এবং নানা জন দিয়ে সুপারিশ করান। তারা জোরপূর্বক মামলা তুলে নিতে বলেন এবং আমাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে স্বীকার করেন। আমি ওই টাকা গ্রহন করিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, একই বাড়ির হাজ্বী সিরাজুল ইসলাম, মুন্সী বাড়ির ইউনুচ মাষ্টার, পাটোয়ারী বাড়ির মাইনুদ্দিন, অভিযুক্ত আনসার আলী, রিপন চন্দ্র ধাম, আবদুস সাত্তারসহ আরও অনেকে।

ঘটনাকারী আবদুস সাত্তার বলেন, আমি টাকা নিয়েছি সত্য কিন্তু টাকাগুলো যাদের মাঝে বিতরণ করেছি আমি তাদের নাম প্রকাশ করতে পারছি না। আজ তারা আমার সাথে নেই। তাই আমি রাবেয়াকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি শেষ করতে এবং মামলা তুলে নিয়ে অনুরোধ করেছি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বলেন, তারা এলাকায় বিষয়টি যে ভাবেই শেষ করুক না কেন আমার আদালতে তাদের আসতে হবে এবং স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এলাকাবাসী বলেন, স্থানিয় এক শ্রেনীর ব্যক্তিদের সহযোগিতায় যদি কোনো অপরাধি মুক্তি পায় তাহলে বিধবা রাবেয়া যখন তাদের জানিয়ে ছিলেন তখন তারা ঘটনাটি নিস্পত্তি করতে কেনো ভূমিকা পালন করেন নি?

এ প্রশ্নে- অপরাধি যারাই হোক তারা আওয়ামীলীগ করে এবং তারা আমাদের দলীয় লোক এমন উত্তরই আসবে। আর তাদের কারনে অসহায় ব্যক্তিরা ন্যায় ও ন্যায্য বিচার থেকে বঞ্চিত হলে তারা কার দুয়ারে আশ্রয় নিবে- এমন প্রশ্ন তাদের। তারা আরও বলেন, শত খারাপের মাঝে এখনও এমন ভালো মানুষ রয়েছে যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে নিরলস ভূমিকা পালন করছেন।

প্রসঙ্গতঃ গত ৯ মে বৃহস্পতিবার উপজেলার উল্যাশ্বর গ্রামের চারু পাটোয়ারী বাড়ির মৃত নুরুল হকের স্ত্রী রাবেয়ার কাছ থেকে সরকারী ঘর দেয়ার নাম করে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় একই গ্রামের অমূল্য চন্দ্র ধামের পুত্র রিপন চন্দ্র ধাম, মৃত রঞ্জন আলীর পুত্র আবদুস সাত্তার ও মৃত ওমর আলীর পুত্র আনসার আলী। এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ রাবেয়া খাতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

রাবেয়ার অভিযোগের আলোকে ২৯ মে বুধবার দুপুর ১২ টায় বিবাদীদের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শিরিন আক্তারের কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশীত নোটিশ প্ররণ করা হয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যেভাবে হ ত্যা করা হয় তরুণ আইনজীবী সাইফলকে

শাহরাস্তিতে সরকারী ঘরের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ২৫ হাজার টাকায় দফারফা

আপডেট: ০৩:৩৩:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার:

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ঘর বিতরণে টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি ২৫ হাজার টাকায় দফারফা করতে আত্মসাতকারীরা বিভিন্ন মহলে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে। এ নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন নানা জল্পনা চলছে। গত ২৫ মে শনিবার রাত ৯ টায় চারু পাটোয়ারী বাড়িতে প্রভাবশালী আত্মসাতকারীরা অসহায় রাবেয়াকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং পঁচিশ হাজার টাকায় বিষয়টি শেষ করার জন্য বাধ্য করতে এলাকার এক শ্রেনীর লোক উঠেপড়ে লেগেছে- এমন তথ্য এলাকাবাসীর।

এব্যাপারে রাবেয়া বলেন, আমি অসহায় বলে এমন ঘটনাটির বিচার কারও কাছে পাইনি। নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগটি তুলে নিতে আনসার আলী, রিপন চন্দ্র ধাম ও সাত্তার আমাকে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করেন এবং নানা জন দিয়ে সুপারিশ করান। তারা জোরপূর্বক মামলা তুলে নিতে বলেন এবং আমাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে স্বীকার করেন। আমি ওই টাকা গ্রহন করিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, একই বাড়ির হাজ্বী সিরাজুল ইসলাম, মুন্সী বাড়ির ইউনুচ মাষ্টার, পাটোয়ারী বাড়ির মাইনুদ্দিন, অভিযুক্ত আনসার আলী, রিপন চন্দ্র ধাম, আবদুস সাত্তারসহ আরও অনেকে।

ঘটনাকারী আবদুস সাত্তার বলেন, আমি টাকা নিয়েছি সত্য কিন্তু টাকাগুলো যাদের মাঝে বিতরণ করেছি আমি তাদের নাম প্রকাশ করতে পারছি না। আজ তারা আমার সাথে নেই। তাই আমি রাবেয়াকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি শেষ করতে এবং মামলা তুলে নিয়ে অনুরোধ করেছি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বলেন, তারা এলাকায় বিষয়টি যে ভাবেই শেষ করুক না কেন আমার আদালতে তাদের আসতে হবে এবং স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এলাকাবাসী বলেন, স্থানিয় এক শ্রেনীর ব্যক্তিদের সহযোগিতায় যদি কোনো অপরাধি মুক্তি পায় তাহলে বিধবা রাবেয়া যখন তাদের জানিয়ে ছিলেন তখন তারা ঘটনাটি নিস্পত্তি করতে কেনো ভূমিকা পালন করেন নি?

এ প্রশ্নে- অপরাধি যারাই হোক তারা আওয়ামীলীগ করে এবং তারা আমাদের দলীয় লোক এমন উত্তরই আসবে। আর তাদের কারনে অসহায় ব্যক্তিরা ন্যায় ও ন্যায্য বিচার থেকে বঞ্চিত হলে তারা কার দুয়ারে আশ্রয় নিবে- এমন প্রশ্ন তাদের। তারা আরও বলেন, শত খারাপের মাঝে এখনও এমন ভালো মানুষ রয়েছে যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে নিরলস ভূমিকা পালন করছেন।

প্রসঙ্গতঃ গত ৯ মে বৃহস্পতিবার উপজেলার উল্যাশ্বর গ্রামের চারু পাটোয়ারী বাড়ির মৃত নুরুল হকের স্ত্রী রাবেয়ার কাছ থেকে সরকারী ঘর দেয়ার নাম করে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় একই গ্রামের অমূল্য চন্দ্র ধামের পুত্র রিপন চন্দ্র ধাম, মৃত রঞ্জন আলীর পুত্র আবদুস সাত্তার ও মৃত ওমর আলীর পুত্র আনসার আলী। এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ রাবেয়া খাতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

রাবেয়ার অভিযোগের আলোকে ২৯ মে বুধবার দুপুর ১২ টায় বিবাদীদের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শিরিন আক্তারের কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশীত নোটিশ প্ররণ করা হয়েছে।