হাজীগঞ্জ খাদ্য গুদামে রাতের অন্ধকারে দালালদের কাছ থেকে শতাধীক টন ধান ক্রয়ের অভিযোগ

  • আপডেট: ১১:৩৫:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯
  • ৭৯

কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে
গাজী মহিনউদ্দিন॥
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে রাতের অন্ধকারে দাললদের কাছ থেকে শতাধীক ধান ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা অসিম চন্দ্র বর্ধনের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বৈশাখী বড়–য়া প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের নিমিত্তে তার লিখিত স্বাক্ষর ছাড়া ধান ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞারোপ করেছে। তার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে ভূক্তভোগী কৃষকরা।
হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কৃষক আলী মিয়া জানান, রবিবার রাতের অন্ধকারে কয়েক ট্রাক ধান খাদ্য গুদামে প্রবেশ করেছে। আমাদের সামনে এ ধানগুলো গুদামজাত করা হয়েছে। একই সাথে কয়েকজন কৃষকও এর সত্যতা বলেন।
এ সময় কয়েকজন কৃষক খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সম্মুখেই প্রতিবাদ করে জানান, গুদামের কর্মকর্তার সামনে দালাল বসে বসে আমাদের ধান ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে আমাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করছে অথচ অফিসার সামনে বসা তিনি ওই সব দালালদের বাঁধা প্রদান না করে বসেই রয়েছে।
কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, রাতের অন্ধকারে সব ধানই কেনা হয়ে গেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বাকি। খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে দালালদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করছে।
সোমবার দুপরে সরেজমিনে খাদ্যগুদামে গিয়ে দেখাযায় কয়েকজন দালালের আনাগোনা। এর মধ্যে চিহ্নিত দালাল ফারুক ও রফিক সাংবাদিকদের দেখে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এসব দালাল কেনো খাদ্যগুদামে আসলো এমন প্রশ্নের কোন সুদুত্তর দিতে পারেনি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তি তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, দিনের বেলায় খাদ্য গুদামে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে। ওই ধান গাড়ী থেকে নামাতে গিয়ে গভীর রাত হয়ে পড়ে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে জানাযায় এ বছর হাজীগঞ্জে ধান ক্রয়ের লক্ষমাত্র ২৭৮টন আর চাল ক্রয়ের লক্ষমাত্রা ৫৬৫ টন। প্রতি কেজি ধানের ক্রয় মূল্য ২৬ টাকা ও প্রতি কেজি চালের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৬ টাকা।
প্রতিমন ধান কৃষকদের কাছ থেকে ১০৪০ টাকা ধরে ক্রয়ে করছে সরকার। আর দালালরা প্রতিমন ধান কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করছে ৪০০ থেকে ৫’শ টাকায়।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি)অসিম চন্দ্র বর্ধন জানান, যে ধানগুলো দিনের বেলায় এসেছে ওই ধানগুলো গুদামজাত করতে করতে গভীর রাত হয়েগেছ। গোপনে কারো কাছ থেকে ধান ক্রয় করার বিষয়টি সত্য নয়।
এব্যাপারে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার সরকারী ফেসবুকে একটি অতিব জরুরী বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেছে। তাতে তিনি উল্লেখ করেন ‘উপজেলার সকল কৃষককে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সাক্ষাৎপূর্বক গুদামে ধান বিক্রি করার অনুরোধ করা হল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রদত্ত টোকেন প্রদর্শন না করা পর্যন্ত গুদামে ধান গৃহীত হবে না।
জনকল্যানকর এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য এবং কৃষকগণকে অবহিত করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

হাজীগঞ্জ খাদ্য গুদামে রাতের অন্ধকারে দালালদের কাছ থেকে শতাধীক টন ধান ক্রয়ের অভিযোগ

আপডেট: ১১:৩৫:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯

কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে
গাজী মহিনউদ্দিন॥
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে রাতের অন্ধকারে দাললদের কাছ থেকে শতাধীক ধান ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা অসিম চন্দ্র বর্ধনের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বৈশাখী বড়–য়া প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের নিমিত্তে তার লিখিত স্বাক্ষর ছাড়া ধান ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞারোপ করেছে। তার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে ভূক্তভোগী কৃষকরা।
হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কৃষক আলী মিয়া জানান, রবিবার রাতের অন্ধকারে কয়েক ট্রাক ধান খাদ্য গুদামে প্রবেশ করেছে। আমাদের সামনে এ ধানগুলো গুদামজাত করা হয়েছে। একই সাথে কয়েকজন কৃষকও এর সত্যতা বলেন।
এ সময় কয়েকজন কৃষক খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সম্মুখেই প্রতিবাদ করে জানান, গুদামের কর্মকর্তার সামনে দালাল বসে বসে আমাদের ধান ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে আমাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করছে অথচ অফিসার সামনে বসা তিনি ওই সব দালালদের বাঁধা প্রদান না করে বসেই রয়েছে।
কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, রাতের অন্ধকারে সব ধানই কেনা হয়ে গেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বাকি। খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে দালালদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করছে।
সোমবার দুপরে সরেজমিনে খাদ্যগুদামে গিয়ে দেখাযায় কয়েকজন দালালের আনাগোনা। এর মধ্যে চিহ্নিত দালাল ফারুক ও রফিক সাংবাদিকদের দেখে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এসব দালাল কেনো খাদ্যগুদামে আসলো এমন প্রশ্নের কোন সুদুত্তর দিতে পারেনি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তি তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, দিনের বেলায় খাদ্য গুদামে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে। ওই ধান গাড়ী থেকে নামাতে গিয়ে গভীর রাত হয়ে পড়ে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে জানাযায় এ বছর হাজীগঞ্জে ধান ক্রয়ের লক্ষমাত্র ২৭৮টন আর চাল ক্রয়ের লক্ষমাত্রা ৫৬৫ টন। প্রতি কেজি ধানের ক্রয় মূল্য ২৬ টাকা ও প্রতি কেজি চালের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৬ টাকা।
প্রতিমন ধান কৃষকদের কাছ থেকে ১০৪০ টাকা ধরে ক্রয়ে করছে সরকার। আর দালালরা প্রতিমন ধান কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করছে ৪০০ থেকে ৫’শ টাকায়।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি)অসিম চন্দ্র বর্ধন জানান, যে ধানগুলো দিনের বেলায় এসেছে ওই ধানগুলো গুদামজাত করতে করতে গভীর রাত হয়েগেছ। গোপনে কারো কাছ থেকে ধান ক্রয় করার বিষয়টি সত্য নয়।
এব্যাপারে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার সরকারী ফেসবুকে একটি অতিব জরুরী বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেছে। তাতে তিনি উল্লেখ করেন ‘উপজেলার সকল কৃষককে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সাক্ষাৎপূর্বক গুদামে ধান বিক্রি করার অনুরোধ করা হল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রদত্ত টোকেন প্রদর্শন না করা পর্যন্ত গুদামে ধান গৃহীত হবে না।
জনকল্যানকর এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য এবং কৃষকগণকে অবহিত করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি।